এক দশক আগের ঘটনা। অভিযোগ, তাঁকে জোর করা হয়েছিল তৃণমূল নাম লেখানোর জন্য। তিনি মানেননি। আর তাই তাঁর গায়ে সেঁটে দেওয়া হয়েছিল মাওবাদী তকমা।
সে কারণে জেলে যেতে হয়। সরকারি চাকরিতে দাগ পড়ে যায়। তখন থেকে এখনও সাসপেন্ড রয়েছেন তিনি। তবে দল পাল্টাননি। তিনি প্রশান্ত দাস। সিপিআইএমের হয়ে ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরে ভোটে লড়ছেন।
মঙ্গলবার সেই কথাগুলো মনে করছিলেন। আপনাকে তো সাসপেন্ড করা হয়েছে? সংসার চালাতে অসুবিধা হয় না? কারণ বেতন কমে গিয়েছে তো। সাসপেন্ড হওয়ায় যেন তাঁর কাছে গর্বের। কথা শুনে তেমনই মনে হল। প্রশ্ন শুনে সামান্য হাসলেন।
তিনি জানান, ২০১১ সালে মাওবাদী তকমা দেওয়া হল। তিনি ঝাড়গ্রাম পুরসভায় পূর্ত বিভাগে কাজ করেন। তাঁর অভিযোগ, তৎকালীন পুলিশের প্রধান ভারতী ঘোষ তাঁর ওপর চাপ সৃষ্টি করছিলেন তৃণমূলে নাম লেখানোর জন্য। তিনি তা করেননি বলেই এই অবস্থা।
তাঁর আরও অভিযোগ, তাঁকে বলা হয়েছিল তৃণমূল করতেই হবে। সিপিআইএম লালঝান্ডা ধরতে দেব না। আর তাঁর জবাব ছিল, ঝাড়গ্রাম মহকুমায় কেউ একজন যদি থেকে থাকে যিনি লালঝান্ডা ধরবেন, সেটি তিনি।
প্রশান্ত জানান, ১৯৭৬ সাল থেকে দল করি। তখন তাঁর বয়স ১৩ বছর। ফলে অন্য দল করার কথা মাতাতেই আসে না।
তাঁর দাবি, এরপর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বাড়ি গোপীবল্লভপুরের আউসপালে। রাত ১০টা নাগাদ পুলিশ আসে। হাতে পোস্টার, পাইপগান ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ কাজে স্থানীয় তৃণমূল যুক্ত ছিল। ১ বছর জেলে থাকতে হয়।
এবার তিনি প্রথম ভোটে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর দাবি, লোকসভায় নীচে নেমে গিয়েছিলাম। এবার জেতার দিকে চলে যাব। তবে কেন এমন দাবি করছেন তিনি? যেখানে গত কয়েক বছরে দেখা গিয়েছে সিপিআইএম বা বামেদের ক্ষোট অনেকটাই কমেছে।
তাঁর ব্যাখ্যা, লোকসভায় বিজেপি এল। ঝাড়গ্রামে তৃণমূলের গরিব মানুষ হতাশ হয়ে পড়লেন। নেতৃত্ব বসে গিয়েছে। সেখানে গোটা দশেক গোষ্ঠী রয়েছে। আর আমি লড়াইয়ে রয়েছি ৩০ বছর ধরে।
তিনি আরও জানান, যে লোকগুলো বিজেপি করছিল, যাঁরা বলছিলেন, আগে রাম, পরে বাম, তাঁরা আমাদের দিকে। এই এলাকায় অনেক মানুষ কাজদের জন্য বাইরে ছিলেন। লকডাউনে সময় ফিরে এসেছিলেন। দলের তরফ থেকে তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। অনেক মানুষ ফিরে এসেছেন। তাই বলছি, ভাল দিকে চলে গিয়েছি।