বিহার ভোট মিটতেই এ রাজ্যের জন্য ভোট প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই ভোটার তালিকার সংশোধনের কাজ শেষ করতে হবে। সেই লক্ষ্যে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই বুথে বুথে ভোটার কার্ড সংশোধন ও নতুন ভোটার কার্ড তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। অবশেষে শুক্রবার রাজ্যে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হল। নির্বাচন কমিশনের পেশ করা তথ্য অনুযায়ী এবছর রাজ্যে মোট ভোটারের সংখ্যা ৭ কোটি ৩২ লক্ষ ৯৪ হাজার ৯৮০। ভোটার বাড়ল ২০ লক্ষ ৪৫ হাজার ৫৯৩। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল বেড়েছে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার সংখ্যাও।
এবার রাজ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৩ কোটি ৭৩ লক্ষ ৬৬ হাজার ৩০৬ জন। মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৩ কোটি ৫৯ লক্ষ ২৭ হাজার ৮৪ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ১৫৯০ জন। এবারের ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়েছে ৫ লক্ষ ৯৯ হাজার ৯২১ জনের। নাম-সহ বিভিন্ন সংশোধন কার্য হয়েছে ১৪ লক্ষ ৪৫ হাজার ৬৭২ জনের। এছাড়াও মোট সার্ভিস ভোটার আছে এবারের তালিকায় ১ লক্ষ ১২ হাজার ৬৪২ জন।
চড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হলেও কমিশন জানিয়েছে, এখনও কোন ব্যক্তি ভোটার তালিকায় নাম তুলতে চাইলে বা কোন বিষয় সংশোধন করতে চাইলে তা অনলাইন ও অফলাইনে করার সুবিধা থাকবে। এই নাম সংযুক্তিকরণ এর কাজ করা যাবে সংশ্লিষ্ট এলাকায় নোটিফিকেশন হওয়ার আগের দিন পর্যন্ত। প্রতিবারের মতো এবারও জানুয়ারি মাসের ১৫ তারিখে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হলেও নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ সম্ভবত রাজ্যে আসছে চলতি মাসেই। তাই তার আগে তড়িঘড়ি নিজেদের ঘর গোছাতে ব্যস্ত এখন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তর। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর গ্রীষ্মের দাবদাহে এবারে আর মানুষকে কষ্ট পেতে হবে না, এবারে রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন হবে অনেক আগেই।
একদিকে সিবিএসসির পরীক্ষা অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতিকে মাথায় রেখেই নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্রকাশ করতে পারে নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, এখনই কত দফায় নির্বাচন হবে পশ্চিমবঙ্গে সেটা সঠিকভাবে বলা না গেলেও সংখ্যাটা যে বাড়বে সে নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। এর পাশাপাশি কোভিড প্রটোকল মানার জন্য রাজ্যে যেখানে মোট বুথের সংখ্যা আগে ছিল ৭৮,৯০৩ সেখানে অক্সিলারি বুথ তৈরি করা হবে একই প্রেমিসেসে। ফলে বুথের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১,০১,৭৩৩। এর ফলে যে বুথে ভোটারের সংখ্যা ছিল ১৫০০ র বেশি এবার তাকে দুটি ভাগে বিভক্ত করে দেওয়া হবে। ভোটকেন্দ্র কঠোর ভাবে কোভিড প্রটোকল মানতে হবে সকলকে। এচে প্রিসাইডিং অফিসার সহ অন্য ভোট কর্মীদের ওপর চাপ অনেকটাই কমবে এবং ভোটদান প্রক্রিয়া আরো বেশি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যাবে বলেই মনে করছে নির্বাচন কমিশন। খুব স্বাভাবিক ভাবেই নিরাপত্তা কর্মীদের সংখ্যাও যে বাড়বে তাও সহজেই অনুমেয়। এদিকে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের আগে রাজ্যে দু’দিনের সফরে এসে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে কড়া বার্তা দিলেন উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। তিনি তাঁদের স্পষ্টতই বুঝিয়ে দিয়েছেন, ভোটের সময় গোলমাল বা রাজনৈতিক হিংসা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। হিংসা রুখতে তৈরি থাকতে হবে পুলিশকেই। দাগি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ করতে হবে প্রশাসনকে।