বিধানসভা নির্বাচনে শেষ ৩ পর্যায়ের লড়াই তুলনামূলক কঠিন ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) কাছে। কিন্তু ফল প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে সেখানে যথেষ্টই ভাল ফল করেছে তৃণমূল। এই তিন দফায় ভোট ছিল মতুয়া অধ্যুষিত উত্তর ২৪ পরগনা এবং নদিয়া আর সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ ও মালদা জেলায়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, শেষ ৩ দফায় যতগুলি আসনে ভোট হয়েছে তার মধ্যে ৮১ শতাংশ নিজেদের দখলে রাখতে পেরেছে তৃণমূল। তারমধ্যেও অষ্টম তথা শেষ দফায় সবচেয়ে ভাল ফল হয়েছে ঘাসফুল শিবিরের। এই দফায় তৃণমূলের স্ট্রাইক রেট ৮৯ শতাংশ। এককথায় বলতে গেলে গোটা নির্বাচনের শেষ ৩ দফায় নিজেদের জন্য সবচেয়ে বেশি ভোট নিশ্চিত করেছে তৃণমূল।
বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, নির্বাচনে মুসলিম ভোটকে নিজেদের দিকে রাখতে পেরেছে তৃণমূল। কিন্তু ২০১৯-এর মতো হিন্দু ভোট টানতে পারেনি বিজেপি (BJP)। এছাড়াও কংগ্রেস ও বাম ভোটাররদের একটা বড় অংশ এবার তৃণমূলকেই সমর্থন দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
শেষ ৩ দফার ভোট ছাড়া তৃতীয় দফাতেও ভাল ফল করেছে তৃণমূল। তৃতীয় পর্বে ভোটগ্রহণ হয়েছিল মোট ৩১টি আসনে। তারমধ্য ২৭টিই নিজেদের দখলে রাখতে পেরেছে তৃণমূল। গত বিধানসভা নির্বাচনে হাওড়া, হুগলি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এই ৩১টি আসনের মধ্যে ২৯টিতে জিতেছিল তৃণমূল। এমনকী লোকসভা ভোটেও সেই একই সংখ্যক আসনে এগিয়েছিল শাসক দল। এক্ষেত্রে তৃতীয় দফার নির্বাচনে তৃণমূলের যে ভাল ফল তা ২০১১ সালের ধারাবাহিকতা বলেই বিশ্লেষণে উঠে আসছে।
তবে গত লোকসভা নির্বাচনে অবশ্য এই অঞ্চলে ভাল ভোট পেয়েছিল বিজেপি। সেই সময় তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং পিছিয়ে পড়া শ্রেণির প্রচুর সমর্থন বিজেপি পেয়েছিল বলে মনে করা হয়। তাহলে এবার কি সেই সমর্থন কিছুটা হলেও হারিয়েছে বিজেপি?
এছাড়া দেখা যাচ্ছে, এবারে নির্বাচনে ১৩৬টি আসনে ২০ হাজারেরও বেশি ভোটে জিতেছে তৃণমূল। যেখানে গত বিধানসভা নির্বাচনে ১০১টি আসনে ২০ হাজারের বেশি ভোটে দিতেছিল শাসকদল। অন্যদিকে ১০০০ ভোটেরও কম মার্জিনে ৩ আসনে জিতেছে তৃণমূল। পাশাপাশি ১০০০ ভোটের কম ব্যাবধানে জেতা বিজেপির আসনের সংখ্যা ৪। এছাড়া বিজেপির দখলে এমন ৯টি আসন এসেছে যেখানে জয়ের ব্যাবধানের চেয়ে নোটায় বেশি ভোট পড়েছে। একইরমক ভাবে তৃণমূলের ক্ষেত্রে এমন আসনের সংখ্যা ৫।