scorecardresearch
 

হুইলচেয়ারে বসেই প্রচার মমতার, ভোটারদের সহানুভূতি জিততে কি পারবেন?

তৃণমূল নেত্রীর পায়ে হেঁটে প্রচার বঙ্গ রাজনীতিতে সবসময়ই নজরকাড়া। সেই মমতাকে হুইলচেয়ারে প্রচার সারতে দেখে 'মর্মাহত' হয়েছে অনেকেই। এদিকে, মমতার সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কমিশনের দ্বারস্ত হয়েছে বিজেপি। একুশের নির্বাচনে এমন টালমাটাল পরিস্থিতিতে মমতার 'হুইলচেয়ার প্রচার' কি ভোটারদের সহমর্মিতা জয় করবে?

Advertisement
 'হুইলচেয়ার প্রচার' কি ভোটারদের সহমর্মিতা জয় করবে? 'হুইলচেয়ার প্রচার' কি ভোটারদের সহমর্মিতা জয় করবে?
হাইলাইটস
  • রবিবার প্রথম প্রচারে নামলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
  • মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশ থেকে হাজরা পর্যন্ত মিছিলে হুই চেয়ারে বসেই নেতৃত্ব দেন তিনি
  • সেই মমতাকে হুইলচেয়ারে প্রচার সারতে দেখে 'মর্মাহত' হয়েছে অনেকেই

নন্দীগ্রামে আহত হওয়ার পর রবিবার প্রথম প্রচারে নামলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশ থেকে হাজরা পর্যন্ত মিছিলে হুই চেয়ারে বসেই নেতৃত্ব দেন তিনি। রাজ্যে ভোটগ্রহণ শুরুর আগে এমন ঘটনা নিয়ে বেশ কিছুটা তর্ক বিতর্ক শুরু হয়েছে। তৃণমূল নেত্রীর পায়ে হেঁটে প্রচার বঙ্গ রাজনীতিতে সবসময়ই নজরকাড়া। সেই মমতাকে হুইলচেয়ারে প্রচার সারতে দেখে 'মর্মাহত' হয়েছে অনেকেই। এদিকে, মমতার সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কমিশনের দ্বারস্ত হয়েছে বিজেপি। একুশের নির্বাচনে এমন টালমাটাল পরিস্থিতিতে মমতার 'হুইলচেয়ার প্রচার' কি ভোটারদের সহমর্মিতা জয় করবে?

রবিবার দুপুরে কালীঘাটের বাড়ি থেকে মেয়ো রোডে পৌঁছে পায়ে বিশেষ জুতো পরে নীল-সাদা হুইল চেয়ারে বসেই মিছিলের নেতৃত্ব সূচনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় ৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম এভাবেই নেতৃত্ব দেন। উপস্থিত ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। হাজরায় শেষ হওয়া মিছিলে তিনি বলেন, "আমি হামলা ও পাল্টার রাজনীতির মধ্যে আছি। ডাক্তার বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছিলেন।কিন্তু বিশ্রাম নিলে তা ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া হবে। আমি ভাল নেই। আমি ভাঙা পা দিয়ে হুইলচেয়ারে রাজ্য জুড়ে ঘুরব। জানবেন আহত বাঘ কিন্তু সবচেয়ে বিপজ্জনক প্রাণী।"

রবিবার নন্দীগ্রামের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, তাই মিছিল ঘিরে কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়। মিছিল ঘিরে থাকেন পুলিশ কর্মীরা। মিছিলের পথে বিভিন্ন জায়গা ঘিরে রাখা হয় গার্ডরেল দিয়ে। মিছিলে যোগ দেন দলের বহু কর্মী-সমর্থক। এর আগে মমতা বলেছিলেন, "চার-পাঁচজন লোক ইচ্ছাকৃতভাবে আমাকে ধাক্কা দিয়েছিল। কোনও পুলিশ ছিল না।"

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ১৯৯০ সালে মমতার মাথায় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা সিপিআইএম নেতা লালু আলমের ঘটনাও ফের সামনে আনছে তৃণমূল। তৃণমূল নেত্রীর মাথায় রক্তাক্ত ব্যান্ডেজ বাঁধা সেই ছবি সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে প্রচার করা হচ্ছে- ‘তারা তখন তাকে থামাতে পারেনি / তারা এখন তাকে থামাতে পারবে না / বাংলার বাঘিনী গর্জন করবেই।’ তৃণমূলের বর্ষীয়াণ সাংসদ সৌগত রায় বলেন, মমতাই দেশে একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী যাকে এমনভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯৯০ সালের এই ঘটনার পর থেকে রাজনৈতিক ময়দানে মমতার প্রতি মানুষের সহানূভূতি অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। তিনি বেশ কয়েকমাস মাথায় ব্যান্ডেজ বেঁধে ঘুরেছিলেন। ১৯৯১ সালে দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্র জিতে নরসিমা রাওয়ের মন্ত্রিসভায় স্থানও পান। এখন মমতার এই 'ব্যান্ডেজ পা' সেদিকেই যে ইঙ্গিত করছে বিজেপিও তা অস্বীকার করছে না।

Advertisement

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের এমিরেটাস প্রশান্ত রায় বলেন, "তারা (হুইলচেয়ারের ছবিগুলি) প্রজন্মের প্রজন্মের মধ্যে কিছুটা সহমর্মিতার জায়গায় তৈরি করার চেষ্টা করবে। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তো অবশ্যই। যদিও সেই রাজনীতি থীক নিজেকেই অনেকটা সরিয়ে এনেছিলেন মমতা। তবে এখন কেন্দ্রের 'বিগ ব্রাদার'দের পরাজিত করতে বেশ কিছু বিষয় তিনি নিজেও উপেক্ষা করতে পারবেন না।"

Advertisement