প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি উত্তরবঙ্গের রাজনীতিতে, বৃহত্তর অর্থে বলতে হলে দেশীয় রাজনীতিতে একটা মিথ বা কিংবদন্তী। কিন্তু তার নিজের গড়েই রক্ষা পেল না ভিটে।
গণনার সময় কংগ্রেস দলীয় কার্যালয়ের চিত্র
ভোটের ফল গণনা যত এগিয়েছে কালিয়াগঞ্জ কংগ্রেস পার্টি অফিসে লোক সংখ্যা কমেছে। ভোট গণনা শেষ হবার অনেক আগেই তালা ঝুলতে দেখা গিয়েছে কার্যালয়ে।
প্রিয়দার প্রিয় দলকে খালি হাতে ফেরাল নিজের পাড়া
যে প্রিয়দাকে সেই সাতের দশক থেকে ফেরায়নি কালিয়াগঞ্জ, সেই প্রিয়দার কেল্লায় পতাকা ওড়াবে বিজেপি! দ্বিতীয় হওয়ার লড়াইয়ে এগিয়ে থাকবে তৃণমূল! ১০ বছর আগেও ভাবা যায়নি এমন চিত্র। ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে, মালদা-মুর্শিদাবাদের মতো উত্তর দিনাজপুরেও ধীরে ধীরে মুছে যেতে চলেছে কংগ্রেস।
খাতায় কলমে থাকলেও ফেরার আশা কম
দলীয় কার্যালয় হাতে থাকলেও কিছু কর্মী সমর্থক এখনও খাতায় কলমে টিঁকে থাকলেন। কিন্তু একদা দোর্দণ্ডপ্রতাপ প্রিয়রঞ্জন এর স্মৃতি ধীরে ধীরে মুছে ফেলল কালিয়াগঞ্জ, উত্তরদিনাজপুর।
হারের ময়নাতদন্ত
অনেকেই দোষারোপ করছেন প্রিয় জায়া দীপা দাশমুন্সির নিষ্ক্রিয়তাকে। এই বিধানসভা নির্বাচনে তাকেঁ তেমন ভাবে সক্রিয় হতে দেখা যায়নি। আবার অন্য একটা দল মনে করছে দীপা দাশমুন্সির আদতে করার কিছু ছিল না। কারণ প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির প্রভাব-প্রতিপত্তির দশ শতাংশও দীপা দাশমুন্সি অর্জন করতে পারেননি। প্রিয় বাবু মারা যাওয়ার পরপরই প্রিয় আবেগেই একবার সাংসদ হয়েছিলেন। এরপর দীপাকে হারিয়ে যেবার সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম সাংসদ হলেন, তখন থেকেই কংগ্রেস গড়ে ফাটল ধরতে শুরু করেছিল। পরে কংগ্রেসের বেশিরভাগ তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় মূল কংগ্রেসে কঙ্কাল ছাড়া অবশিষ্ট কিছু থাকেনি।
সাংগঠনিক ধাক্কা
প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির মৃত্যুর পরও অরুণ ও প্রমথ জুটি কালিয়াগঞ্জে দুর্গ রক্ষা করে চলেছিলেন। এই দুজনের মৃত্যু কালিয়াগঞ্জ এর কংগ্রেসে বড় ধাক্কা দিয়েছে। যারা ভালবাসা এবং আনুগত্যের বন্ধনে বাঁধা ছিলেন, তাঁরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিয়েছেন। বেশিরভাগ তৃণমূলে, অল্পকিছু বিজেপিতে।
বামেদের সঙ্গে জোট কালিয়াগঞ্জের মানুষে মেনে নিতে পারেননি
পাশাপাশি বামেদের সঙ্গে দীর্ঘ বছর লড়াইয়ের পর ফের বামেদের হাত ধরাই আবেগপ্রবণ কালিয়াগঞ্জবাসীর মধ্যে কংগ্রেসের প্রতি বিতৃষ্ণা তৈরি করেছে। না বাম, না কংগ্রেস কেউই তাদের নিজস্ব নীতি নিজেরাই মেনে চলতে পারেনি।
কালিয়াগঞ্জে কংগ্রেসের সান্ত্বনা
তাই কালিয়াগঞ্জে বিজেপি তৃণমূল যত এগিয়েছে কংগ্রেস কত পিছিয়েছে। তবে এখনো যারা কংগ্রেসে রয়েছেন তাদের এটাই সান্তনা যে শুধু প্রিয়র কেল্লাই নয় গোটা রাজ্যে খাতা খুলতে পারেনি কংগ্রেস।