Karnataka Election 2023 Congress Win Over BJP: কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের বড় জয়ের পর গোটা দেশজুড়ে কংগ্রেসের কর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে।সঙ্গে কংগ্রেস থেকে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে বাইরের রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছে। কংগ্রেসের রণনীতি অনুযায়ী এই নির্বাচনে জয় এসেছে কংগ্রেস শুধুমাত্র স্থানীয় ইস্যুতেই ফোকাস বরং ভ্রষ্টাচারকে নির্বাচনী ইস্যু করায়।
এখন আমরা জেনে নিই কর্ণাটকে কংগ্রেসের পুনরুত্থানের কারণ কী?
বোম্মাই সরকারের বিরুদ্ধে অ্যান্টি ইনকাম্বেন্সি
কর্নাটকে ২০১৯-এ কংগ্রেসের কিছু বিধায়ক বিদ্রোহের পরে কংগ্রেস-জেডিএস সরকার পড়ে যায়। এরপরে বিজেপির সরকার তৈরি হয় এবং বিজেপি ইয়েদুরিয়াপ্পাকে সরিয়ে বাসবরাজ বোম্মাইকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসায়। কিন্তু এই নির্বাচনের আগে বোম্মাই সরকারকে নিয়ে ভোট দাতাদের মধ্যে সত্ত্বা বিরোধী ক্ষোভ বাড়ছিল। জনতার মধ্যে নির্বাচনের সময় দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণের দাবিতে বিজেপির বিরুদ্ধে অসন্তোষ বাড়ছিল।
স্থানীয় নেতৃত্ব ইস্যু তৈরি করেছে
বিজেপি এই নির্বাচনে এনআরসি, সমান নাগরিকতা, ভক্তদের মন্দির প্রশাসনের পূর্ণ স্বায়ত্ত শাসন দেওয়ার মতো ইস্যু তৈরি করেছিল। মনে করা হচ্ছে যে বিজেপির এই হিন্দুত্ববাদী ইসু ভোটারদের নিজেদের পক্ষে করার জন্য করা হয়েছিল। কংগ্রেস স্থানীয় সমস্য়াকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিল। আসলে রাহুল গান্ধী ১৬ এপ্রিল কোলারে নিজেদের কর্ণাটক অভিযান শুরু করে এবং গৌতম আদানি ইসুতে, প্রধানমন্ত্রী মোদিকে আক্রমণ করে শুরু করেছিল। এরপর স্থানীয় নেতৃত্ব নির্বাচনী প্রচারে মোদীকে সরিয়ে স্থানীয় বিষয়কে সামনে নিয়ে এসে ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। এরপরে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বারবার বলেছেন যে, নির্বাচন কর্নাটকের বিষয়ে, নাকি মোদির বিষয়ে? তিনি নির্বাচনে স্থানীয় ইস্যুতে মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হন।
পার্টি অধ্যক্ষ খাড়্গে প্রদেশে ঘাঁটি গাড়েন
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে কর্নাটকের বাসিন্দা। তিনি রাজ্যের প্রচারের দায়িত্ব সামলান এবং ৮০ বছর বয়সি অধ্যক্ষ খাড়্গের উপস্থিতিতে পাটি কার্যকর্তাদের উৎসাহিত করেছে। তিনি রাজ্যে জমিয়ে প্রচার করেন। নির্বাচনের জন্য কংগ্রেসকে ঘোষণাপত্র তৈরি করে দেন।
গোটা গান্ধী পরিবার প্রচার করেছে
নির্বাচনে গোটা গান্ধী পরিবার সোনিয়া, রাহুল এবং প্রিয়াঙ্কা প্রচারে নামেন। লম্বা সময়ের পরে এমন দেখা গিয়েছে যে তিনজন সর্বাত্মক প্রচার করেছেন সোনিয়া গান্ধী ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ এর পরে প্রথমবার কোন সার্বজনিন র্যালিতে হাজির ছিলেন. তিনি গত ৬ বছরে কোনও নির্বাচনে ভোটারদের কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন।
স্থানীয় ইস্যু কাজ করে গেছে
কংগ্রেস নির্বাচনের এক বছর আগে থেকেই স্থানীয় ইস্যুতে কাজ করা শুরু করে এবং গুরুত্ব দেয়। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে খাড়্গের বিষাক্ত সাপের টিপ্পনির বিরুদ্ধে, সোনিয়া গান্ধীর আক্রমণাত্মক বয়ানকে বিজেপি ভারতের উপর হামলা বলে দেখান। কিন্তু কংগ্রেস বিজেপির নেতাদের বিরুদ্ধে কোনও কথা না বলে স্থানীয় ইস্যুতে ফোকাস করেন এবং লাগাতার ভ্রষ্টাচারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিজেপির বিরুদ্ধে বক্তব্য পেশ করতে থাকে।
কংগ্রেস অভ্যন্তরীণ কলহকে সামনে আসতে দেয়নি,
কংগ্রেস সিদ্দারামাইয়া এবং ডিকে শিবকুমারের মধ্যে মতপার্থক্য মানুষের সামনে আনতে দেয়নি। রাহুলের ভারত জোড়ো যাত্রার সময় দুজন নেতা একসঙ্গে দেখা যায়। কংগ্রেসের অভিযানের মধ্যে সিদ্দারাময় এবং শিবকুমারের মধ্যে কথাবার্তার ভিডিও বাজারে ছাড়া হয়। যাতে কার্যকর্তা এবং জনতা পার্টির মধ্যে কোনও রকম বিবাদের খবর মনোবল ভেঙে দিতে না পারে।
বোম্মাই সরকারকে আক্রমণ করেন কংগ্রেস
বাসবরাজ বোম্মাই সরকারের বিরুদ্ধে PAYCM বলে দাবি করে প্রচার, পোস্টার জারি করা হয়। যাতে জনতার মধ্যে এই তথ্য দেওয়া যায়, যা বোম্মাই সরকারে দুর্নীতি হচ্ছে।
বজরঙ্গলের উপর ব্যান এর ঘোষণা
বজরঙ্গলের উপর ব্যান এর ঘোষণা করে মুসলিম ভোটকে একত্রিত করে কংগ্রেস নিজেদের ঘোষণাপত্রে বজরং দলের উপর ব্যান করার দাবি জানায়। এর ফলে মুসলিম ভোটের একটা বড় অংশ তাদের দিকে চলে আসে বলে মনে করা হচ্ছে। কংগ্রেস, জেডিএসের ক্ষমতা থাকায় সেগুলি এগিয়ে যায়। মহিলা এবং যুবকদের মধ্যে বিজেপির ভোট ব্যাংক কেড়ে নিতে সক্ষম হয় কংগ্রেস।