scorecardresearch
 

মমতার টার্গেটে নন্দীগ্রামের ভূমিপুত্র! একুশের ভোটে বাংলায় গেরুয়া-তারকা কি শুধুই শুভেন্দু?

বিধানসভা ভোটের এখনও দিনক্ষণ ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন। কিন্তু শীতের মরশুমেও বঙ্গে ভোটের হাওয়া উত্তপ্ত। ক্রমেই সেই উত্তেজনা বেড়ে চলেছে। বিহার নির্বাচন মিটতেই গেরুয়া শিবিরের পাখির চোখ এখন বঙ্গ বিজয়। আর তাই প্রতিদিনই তৃণমূলনেত্রীকে নিশানা করে চলেছে বিজেপি নেতৃত্ব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকেই আক্রমণের সুর আরও চড়েছে 'ভাইপো' কে নিয়ে। পাল্টা ময়দানে তৃণমূল শিবিরও। এরাজ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের আগমন নিয়ে বহিরাগত তত্ত্ব আনছে তৃণমূল। কিন্তু গত ১৯ ডিসেম্বরের পর যেন পুরো চিত্রটাই বদলে গিয়েছে। শুভেন্দুর বিজেপিতে যোগ ়দানের পরেই তিনি যে দলে কোনও ফ্যাক্টর ছিলেন না তা যেন উঠে পড়ে প্রমাণ করতে নেমেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু কিছুতেই শুভেন্দুর ভূত নামাতে পাড়ছে কই তৃণমূল শিবির।

Advertisement
একুশের ভোটটা কী মমতা বনাম শুভেন্দুতে পরিণত হতে চলেছে? একুশের ভোটটা কী মমতা বনাম শুভেন্দুতে পরিণত হতে চলেছে?
হাইলাইটস
  • নন্দীগ্রামে প্রার্থী হবেন ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
  • অনেকেই এটাকে তৃণমূলনেত্রীর মাস্টার স্ট্রোক বলছেন
  • একুশের ভোটটা কী মমতা বনাম শুভেন্দুতে পরিণত হতে চলেছে?

বিধানসভা ভোটের এখনও দিনক্ষণ ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন। কিন্তু শীতের মরশুমেও বঙ্গে ভোটের হাওয়া উত্তপ্ত। ক্রমেই সেই উত্তেজনা বেড়ে চলেছে। বিহার নির্বাচন মিটতেই গেরুয়া শিবিরের পাখির চোখ এখন বঙ্গ বিজয়। আর তাই প্রতিদিনই তৃণমূলনেত্রীকে নিশানা করে চলেছে বিজেপি নেতৃত্ব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকেই আক্রমণের সুর আরও চড়েছে 'ভাইপো' কে নিয়ে। পাল্টা ময়দানে তৃণমূল শিবিরও। এরাজ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের আগমন নিয়ে বহিরাগত তত্ত্ব আনছে  তৃণমূল। কিন্তু গত ১৯ ডিসেম্বরের পর যেন পুরো চিত্রটাই বদলে গিয়েছে। শুভেন্দুর বিজেপিতে যোগদানের পরেই তিনি যে দলে কোনও ফ্যাক্টর ছিলেন না তা যেন উঠে পড়ে প্রমাণ করতে নেমেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু কিছুতেই শুভেন্দুর ভূত নামাতে পাড়ছে কই তৃণমূল শিবির। স্বয়ং তৃণমূলনেত্রীও কি শুভেন্দু ভয়ে ভীত? নন্দীগ্রাম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে প্রার্থী ঘোষণা করার পর থেকে এই প্রশ্নই এখন উকি ঝুঁকি দিচ্ছে রাজ্য রাজনীতির অলিন্দে।

তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে একাধিক হেভিওয়েট
এক সময় তৃণমূলের নাম্বার টু ছিলেন মুকুল রায়। ২০১৭ সালের সেই মুকুলই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির সাফল্যের পেছনে যে মুকুলের অবদান রয়েছে তা ভালই জানে গেরুয়া শিবির। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলে ভাঙন ধরিয়ে সব্যসাচী দত্ত, সৌমিত্র খাঁ, ভারতী ঘোষ, অর্জুন সিং, দুলাল বর, খগেন মুর্মু, মাফউজা খাতুনদের বিজেপিতে এনেছিলেন মুকুল। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পর দিল্লি গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলের আরেক হেভিওয়েট ও মমতার আস্থা ভাজন নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। দল ছেড়েছেন মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু রায় ও শীলভদ্র দত্তও। ২০২০ সালে তৃণমূলের শহিদ দিবসে দলছাড়াদের ফিরে আসার বার্তা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি দলের বেসুরো নেতাদের সঙ্গে তিনি কথা বলতে চান এমনও বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী দল ছাড়ার পরেই একেবারে আক্রমণাত্মক মেজাজে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি শুভেন্দুর গড় নন্দীগ্রাম থেকে এবার বিধানসভা নির্বাচনে লড়তে চান এমন ইচ্ছাও প্রকাশ্য জনসভায় প্রকাশ করেছেন তৃণমূলনেত্রী।

Advertisement

শুভেন্দু সত্যিই ফ্যাক্টর?
১৯৯৮ সালে কংগ্রেস ছেড়ে বাবা শিশির অধিকারীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সদ্য গঠন করা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। গত ১৭ ডিসেম্বর দীর্ঘ সেই  ২২ বছরের সম্পর্ক শেষ করেন শুভেন্দু। তবে দল ছাড়ার কয়েক মাস আগে থেকেই দু'তরফের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছিল। শেষের দিকে দলীয় কোনও অনুষ্ঠানেই দেখা যায়নি শুভেন্দুকে। এমনকি প্রকাশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নিতেও দেখা যেত না শুভেন্দুকে।   দল বদল করেই অবশ্য পুরনো দলের বিরুদ্ধে একের পর এক নিশানা শানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। গেরুয়া শিবিরের অন্যান্যদের মত নিশানা করেছেন ভাইপোকে। শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর রাজ্য রাজনীতিতে বেশ হই হই পড়ে গিয়েছে। শুভেন্দুর দলবদলে তৃণমূলে কী প্রভাব পড়বে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। নিজের ক্যারিশমাতেই তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টক্কর দিতে পারেন এমন গুঞ্জনও শোনা যেতে থাকে। এটা ঠিক বিজেপিতে এর আগে যাঁরা যোগ দিয়েছেন, শুভেন্দুর যোগাদানের মতো কাউকে নিয়ে এতো আড়ম্বর দেখা যায়নি। শুভেন্দু কিছু বললেই সৌগত রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়রা ঝাঁপিয়ে পড়ছেন পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিতে। এই অবস্থায় নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নিজেকে প্রার্থী ঘোষণা সকলকেই চমকে দিয়েছে। 

একুশের ভোটটা কি মমতা বনাম শুভেন্দুতে পরিণত হতে চলেছে, এই প্রশ্ন এখন ঘোরাফেরা করছে রাজ্য রাজনীতিতে। নন্দীগ্রামে  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে প্রার্থী ঘোষণার  সিদ্ধান্তের মধ্যে সেই সম্ভাবনাই দেখতে পাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা৷ মমতার সিদ্ধান্ত ঠিক না ভুল, তা হয়তো বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল বলবে৷ কিন্তু একটি বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা একমত, চ্যালেঞ্জ ছোড়ার সাহস দেখালেও আসলে শুভেন্দুকে অনেকটাই গুরুত্ব দিয়ে ফেলছেন তৃণমূলনেত্রী৷

 

Advertisement