শিলিগুড়িতে বাম দুর্গের পতন হলো একদা বামপন্থীর হাতেই বিজয়ী শঙ্কর ঘোষ

শিলিগুড়িতে বাম দুর্গের পতন হলো একদা বামপন্থীর হাতেই। মাত্র একমাস আগে পর্যন্ত লাল ঝান্ডা হাতে নিয়ে ঘোরা শঙ্ক র ঘোষের ব্যক্তিগত ক্যারিজমা, না বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি? নাকি উত্তরবঙ্গে প্রবল তৃণমূল বিরোধী হাওয়া, কোন অঙ্কে তরী পার করলেন শঙ্কর, তা নিয়ে সুনিশ্চিত নন অতি বড় রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞও।

Advertisement
শিলিগুড়িতে বাম দুর্গের পতন হলো একদা বামপন্থীর হাতেইশিলিগুড়ির বিজয়ী বিজেপি প্রার্থী শঙ্কর ঘোষ
হাইলাইটস
  • বামপন্থী নেতার হাতেই পতন বামেদের
  • হার স্বীকার অশোক ভট্টাচার্যের
  • মানুষের ভালবাসা বলছেন শঙ্কর

বামপন্থীর হাতেই পতন হল বামেদের

শিলিগুড়িতে বাম দুর্গের পতন হলো একদা বামপন্থীর হাতেই। মাত্র একমাস আগে পর্যন্ত লাল ঝান্ডা হাতে নিয়ে ঘোরা শঙ্ক র ঘোষের ব্যক্তিগত ক্যারিজমা, না বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি? নাকি উত্তরবঙ্গে প্রবল তৃণমূল বিরোধী হাওয়া, কোন অঙ্কে তরী পার করলেন শঙ্কর, তা নিয়ে সুনিশ্চিত নন অতি বড় রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞও। তবু শেষমেষ বিপুল ব্যবধানে বর্তমান বিধায়ক ও সবচেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে ধরা হচ্ছিল, সেই অশোক ভট্টাচার্য, তাঁকেই একেবারে তিন নম্বরে ঠেলে দিলেন শঙ্কর বাবু।

শঙ্কর ঘোষের ক্যারিয়ার

ছাত্রজীবনে রাজনীতির হাতেখড়ি বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের হাত ধরে। দীর্ঘদিন এসএফআইকে শিলিগুড়ি ও দার্জিলিং জেলায় নেতৃত্ব দিয়ে উত্তরণ গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশন (ডিওয়াইএফআই) এর জেলার শীর্ষ পদে। তার সুভাষণ, কলেজে পড়তে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের অকাতরে বামপন্থী করে তুলেছে দীর্ঘদিন ধরে। ফলে সম্মোহনী শক্তি একটা রয়েছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে সেই জায়গা থেকে এভাবে প্রথমবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে প্রথমবারই রাজ্যের দুই হেভিওয়েট ব্যক্তিত্বকে সরিয়ে দিয়ে জিতে আসা, তিনি নিজেও বিশ্বাস করেছিলেন কিনা সন্দেহ। তবু লড়াই ছাড়েননি। দিনের শেষে এখন তিনিই শিলিগুড়ির বিধায়ক।

দলের কর্মীদের বিশ্বাস

তবে তার দলের কর্মী সমর্থকরা অবশ্য নির্বাচনের আগে থেকেই ঘোষণা করেছিলেন শঙ্করবাবু এবার বিপুল ভোটে জয়ী হবেন। তবে এমন দাবী তো বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করে গিয়েছিলেন, বিজেপি দুশো পার করবে বলে। ফলে এমন দাবি কে গুরুত্ব দিলেও চূড়ান্ত বিশ্বাস করেননি কেউই। ফল গণনা যত এগিয়েছে, শিলিগুড়ির মানুষ ততই অবাক হয়ে দেখেছেন, শিলিগুড়ি মডেলের প্রতিষ্ঠাতা ও বামেদের মধ্যে আমরাও পারি বিশ্বাস দিয়ে রাখা অশোকবাবু হেরে যাচ্ছেন। হেরে গণনা কেন্দ্র ছাড়ছেন এমন বিরল দৃশ্য দেখা গেল এদিন।

কি বলছেন শঙ্করবাবু নিজে?

শঙ্করবাবু বলছেন এই জয় দলগত জয়। এই জয়ের পেছনে শিলিগুড়ির মানুষ তাঁকে ভালোবেসেছেন।বিজেপিকে ভালোবেসেছেন। তাই তিনি জিতেছেন। তাঁর বক্তব্য এবার পালা আমার ফিরিয়ে দেওয়ার। শঙ্করবাবু জয়ের পিছনে অনেক বামপন্থীদের হাত রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। বামেদের ছাত্র-যুবকদের একটা বড় অংশ শঙ্করবাবুকে ভোট দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। নির্বাচনের ফল ঘোষণার কিছুদিন পর থেকেই তাঁরা সকলে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলেও আভাস মিলছে। 

Advertisement

শঙ্করের অস্ত্র

পাশাপাশি দীর্ঘদিন বামফ্রন্টে থাকার কারণে বামফ্রন্টের শক্তি ও দুর্বলতা সম্পর্কে ভালোই জানতেন শংকর বাবু। সেই জায়গা থেকে তিনি বামফ্রন্টের দুর্বলতা জায়গায় আঘাত করে নিজের এবং দলের জয় ছিনিয়ে আনতে পেরেছেন। 

হার স্বীকার অশোকের

চারবারের মন্ত্রী এবারের বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য অবশ্য এই হার  শুধু তার নয় তবে দলের সামগ্রিক ব্যর্থতা স্বীকার করে নিয়েছেন। লোকসভায় যে ভোট বা মেয়েদের ঘরে গিয়ে ছিল সেগুলি আর ফেরানো যায়নি বলেও আক্ষেপ করেন।

 

POST A COMMENT
Advertisement