scorecardresearch
 

Aaya Ram Gaya Ram: ভোট এলেই সুপারহিট টপিক 'আয়া রাম-গয়া রাম', কোথা থেকে এল এই প্রবাদ?

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণার আগে থেকেই দেশে ও রাজ্যে দল বদল চলছে। কয়েক মাস আগেও যিনি কংগ্রেসে ছিলেন, তিনি আজ বিজেপিতে গিয়ে টিকিট পেয়েছেন। রাজ্যেও এরকম উদাহরণ রয়েছে অনেক। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল বা কংগ্রেস, বা উল্টোটা ঘটতে থাকে মাঝেমাঝেই। তাই অনেক রাজনীতিবিদকে আয়া রাম-গয়া রাম বলা যেতেই পারে।

Advertisement
ভোট এলেই সুপারহিট টপিক 'আয়া রাম-গয়া রাম', কোথা থেকে এল এই প্রবাদ? ভোট এলেই সুপারহিট টপিক 'আয়া রাম-গয়া রাম', কোথা থেকে এল এই প্রবাদ?
হাইলাইটস
  • অনেক রাজনীতিবিদকে আয়া রাম-গয়া রাম বলা যেতেই পারে
  • ২০১৪ সাল থেকে দেশে সংসদ এবং এমএলএ স্তরের প্রায় ১২০০ নেতা দল পরিবর্তন করেছেন

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণার আগে থেকেই দেশে ও রাজ্যে দল বদল চলছে। কয়েক মাস আগেও যিনি কংগ্রেসে ছিলেন, তিনি আজ বিজেপিতে গিয়ে টিকিট পেয়েছেন। রাজ্যেও এরকম উদাহরণ রয়েছে অনেক। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল বা কংগ্রেস, বা উল্টোটা ঘটতে থাকে মাঝেমাঝেই। তাই অনেক রাজনীতিবিদকে আয়া রাম-গয়া রাম বলা যেতেই পারে।

'আয়া রাম, গয়া রাম' (রাম এলো, রাম গেল) বাক্যাংশটি সাধারণত রাজনীতিবিদদের বোঝানোর জন্য বলা হয়, বিশেষ করে যখন তাদেরকে স্বল্প সময়ের মধ্যে দলীয় আনুগত্য পরিবর্তন করতে দেখা যায়। সাধারণ হিসেব দেখলে ২০১৪ সাল থেকে দেশে সংসদ এবং এমএলএ স্তরের প্রায় ১২০০ নেতা দল পরিবর্তন করেছেন। ১৯৬০ এর দশকে হরিয়ানায় পার্টি পরিবর্তনের একটি চরম উদাহরণ থেকে এর উৎপত্তি।

আয়া রাম-গয়া রামের উৎপত্তি

১৯৬৭ সালে হরিয়ানার একজন বিধায়ক একদিনে তিনবার দল পরিবর্তন করেছিলেন। তাঁর নাম গয়া লাল। এই বিধায়কের দল বদলের প্রতিধ্বনি শোনা গিয়েছিল লোকসভাতেও। গয়ালাল হরিয়ানায় দুবার বিধায়ক হয়েছিলেন। কংগ্রেস থেকে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু। গয়া লালের বাবাও হরিয়ানার কংগ্রেস নেতা ছিলেন। গয়া লাল ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত পালওয়াল পৌরসভার সদস্য এবং ভাইস-চেয়ারম্যান ছিলেন।

এবার হরিয়ানায় সেই দলত্যাগের গল্প

পাঞ্জাব থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ১৯৬৭ সালে হরিয়ানায় বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্দল হিসাবে হাসানপুর আসন থেকে বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন গয়া লাল। গয়ার সামনে কংগ্রেসের এম সিং মাঠে ছিলেন। একই সঙ্গে মান সিংকে প্রার্থী করেছিল জনসংঘ। গয়া লাল নির্বাচনে বিজয়ী হন। পরে তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন। এদিকে, ৮১টি আসনের জন্য অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে কংগ্রেস ৪৮টি আসন জেতে। ভগবত দয়াল শর্মাকে মুখ্যমন্ত্রী করে দল। ১২ কংগ্রেস বিধায়ক দয়ালের বিরোধিতা করেন এবং তার ফলে কংগ্রেস সরকার পড়ে যায়। স্বাধীন বিধায়করা রাও বীরেন্দরের নেতৃত্বে 'ইউনাইটেড ফ্রন্ট' বা যুক্ত বিধায়ক দল (এসভিডি) নামে একটি নতুন দল গঠন করেন। পক্ষ পরিবর্তনের প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে এবং নতুন যুক্তফ্রন্ট অবশেষে ৪৮ জন বিধায়ককে সুরক্ষিত করে। রাও বীরেন্দর নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন।

Advertisement

গয়া লাল ক্ষমতায় থাকা পক্ষের সঙ্গে ফিরে আসতে আগ্রহী ছিলেন। এবং তাই তিনি SVD-তে যোগদানের জন্য রাও বীরেন্দরের শপথ গ্রহণের ঠিক আগে কংগ্রেস ছাড়েন। কংগ্রেস হাইকমান্ড সরকার পতনের জন্য নির্দল বিধায়কদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় হাসানপুরের বিধায়ক গয়া লালের সঙ্গে যোগাযোগ করে দল। গয়া লাল কংগ্রেসে যোগ দিতে রাজি হন এবং দুপুর ২টোর দিকে তিনি চণ্ডীগড়ের কংগ্রেস অফিসে দলের সদস্যপদও নেন। গয়া লালের যাওয়ার পরে রাও বীরেন্দ্র সিংয়ের সরকার নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়। এখানে রাও গয়া লালকে বোঝানোর চেষ্টা শুরু করেন। গভীর রাতে তিনি এতে সফলতাও পান। একই দিনে আবার যুক্তফ্রন্টে যোগ দেন গয়া লাল। মুখ্যমন্ত্রীকে গয়া লাল সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন, 'গয়া রামজি এখন আয়া রাম হয়ে গিয়েছেন।' মাত্র ৯ ঘণ্টার মধ্যে গয়া লাল তিনবার পার্টি বদল করেন। প্রথমে কংগ্রেস ছেড়ে SVD-তে যান, পরে কংগ্রেসে ফিরে যান এবং তারপর আবার SVD-তে যোগ দেন।

পরে, সংসদে তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ওয়াই ভি চৌহানের সৌজন্যে একটি প্রবাদ চালু হয়। চৌহান বলেন, 'দেশে আয় রাম, গয়া রাম খেলা বন্ধ করা দরকার।'

১৯৭৭ সালে গয়া লাল জনতা পার্টির টিকিটে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং নির্দল ছোট লালকে ১৭ হাজার ভোটে পরাজিত করেন। গয়ালাল ১৯৮২ সালে শেষবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, কিন্তু তিনি জিততে পারেননি। এরপর তিনি তাঁর রাজনৈতিক উত্তরাধিকার পুত্র উদয়ভানের হাতে তুলে দেন।

Advertisement