scorecardresearch
 

West Bengal Election 2021: এশিয়ার বৃহত্তম যৌনপল্লি, নাম কেন সোনাগাছি?

কথিত আছে একজন মুসলমান সন্তের নাম থেকেই ধীরে ধীরে এশিয়ার সবচেয়ে বড় যৌন পল্লীর নামকরণ। তবে গোটা বিষয়টি আরও বিস্তারিত ভাবে জানার জন্য ঘাঁটতে হবে অতীতের ইতিহাস। হুগলি নদীর তীরে কলকাতা গড়ে ওঠার সময় এটা ছিল ব্যবসা বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্র।

Advertisement
প্রতীকী ছবি (সূত্রঃ গেট্টি ইমেজ) প্রতীকী ছবি (সূত্রঃ গেট্টি ইমেজ)
হাইলাইটস
  • আগামী ২৯ তারিখ ভোট শ্যামপুকুরে
  • শ্যামপুকুরের মধ্যেই অবস্থিত সোনাগাছি
  • জানুন এই যৌনপল্লির ইতিহাস

শহর কলকাতার অন্যতম প্রাচীন নিষিদ্ধ পল্লি সোনাগাছি (Sonagachi)। জানা যায় সোনাগাছিই হল এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় দেহ ব্যবসার কেন্দ্র। এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে কমপক্ষে ১০ হাজার যোনকর্মী এখানে দেহ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে বিভিন্ন বয়সের যৌন কর্মীরা এই এলাকায় তাঁদের জীবিকা নির্বাহ করেন। 

এই এলাকার নাম সোনাগাছি কেন? 
কথিত আছে একজন মুসলমান সন্তের নামানুসারে এশিয়ার সবচেয়ে বড় যৌন পল্লির নামকরণ। তবে গোটা বিষয়টি আরও বিস্তারিত ভাবে জানার জন্য ঘাঁটতে হবে অতীতের ইতিহাস। হুগলি নদীর তীরে কলকাতা গড়ে ওঠার সময় এটা ছিল ব্যবসা বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্র। ইতিহাসবিদ পিটি নায়ারের বই 'A history of Calcutta’s streets'-এর তথ্য অনুযায়ী, এই এলাকায় একসময় সনাউল্লাহ নামে এক দুর্ধর্ষ ডাকাত তার মাকে নিয়ে বসবাস করতেন। কিছুদিন পরে মৃত্যু হয় সনাউল্লাহর। এরপর একদিন সনাউল্লাহর কাঁদতে কাঁদতে নিজের ঘরে একটি আওয়াজ শুনতে পান। তিনি শোনেন সনাউললাহ তাঁকে বলছে, 'মা তুমি কেঁদো না, আমি গাজি হয়ে গিয়েছি।' এই ভাবে সনাউল্লাহ থেকে নাম হয় সোনাগাজি। দ্রুত এই ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়ে এবং সনাউল্লার ঘরে যাতায়াত শুরু হয় মানুষের। শোনা যায় এখানে গিয়ে মানুষের রোগমুক্তিও ঘটতে থাকে। 

এরপর ছেলের স্মৃতিতে এই অঞ্চলে একটি মসজিত তৈরি করেন সনাউল্লাহর মা, যা সোনাগাজির মসজিদ নামে পরিচিত ছিল। কিছুদিন পর সনাউল্লাহর মায়েরও মৃত্যু হয়। তারপর সেই মসজিদ দেখভালের জন্য আর কেউ ছিলেন না। ফলে একসময় কালের গ্বহরে অবলুপ্ত হয়ে যায় মসজিদটি। এই মসজিদকে কেন্দ্র করেই প্রতিবেশী এলাকার নাম হয় মসজিদবাড়ি। এভাবেই একসময় সনাউল্লাহ থেকে সোনাগাজি এবং তারপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা সোনাগাছিতে পরিণত হয়। 

কীভাবে তৈরি হল যৌন পল্লি?
ওল্ড পিলগ্রিম রোডে গড়ে উঠেছিল সোনাগাছি। বর্তমানে ওই এলাকা রবীন্দ্র সরনি নামে পরিচিত। বহ প্রাচীন কাল থেকেই এই এলাকা ব্যবসা বাণিজ্যের বড় কেন্দ্র ছিল। এমনকি ইংরেজদের আসার আগে থেকেই এই এলাকায় ব্যাবসা বাণিজ্যের কাজ চলত। পর্তুগাল ও আর্মেনিয়া থেকে জাহাজে করে এখানে এসে ব্যবসা করতেন বণিকরা। এই বিষয়ে কলকাতার ওপরে বিগত ৩০ বছর ধরে লেখালেখি করে আসা এক বড়িষ্ঠ সাংবাদিক জানাচ্ছেন, যেসমস্ত এলাকায় ব্যবসা বাণিজ্যের কেন্দ্র হয় সেইসব জায়গায় নিষিদ্ধ পল্লীও খুব দ্রুত গড়ে ওঠে। শোনা যায় কোনও এক সময় সোনাগাছির দেহ ব্যবসা এক নামজাদা বাঙালি পরিবার চালাত। বর্তমানে সেই সমস্ত ঘরগুলি ভাড়া দেওয়া হয়। এখানে সনাউল্লাহর দরগা এখনও রয়েছে। বেশকিছুবার ভেঙেও গিয়েছে, তবে তা মেরামতও করা হয়েছে। 

Advertisement

সোনাগাছিতে ভোটের হাওয়া
বর্তমানে এই সোনাগাছিতেও লেগেছে নির্বাচনের হাওয়া। সোনাগাছি কলকাতার শ্যামপুকুর বিধানসভার অন্তর্গত। আগামী ২৯ এপ্রিল নির্বাচন রয়েছে শ্যামপুকুর কেন্দ্রে। ২০১৬ সালে এই কেন্দ্রে তৃণমূলের টিকিটে জেতেন শশী পাঁজা। দ্বিতীয় স্থানে ছিল ফরওয়ার্ড ব্লক এবং তৃতীয় স্থানে ছিল বিজেপি। এবারেও এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী শশী পাঁজা। অন্যদিকে বিজেপির হয়ে লড়াইতে নেমেছেন সন্দীপন বিশ্বাস এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী হয়েছেন জীবন প্রকাশ সাহা। এখন দেখার এবারে নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি কে হাসেন। 


 

Advertisement