বাংলাদেশ সফরের দ্বিতীয় দিনেই গোপালগঞ্জে মতুয়া ধর্মের প্রবক্তা হরিচাঁদ ঠাকুর জন্মস্থানে যান বারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেখানে ওড়াকান্দি মন্দিরে প্রার্থনা করেন। পরে নিজের ভাষণে দাবি করেন, কীভাবে শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এসেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, তিনি নিয়মিতভাবে শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের অনুগামীদের থেকেও অনেক কিছু শিখেছেন। ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়ি দর্শনের অভিজ্ঞতা নিয়ে এরপর ট্যুইটও করেন প্রধানমন্ত্রী।
My visit to the Orakandi Thakurbari is an experience I will remember for life.
— Narendra Modi (@narendramodi) March 27, 2021
This is a very sacred place, which is closely associated with the Matua Community. pic.twitter.com/ZMnOCdxSfR
ট্যুইটে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, 'সারা জীবন ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়ি দর্শনের স্মৃতি মনে থাকবে। এটা অত্যন্ত পবিত্র স্থান।'
মোদী এদিন ওপার বাংলার মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর যতই দাবি করুন না কেন তাঁর দীর্ঘদিন ধরেই ওড়াকান্দিতে আসার ইচ্ছা ছিল। ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবার বাংলাদেশে এসেও ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন। অবশেষে শনিবার সেই ইচ্ছাপূরণ হয়েছে। কিন্তু বাংলায় ভোট শুরুর ঠিক মুখে প্রধানমন্ত্রীর এদিনের সফরে পুরোপুরি রাজনৈতিক বার্তা খুঁজে পাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। অনেকেই বলছেন ওড়াকান্দিতে দাঁড়িয়েই পশ্চিমবঙ্গ ভোটের একপ্রস্থ প্রচার সেরে নিলেন মোদী।
মোদীর সফরে মমতার উষ্মা
মোদীর ওড়াকান্দি সফর নিয়ে বেজায় চটেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেছেন, রাজ্যে ভোট চলছে, আর নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশে গিয়ে বাংলায় বক্তৃতা দিচ্ছেন৷ এহেন কাজে তিনি নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করছেন৷ মমতা আরও অভিযোগ করেছেন , গত লোকসভা ভোটের সময় বাংলাদেশের অভিনেতা ফিরদৌস জোড়াফুলের মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন। আর তার জেরেই নাকি বাংলাদেশ সরকারকে বলে ফিরদৌসের ভিসা বাতিল করিয়েছিল বিজেপি।
শুরু হয়ে গেছে রাজনৈতিক তরজা
এমনিতে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৩৫ টি বিধানসভা কেন্দ্রে মতুয়া ভোট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে সেই ভোটের একটা বড় অংশ গিয়েছিল বিজেপির দিকে। কিন্তু নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের কার্যকর হওয়া নিয়ে টালবাহানার জেরে মতুয়াদের মধ্যে সেই সমর্থন এবার বিজেপির দিকে থাকবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মোদী যেভাবে মতুয়া সমাজের প্রশস্তি করলেন, তাতে ঠাকুরনগর এবং নদিয়ার মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখার কৌশল স্পষ্ট। এমনকী ঠাকুর বাড়িরও ভূয়সী প্রশংসা করেন মোদী। সেই সঙ্গে মোদী আশ্বাস দেন, ওড়াকান্দিতে প্রাথমিক স্কুল তৈরি করবে ভারত সরকার। ওড়াকান্দিতে যে ভারতীয়রা আসবেন, তাঁদের আরও সাহায্য করবে কেন্দ্র। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে দুই প্রধান প্রতিপক্ষ হল তৃণমূল ও বিজেপি দুই তরফের কাছেই অন্যতম ফ্য়াক্টর মতুয়া ভোট৷ এই অবস্থায় মোদীর মতুয়াদের সর্বোচ্চ পীঠস্থান ওড়াকান্দি সফর নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ৷ এর সুফল ইভিএমে মিলতে পারে এমনটাই আশা করছে বঙ্গ বিজেপি৷