দীর্ঘ জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে বিজেপিতে যোগ দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। মেদিনীপুর কলেজ মাঠে বিজেপির পতাকা হাতে নেওয়ার পরেই অমিত শাহকে প্রণাম করেন শুভেন্দু। জড়িয়ে ধরেন অমিতও। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বড় দাদা বলে সম্বোধন করেন সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু। জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুভেন্দু এদিন দাবি করেন, পুরনো দলে তাঁকে পদে পদে অবজ্ঞা করা হয়েছে। বলেন, করোনা আক্রান্ত হলে খোঁজ নিয়েছিলেন অমিত শাহ। কিন্তু প্রায় আড়াই দশক যে দলের হয়ে কাজ করছেন সেই তৃণমূল নেতৃত্বই তাঁর কোন খোঁজ রাখেননি। শুভেন্দুর এই দাবি নিয়েই রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছে বিতর্ক। সর্বৈব মিথ্যা বলছেন শুভেন্দু, পাল্টা জবাব দেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর তৃণমূলের তরফে কেউ তাঁর খোঁজ নেয়নি। শুভেন্দুর এই দাবির প্রেক্ষিতে ফিরহাদ বলেন, 'যা বলা হচ্ছে তা সর্বৈব মিথ্যা। ও করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর আমি নিজে ওকে ফোন করে খোঁজ নিয়েছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওকে ফোন করেছেন।' ডিভোর্সের পর সব খারাপ হয়ে যায়, এই বলে এদিন শুভেন্দুকে কটাক্ষও করেন ফিরহাদ।
এদিন বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে রাজ্যবাসীকে খোলা চিঠি দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। চিঠিতে শুভেন্দু লিখেছিলেন, 'তৃণমূলে পচন ধরেছে৷ গত ১০ বছরে দলে কোনও পরিবর্তন হয়নি৷' শুভেন্দু বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন, ব্যক্তি স্বার্থেই এখন তৃণমূল চলছে। এর প্রেক্ষিতে শুভেন্দুকে ফের একবার আক্রমণ করেন ফিরহাদ। বলেন, ‘১০ বছরের মধ্যে সাড়ে ৯ বছর ভোগ করার পর শুভেন্দু অধিকারীর এখন মনে পড়ল। উপলব্ধি কি এখন হল বিজেপিতে যাওয়ার রাস্তা প্রসস্ত করার জন্য’। শুভেন্দুকে ফিরহাদের কটাক্ষ, ‘উনি তো শুধু নন্দীগ্রাম দেখেছেন, আমরা সিঙ্গু করেছি, ধানতলা, বানতলা, চমকাইতলা, কেশপুর করেছি। উনি বড় বাড়ির ছেলে। দেখতে ভাল, নাম হয়ে গিয়েছে তাই’। এদিকে শুভেন্দুর দলত্যাগের পর বুধবারই কাঁথিতে সভা করতে চলেছেন ফিরহাদ হাকিম-সৌগত রায়রা। সেখানে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারী কিংবা তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু হাজির থাকেন কি না, সেটাও এখন দেখার।