শীতলকুচি নিয়ে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। গোটা ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে সুর চড়াচ্ছেন তৃণমূলনেত্রী। রাজনৈতিক নির্দেশেই এমন ঘটনা ঘটছে বলে দাবি করছেন মমতা। এর প্রতিবাদে রবিবার রাজ্য জুড়ে কালাদিবস পালনের ডাক দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আগামিকাল শীতলকুচি যাচ্ছেন মমতাও। এদিকে বসে নেই গেরুয়া শিবিরও। এদিন শিলিগুড়ির জনসভা থেকেই শীতলকুচির ঘটনার জন্য মমতাকে নিশানা করেছিলেন মোদী। বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলনে পুরো বিষটি পূর্ব পরিকল্পিত বলেই দাবি করে বিজেপি নেতৃত্ব। আর এই প্রসঙ্গেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিআরপিএফ-কে ঘেরাওয়ের বিষয়টিও টেনে এনেছে গেরুয়া শিবির।
তৃণমূলনেত্রী হারছেন জেনেই পূর্ব পরিকল্পনা সাজানো হয়
এবারের নির্বাচনে তৃণমূল হারছে। তৃণমূলের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের এই বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন। এই অবস্থায় বাংলায় হিংসার পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। কোচবিহারের পুলিশ সুপারের রিপোর্টও সেই দিকে ইঙ্গিত করছে। সেই কারণে সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের জনসভায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ‘ঘেরাও’-এর নিদান দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। সাংবাদিক সম্মলেন এমনটাই অভিযোগ করলেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালভ্য।
পিকে-র অডিও টেপ ফাঁস
চতুর্থ দফার ভোটপর্ব শুরুর আগেই প্রশান্ত কিশোরের (পিকে) একটি অডিয়ো টেপ সামনে আনেন বিজেপি নেতা অমিত মালভ্য। সেখানে তৃণমূলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ভোট কুশলীকে বলতে শোনা গিয়েছে, রাজ্যের ভোটে নরেন্দ্র মোদী, হিন্দুত্ব, মেরুকরণ, অবাঙালি ভোট বড় ফ্যাক্টর। বলতে শোনা গিয়েছে, মতুয়া ভোটের দুই তৃতীয়াংশ এবং সামগ্রিক হিন্দু ভোটের অর্ধেক বা তার বেশি বিজেপি-র পক্ষে পড়বে। তৃণমূলের ভোটকুশলী আসল সত্যিটা বলে দেওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন তৃণমূলনেত্রী। এই অডিও ক্লিপ ভাইরাল হতেই আসল সত্যিটা সামনে চলে এসেছে। তাই নজর ঘোরাতেই শীতলকুচির মত ঘটনার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে দাবে করছে গেরুয়া শিবির।
মৃত্যুর জন্য দায়ি মমতা
শীতলকুচিতে ৪ জনের মৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক বলে দাবি করছে বিজেপি। মৃতদের নামও এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে প্রকাশ করেন বিজেপি নেতা তথা তারকেশ্বরের জলীয় প্রার্থী স্বপন দাশগুপ্ত। চারটি নামই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রতী নষ্ট করতেই মমতা এই ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করছে বিজেপি নেতৃত্ব। এদিন রাজ্যে ভোটের বলি হন মোট ৫ জন। প্রথমবার ভোট দিতে গিয়ে মায়ের চোখের সামনে মৃত্যু হয় ১৮ বছরের তরুণ আনন্দ বর্মনের। ভোটের লাইনে দাঁড়ানো ওই তরুণের পিঠে গুলি লাগে। মৃতের বাবার দাবি, তাঁর ছেলে বিজেপি সমর্থক। গুলি চালানোর অভিযোগ তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এদিন রাজ্যে মোট ৫ টি মৃত্যুর পেছনে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উস্কানিকেই দায়ি করে বিজেপি।