বিজেপি সাংসদের স্ত্রী হাতে তুলে নিয়েছেন তৃণমূলের পাতাকা। যা নিয়ে এখন জোর শোরগোল বাংলার রাজনীতির অলিন্দে। বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ স্ত্রীর দলবদলের খবর পেয়েই পাঠিয়েছেন ডিভোর্সের নোটিস। সৌমিত্র খাঁ ও তাঁর স্ত্রী সুজাতা মণ্ডলের দশ বছরের সম্পর্কে নাটকীয় ছেদ পড়তে চলেছে রাজনীতির রং লেগে। বঙ্গ রাজনীতিতে তৃণমূল-বিজেপির অভূতপূর্ব এই যুদ্ধে অবশ্য আগেও ঘটেছে বিবাহ বিচ্ছেদ। সৌমিত্র-সুজাতা উস্কে দিলেন সেই স্মৃতি।
বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ অভিযোগ করেছেন, তৃণমূল তাঁর ঘর ভেঙেছে। বলেছেন মানুষের কথা ভাবতে গিয়ে, মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে তিনি বুঝতে পারেননি, কখন ঘরের লক্ষ্মীকেই তৃণমূল চুরি করে নিয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে বিজেপির জয় ব্যানার্জির প্রাক্তন স্ত্রী, কলকাতা পুরসভার প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য অনন্যা ব্যানার্জির পাল্টা অভিযোগ, একসময় বিজেপিই তাঁর ঘর ভেঙেছিল। অনন্যা বলেন, ২০০৯ সালে তাঁদের স্বামী–স্ত্রীর রাজনীতিতে আসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেই। কিন্তু ২০১৪ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন জয়। বিজেপির প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে অনন্যা বলেন, ‘ঘর ভাঙার খেলা যদি বলতে হয় তাহলে তার ক্ষেত্রে ঘটেছিল উল্টোটাই।’ ২০০৯ তৃণমূলের হাত ধরে রাজনীতিতে আসা তাঁদের, এরপর ২০১৪–য় জয় বিজেপিতে যোগ দেয়। অনন্যার কথায়, ‘যদি ঘর ভাঙতে কোনও রাজনৈতিক দল প্রভাব বিস্তার করে তাহলেতো বিজেপিই প্রথম পথ দেখাল। অর্থাৎ তৃণমূলে জয় ছিল, তাকে সুন্দর করে বিজেপিতে নিয়ে গেল।’
এদিকে সৌমিত্র ও সুজাতার আসন্ন বিচ্ছেদের কথআ শোনার পর চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ‘নেতা বদল হোক, দল বদল হোক, কিন্তু ঘর ভেঙে দেবেন না’, রাজনৈতিক দলগুলির কাছে অনুরোধ করলেন অভিনেতা। বিজেপি নেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায় কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘সৌমিত্র–সুজাতাকে টিভিতে কাঁদতে দেখে আমি খুবই মর্মাহত। আমি একজন অভিনেতা, তাই আমি খুবই ব্যথিত। আমার জীবনেও ঠিক একই ঘটনা ঘটেছিল একদিন। আমি চাই রাজনীতির পালাবদল হোক। নেতারা এক দল থেকে অন্য দলে যান, তাতে অসুবিধে নেই। কিন্তু রাজনীতি করতে গিয়ে কারওর সংসার যেন ভেঙে না যায়! সংগঠন বাড়াতে অন্য দল থেকে তো লোক নেওয়াই হয়, কিন্তু ঘর ভেঙে দেওয়া উচিত না।’