বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ, বিভিন্ন জায়গার নেতা কর্মীরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। দলবদলের পালা এখনও জারি। নির্বাচনের আগে যাঁরা ঘাসফুল ছেড়ে পদ্ম শিবিরে যোগ দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহির গোস্বামী (Mihir Goswami)। নতুন দলে গিয়েও নির্বাচনী লড়াইতে নেমেছেন তিনি। তবে এবার অবশ্য কোচবিহার দক্ষিণ নয়, নাটাবাড়ি কেন্দ্র থেকে লড়াই করছেন মিহিরবাবু। প্রধান প্রতিপক্ষ কোচবিহারের দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের বিদায়ী মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ (Rabindranath Ghosh)। আগামী ১০ তারিখ চতুর্থ দফার নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে ওই কেন্দ্র। তার আগে নিজের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজতক বাংলার সঙ্গে কথা বললেন মিহির গোস্বামী।
আজতক বাংলা - প্রধান প্রতিপক্ষ পরিচিত, লড়াইটা সহজ না কঠিন?
মিহির গোস্বামী - "আমার প্রধান প্রতিপক্ষ একসময় আমার নেতৃত্বে কর্মী ছিলেন। ১৯৭১ সাল থেকে আমি নাটাবাড়ি কেন্দ্রের প্রতিটি গ্রাম ও পঞ্চায়েতের সঙ্গে নির্বাচনী কাজে যুক্ত। আমার নির্বাচনী কাজের হাতেখড়িও নাটাবাড়ি থেকে। এখানকার মানুষ, বিশেষত পুরনো মানুষদের সঙ্গে আমার আত্মিক সম্পর্ক ছিল, আছে, থাকবে। আর সেই সম্পর্ক এতটাই দৃঢ় যে তাঁদের আমাকে আপনজন বলেই মনে হয়, আর সেটা সর্ব ধর্মের। তাই এটা আমার কাছে নতুন কোনও বিষয় নয়, নতুন জায়গাও নয়। এটা আমার আদি জায়গা।"
তাহলে কি প্রতিপক্ষকে গুরুত্বই দিচ্ছেন না?
"প্রতিপক্ষ তো থাকতেই হবে। প্রতিপক্ষ না থাকলে গণতন্ত্র আসবে কীকরে? প্রতিপক্ষ যদি শক্তিশালী হয় তাহলে লড়াই করে আনন্দ পাওয়া যায়। প্রতিপক্ষের কঠিন বাণকে রুখে দেওয়াই আমার কাজ।"
আপনি বললেন নাটাবাড়ি আপনার আদি জায়গা, তাহলে ব্যক্তি মিহির গোস্বামী, তৃণমূল নেতা মিহির গোস্বামী ও বিজেপি নেতা মিহির গোস্বামী, কার প্রতি মানুষের আস্থা বেশি?
"দল সবার ওপরে, ব্যক্তির ওপরে দল। তবে এখানকার মানুষকে আমার আপন মনে হয়। আমি আপনজনেদের খুঁজে পাই। অনেক আপনজন আমায় খুঁজে পান। তাঁরা এতো আপ্লুত ও আনন্দিত যে আমি নিজেও এতটা আশা করিনি।"
জিতলে প্রথম কোন কাজ করবেন?
"নাটাবাড়ির জন্য ইতিমধ্যেই একটা ইস্তাহার প্রকাশ করেছি। কৃষি, নদী ভাঙন রোধ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, রাস্তাঘাট সংস্কার, পরিশ্রুত পানীয় জল ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপরে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে চাই।"
দেশে ফের করোনার গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী, প্রচারে কোভিড বিধি মানছেন?
"আমি নিজে মানলেও সাধারণ মানুষের পক্ষে মানা কঠিন। অনেক ক্ষেত্রে বললেও কাজ হচ্ছে না।"
নিজের জয় নিয়ে কতটা আশাবাদী?
"আমার নাম ঘোষণা হয়েছে একদম শেষ মুহূর্তে। নির্বাচনের কাজ শুরু করতে হয়েছে খুবই অল্প সময়ে। তবে এখনও পর্যন্ত যা অভিজ্ঞতা হয়েছে তাতে বিজেপির সর্বস্তরের কর্মীরা এতটাই সক্রিয় যে তারাই সমস্ত পরিকাঠামো তৈরি করে রেখেছেন, আমায় আর নতুন করে কিছু তৈরি করতে হচ্ছে না। তাঁরা যেভাবে আমায় আপন করে নিয়েছেন তাতে কোনও সমস্যাই হবে না। কর্মীদের জয় হবেই। এটা কর্মীদের জয়, সাংগঠনিক নেতৃত্বের জয় এবং সবথেকে বড় জয় তাঁদের যাঁরা এখানকার তৃণমূলে থেকে লাঞ্চিত, বঞ্চিত ও অপমানিত হয়েছেন।"