scorecardresearch
 

কলকাতার ইশারায় আসানসোলে ভাঙচুর, কাকে ইঙ্গিত দলত্যাগী জিতেন্দ্রর ?

একেবারে শুভেন্দু অধিকারীর দেখানো পথেই হাঁটলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। শুভেন্দুর দল ছাড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এবার তৃণমূলের সমস্ত পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি।

Advertisement
হাইলাইটস
  • 'ওঁদের' দিকে আঙ্গুল তুলে শুভেন্দুর পথেই হাঁটলেন জিতেন্দ্র
  • দল ছেড়ে কাকে নিশানা করলেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক?
  • মমতার ফোনেও আটকানো গেল না 'দলত্যাগ'

একেবারে শুভেন্দু অধিকারীর দেখানো পথেই হাঁটলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। শুভেন্দুর দল ছাড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এবার তৃণমূলের সমস্ত পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। বৃহস্পতিবার দল ছাড়ার আগেই অবশ্য আসানসোলের পুর প্রশাসকের পদ থেকেও ইস্তফা দেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক। বুধবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিতেন্দ্রর মান ভাঙাতে উত্তরবঙ্গ থেকে ফোন করেছিলেন। তবে তৃণমূলনেত্রীর মুখোমুখি হওয়ার আগেই এবার দল ছেড়ে দিলেন আসানসোলের ঘাসফুল শিবিরের ডাকাবুকো এই নেতা।

ইস্তফা দিয়েই জিতেন্দ্রর সঙ্গে বৈঠক, বিক্ষুব্ধদের নিয়ে বসলেন শুভেন্দু

গত সোমবারই রাজ্য সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে আসানসোল পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের প্রধান এবং পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে চিঠি লেখেন। অভিযোগ ছিল,  রাজনৈতিক কারণে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অর্থ থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে আসানলোল পুরসভাকে৷ রাজ্যের জন্যই আসানসোল স্মার্ট সিটি হওয়ার সুযোগ হারিয়েছে ৷ শুভেন্দু অধ্যায় দেখে শিক্ষা নেওয়া তৃণমূল এরপর শুভেন্দুর মান ভাঙাতে ময়দানে নামে। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে  জিতেন্দ্র তিওয়ারির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। ঠিক হয় শুক্রবার জিতন্দ্রকে নিয়ে বৈঠক করবেন তৃণমূলনেত্রী। কিন্তু তার আগেই বৃহস্পতিবার পুরনো দের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে দিলেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক। 

নতুন সমীকরণ! শুভেন্দুর ইস্তফার দিনেই বিজেপিতে রাজীবের আত্মীয়া

জিতেন্দ্র যে বিক্ষুব্ধ পথেই হাঁটছে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল বুধবার রাতেই। মমতার সঙ্গে ফোনে কথা বলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পানাগড়ে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দেখা করতে হাজির হয়েছিলেন জিতেন্দ্র। তার আগে দলের জেলা সভাপতি হিসেবে তাঁর শেষ সভা এমনটাও ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। তবে গতকালের বৈঠক শেষে জিতেন্দ্র বলেছিলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই আছি ৷তবে তৃণমূলে দিদি ছাড়া অন্য কাউকে মানব না ৷’ তবে সেই ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে সেই দিদির হাতও ছেড়ে দিলেন জিতেন্দ্র। শুক্রবারের বৈঠকের আর প্রয়োজন নেই বলেও জানিয়ে দিলেন। 

Advertisement

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে শুভেন্দু যেদিন তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন সেদিনই পদত্যাগ করলেন জিতেন্দ্রও। তবে পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক এদিন প্রথম আসানসোলের পুরপ্রশাসকের পদ থেকে ইস্তফা দেন। তার আগে পুরমন্ত্রীকে আক্রমণ শানান জিতেন্দ্র। বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীকে সম্মান করি, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে  বিড়ম্বনায় ফেলছেন ফিরহাদ হাকিম।" জিতেন্দ্রর মূল উষ্মার কারণ যে পুরমন্ত্রী তা তাঁর গত কয়েকদিনের বক্তব্যেই স্পষ্ট। এদিকে পুরনিগমে প্রশাসকের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরেই পাণ্ডবেশ্বরে তাঁর  বিধায়ক কার্যালয়ে হামলার অভিযোগ করেন জিতেন্দ্র। কলকাতার কিছু নেতার নির্দেশই তাঁর বিধায়ক অফিসে এই হামলা চালান হয়েছে বলেও স্পষ্ট দাবি করে জিতেন্দ্র। এক্ষেত্রে অভিযোগের তির যে কোন দিকে তা সকলেরই বোধগম্য। এরপরেই  তৃণমূলের সব পদ থেকে ইস্তফা দেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক। ‘‌ওরা চাইছে না আমি দলে থাকি।’‌সেই কারণেই পদত্যাগ বলে জানিয়ে দেন জিতেন্দ্র। 

এক দিনে ঘসাফুল শিবিরে দুই হেভিওয়েট নেতার উইকেট ডাউন নিঃসন্দেহে বড় ক্ষতি। মুখে স্বীকার না করলেও ২০২১ বিধানসভা ভোটের আগে তা ভালই জানে ঘাসফুল শিবির। এদিন বর্ষীয়াণ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, দলের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করলেন শুভেন্দু ও জিতেন্দ্র দু'জনেই। এদিকে এদিনও শুভেন্দুর হয়েই কথা বলতে দেখা যায় জিতেন্দ্রকে। দলত্যাগের পর আগামী দিনে শুভেন্দুর দেখানো পথেই জিতেন্দ্র হাঁটবেন কিনা তার দিকেই এখন নজর রাজনৈতিক মহলের। 

 

Advertisement