যত ভোটের দন এগিয়ে আসছে ততই বঙ্গ রাজনীতিতে বাড়ছে উত্তাপ। কখনও সরিকার পক্ষ নিশানা করছে বিরোধী শিবিরকে, আবার কখনও বিরোধিরা রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তুলোধনা করছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। এরমধ্যেই নিজের দলের দিকেও অভিযোগের আঙ্গুল তুলছেন শাসক দলের কোনও কোনও মন্ত্রী-বিধায়ক। আবার পুরনো সহকর্মীর দিকে নাম না করে শ্লেষবাক্য ছুঁড়ছেন অনেকেই। যেমন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে সাম্প্রতিক সাময়ে বাংলার রাজনীতিতে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের এই মন্ত্রীকে নিয়ে বিতর্ক বাঁধতেই তাঁকে নিশানা করেছেন দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ। কেবল রাজীবকেই নয় নাম না নিয়ে নন্দীগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীকেও কটাক্ষ করেছেন উদয়ন।
শুক্রবার রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় হুগলির কামারপুকুরে একটি অরাজনৈতিক সভায় হাতিয়ার করেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণের বাণীকে । তাঁর মুখে ছিল 'যত মত, তত পথ' বুলি। যদিও পরমহংসদেবের এই বাণীকে তিনি রাজনৈতিক ভাবে বলেননি বলেই দাবি করছেন ডোমজুড়ের বিধায়ক। তবে তাঁর মুখে এই কথা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়ে গিয়েছে জোর চর্চা। আর বনমন্ত্রীর এই ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্যের সূত্রে ধরেই নাম না করে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীকেও নিশানা করেছেন উদয়ন।
ফেসবুকে দিনাহাটার বিধায়ক লিখেছেন, “হয় জলে (সেচ) অথবা জঙ্গলে (বন) না হলে পদ্মফুলে, যত মত তত পথ।” নিজের ফেসবুক পোস্টে উদয়ন গুহ কারও নাম উল্লেখ করেননি ঠিকই। তবে তাঁর এই পোস্ট যে আদতে বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোঁচা দিয়েই করা, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারীকেও বাদ দেননি উদয়ন। কারণ মমতা মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করার আগে সেচদফতরের দায়িত্বও সামলেছেন শুভেন্দু।
'ইট কা জবাব ফুল সে', কনভয় বিতর্কে মমতাকে সহিষ্ণুতার পাঠ কৈলাসের
শুভেন্দুর মত রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়েও বর্তমানে তৃণমূলের অন্দরে ক্রমেই টেনশন বাড়ছে। তারমধ্যে গত সপ্তাহে প্রকাশ্যে নিজের ক্ষোভ উগরে দেওয়া ও একের পর এক পোস্টার পর্ব রাজীবের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তায় ফেলেছে দলনেত্রীকে। এই আবহে রাজীবেন মন বুঝতে শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁকে নিয়ে বৈঠকে বসচে চাইছে বলেই সূত্রের খবর। এর আগে শুভেন্দু অধিকারীর মান ভাঙাতে বৈঠক করেও কার্যত খালি হাতে ফিরতে হয়েছে তৃণমূল শিবিরকে। এবার রাজীব দলকে কী জবাব দেন সেদিকেই তাকিয়ে সরকার-বিরোধী দুই শিবিরই। তবে রাজীবের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করা উদয়নও কিন্তু সন্দেহের তালিকার বাইরে নেই। তাঁর কাছে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার অফার রয়েছে বলে দলীয় সভায় দাবি করেছিলেন দিনাহাটার বিধায়ক। তৃণমূলের লোকেরাই দলের ক্ষতি করছে এই বলে অতীতে ঘাসফুল শিবিরের একাংশকেও দায়ী করতে দেখা গিয়েছিল উদয়নকে।