নবীন পট্টনায়কের ২৪ বছরের দূর্গ ভেঙে ওড়িশায় ফুটেছে পদ্ম। লোকসভা নির্বাচনে সিট কমলেও, ওড়িশা বিধানসভা নির্বাচনে বিজু জনতা দলকে হারিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। বুধবার রাজ্যপাল রঘুবর দাসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন নবীন পট্টনায়েক। এরপরই রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তাই নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। নানা জল্পনা-কল্পনার মধ্যেই, রাজ্য বিজেপির সভাপতি মনমোহন সামল বুধবার এই নিয়ে মুখ খোলেন। তিনি বলেন, দলের সংসদীয় বোর্ড দুই-একদিনের মধ্যেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময়, রাজ্য বিজেপির প্রধান আরও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ব্রহ্মপুরে এক নির্বাচনী জনসভায় বলেছিলেন যে, ১০ জুন নতুন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী শপথ নেবেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারিত মানদণ্ডের ভিত্তিতে মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন করা হবে।' তিনি বলেন, 'একজন ওড়িয়া ব্যক্তিকেই বেছে নেওয়া হবে, এমন কেউ যিনি রাজ্যের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বজায় রাখবেন, তিনিই হবেন ওড়িশার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী।'
বিধানসভা নির্বাচনে ১৪৭টি আসনের মধ্যে ৭৪টি আসনে জিতেছে ভারতীয় জনতা। নবীন পট্টনায়কের নেতৃত্বাধীন বিজেডি সরকার হেরে গিয়েছে। বিজু জনতা দল (BJD) ৫১টি আসন পেয়েছে। এই প্রথমবার ওড়িশায় বিজেপি সরকার তৈরি হতে চলেছে।
নতুন মুখ্যমন্ত্রী: এই নামগুলি নিয়ে চর্চা তুঙ্গে
ওড়িশার ট্রেন-বাস, চায়ের দোকানে এখন একটাই আলোচনা, পরের মুখ্যমন্ত্রী কে? কেউ বলছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান হতে পারেন। আবার অনেকে বলছেন বিজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি বৈজয়ন্ত পান্ডাকে ওড়িশার নতুন মুখ্যমন্ত্রী করা হতে পারে। এর পাশাপাশি ভুবনেশ্বরের সাংসদ অপরাজিতা সারঙ্গি এবং বালাসোরের সাংসদ প্রতাপ সারাঙ্গির নামও উঠে আসছে।
ধর্মেন্দ্র প্রধান
কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী এবং সম্বলপুরের সাংসদ ধর্মেন্দ্র প্রধান। তিনিই বিজেপির ওড়িয়া আত্তীকরণ প্রচারে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। গত ১০ বছর ধরে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। ফলে তাঁর CV বেশ পোক্ত। অভিজ্ঞতার অভাব নেই। ফলে মুখ্যমন্ত্রী পদের দৌড়ে অন্যদের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন।
বৈজয়ন্ত পান্ডা
বিজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি বৈজয়ন্ত পান্ডাকে নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। বৈজয়ন্ত পান্ডা মিশিগান টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করা ইঞ্জিনিয়া। ম্যানেজমেন্টের ডিগ্রিও আছে। রাজনীতিতে আসার আগে কর্পোরেট সেক্টর উচ্চপদে চাকরি করতেন। এক সময়ের রাজ্যসভার সাংসদ এবং বিজেডি থেকে দুইবার লোকসভা সাংসদ হয়েছেন। ছয় বছর আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে, তিনি ৬৬,৫৩৬ ভোটে বিজেডি-র অংশুমান মোহান্তিকে পরাজিত করেছিলেন। তাঁর উপর শীর্ষ RSS নেতাদেরও সমর্থন রয়েছে।
অপরাজিতা সারঙ্গী
বিজেপি নেত্রী অপরাজিতা সারঙ্গী ৫,১২,৫১৯ ভোট পেয়ে জিতেছেন। রাজনীতিতে আসার আগে সরকারি চাকরি করতেন। সুখের চাকরির মোহ ছেড়ে রাজনীতিতে আসেন। তাঁর স্বামীও একজন সরকারি কর্মী।
প্রতাপ সারঙ্গী
বালাসোরের সাংসদ প্রতাপ সারঙ্গীকেও মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার মনে করা হচ্ছে। ২০২২ সালে জল সম্পদ সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত, তিনি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী, ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ এবং মৎস্য, পশুপালন ও দুগ্ধজাত মন্ত্রকের পদে ছিলেন।