প্রতীকী ছবিরাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়া জেলায় একটা বড় অংশ মতুয়া (Matua) ভোটার। গত লোকসভা নির্বাচনে সেই মতুয়া সম্প্রদায়ের বিপুল সমর্থন পেয়েছিল বিজেপি(BJP)। আর সেই সমর্থনের নেপথ্যে প্রধান কারণ ছিল নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ লাগুর প্রতিশ্রুতি। লোকসভা ভোটের ফলাফলে উৎসাহিত হয়ে মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখতে চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি বিজেপি। তবে কিন্তু তারপর অনেক দিন কেটে গেলেও সিএএ লাগু না হওয়ায়, মাঝে মতুয়াদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল। সেইসময় স্বয়ং অমিত শাহ আসরে নেমে পরিস্থিতি সামাল দেন। আর বিধানসভা ভোটে তার সুফলও পেতে দেখা গেল বিজেপিকে।
বিধানসভা ভোটে পরাজিত হয়েছে বিজেপি। এমনকি লোকসভায় এগিয়ে থেকেও অনেক জায়গায় জয় পায়নি গেরুয়া শিবির। কিন্তু গেরুয়া ব্রিগেডকে নিরাশ করেননি মতুয়ারা। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৭টি বিধানসভার মধ্যে ৬টিতেই জয় পেয়েছে বিজেপি। বাগদা, বনগাঁ উত্তর, বনগাঁ দক্ষিণ, গাইঘাটা, কল্যাণী এবং হরিণঘাটা আসনে জয় পেয়েছেন পদ্ম শিবিরের প্রার্থীরা। এরমধ্যে কল্যাণী ও হরিণঘাটা বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত হলেও জেলাগত ভাবে এই দুটি আসন নদিয়ার মধ্যে পড়ে। পাশাপাশি নদিয়া জেলার মতুয়া অধ্যুষিত রানাঘাট দক্ষিণ, রানাঘাট উত্তরপূর্ব এবং কৃষ্ণগঞ্জ আসনও দখল করে নিয়েছে গেরুয়া ব্রিগেড।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যেখানে জঙ্গলমহলের মত জায়গার ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখতে পারলো না বিজেপি, সেখানে কীভাবে এবারেও মতুয়াদের বড় অংশের সমর্থন পেল তারা? তাহলে কি মতুয়ারা মনে থেকে সরিয়ে দিয়েছে তৃণমূলকে? এই প্রসঙ্গে তৃণমূল (TMC) নেতা কুণাল ঘোষ জানাচ্ছেন, "এটা কোনও বিষয় নয়। কিছু মানুষ বিভ্রান্ত ছিলেন। বিভ্রান্তি আস্তে আস্তে কাটছে। মতুয়াদের কিছুটা ভোট আমরা পেয়েছি। পরের ভোটে দেখবেন বাকি বিভ্রান্তিও কেটে গিয়ে তাঁরা তৃণমূলকে সমর্থন দিয়েছেন।"
তবে তৃণমূল যাই বলুক, মতুয়াদের সমর্থন কিন্তু পরাজয়ের মধ্যেও বিজেপি শিবিরে খুশির খবর। এখন দেখার এই রাজ্যের পরবর্তী নির্বাচনগুলিতেও এভাবেই মতুয়া সম্প্রদায়ের আস্থা জিততে পারেন কি না নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, দিলীপ ঘোষেরা।