বৃহস্পতিবার বঙ্গভোটের অষ্টম দফা শেষ হতেই একের পর এক সংবাদমাধ্যমগুলি নেমে পড়েছে Exit Poll-এর প্রতিযোগিতায়। আর তাতে দেখা যাচ্ছে এবারের নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে অভূতপূর্ব ফল করতে চলেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। নবান্নের ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে চলেছে তৃণমূল ও বিজেপির। আর এই আবহেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক উপদেষ্টা প্রশান্ত কিশোরের ভবিষ্যতবাণী যে ব্যর্থ হতে চলেছে এমনটাই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। সিএনএক্স, জন কী বাত, সি ভোটার, টুডে চাণক্য এবং India Today-Axis My India exit poll সবাই বুথফেরত সমীক্ষায় জানাচ্ছে রাজ্যে আরামসে ১০০টি আসন পেয়ে যাবে গেরুয়া শিবির।
২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের বিজেপির কাছে একের পর এক আসন খোওয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস। জমি পুনরুদ্ধারে জন্য রাজনৈতিক উপদেষ্টা প্রশান্ত কিশোরের সাহায্য নেয় তৃণমূল কংগ্রেস। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে ভারতে আসে প্রথম মোদী সরকার। আর সেই সময় বিজেপির রাজনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন প্রশান্তই। তবে বঙ্গ নির্বাচনের আবহে প্রশান্ত কিশোর দাবি করেছিলেন বাংলাতেই কিছুতেই দুই অঙ্কের আসন টপকাবে না গেরুয়া শিবির। ট্যুইট করে রণনীতি গুরু প্রশান্ত কিশোর দাবি করেছিলেন, যতই হাওয়া উঠুক না কেন, বাংলায় দুই অঙ্ক পেরতে বেগ পেতে হবে বিজেপিকে । রীতিমত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি আরও বলেছিলেন, এই ট্যুইটটা সেভ করে রেখে দিতে। যদি এর অন্যথা হয়, তবে তিনি তাঁর জায়গা ছেড়ে সরে দাঁড়াবেন।
For all the hype AMPLIFIED by a section of supportive media, in reality BJP will struggle to CROSS DOUBLE DIGITS in #WestBengal
— Prashant Kishor (@PrashantKishor) December 21, 2020
PS: Please save this tweet and if BJP does any better I must quit this space!
এবার কি তাহলে প্রশান্ত কিশোর অবসর নেবেন?
প্রতিটি এগজিট পোলেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে বিজেপি বাংলায় সহজেই তিন অঙ্কের আসন পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পিকের চ্যালেঞ্জ অনুসারে দেশ কি একজন ভোট কৌশলীকে হারাতে চলেছে? সেই প্রশ্ন ওঠা শুরু হয়ে গেছে। পিকের দাবিকে উড়িয়ে India Today-Axis My India exit poll-এর হিসেব বলছে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ১৩৪ থেকে ১৬০টি আসন পেতে পারে। অন্যদিকে ক্ষমতায় থাকা তৃণমূলের ঝুলিতে যাবে ১৩০ থেকে ১৫৬টি আসন।
পরাজয় স্বীকার করলেন মমতার কৌশলবিদ...
বাংলায় চতুর্থ পর্বের নির্বাচনের সময় বিজেপি প্রশান্ত কিশোরের একটি অডিও চ্যাট প্রকাশ করেছিল। তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরাজয়ের বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছিল। ওই অডিও চ্যাটটি প্রকাশ করেছিলেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। এতে প্রশান্ত কিশোর মেনে নিয়েছিলেন যে বাংলায় বিজেপি জিতছে। তবে পরে প্রশান্ত কিশোর বিজেপির এই দাবি অস্বীকার করেন। ‘বাংলায় আসছে বিজেপির সরকার...।’ সাংবাদিক বন্ধুদের সঙ্গে আলাপচারিতায় এমনটাই বলতে শোনা গিয়েছিল খোদ তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটকৌশলী প্রশান্ত কিশোরকে। এ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে প্রশান্ত ট্যুইট করেন, ‘আমি খুশি, বিজেপি তাদের নেতার কথার চেয়ে আমার চ্যাটকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। কথার নির্দিষ্ট কিছু অংশ তুলে ধরে উত্তেজিত না হয়ে তাদের পুরো চ্যাটটি প্রকাশ্যে আনা উচিত। আমি আগেও বলেছি, আবার বলছি, বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ১০০ পেরোবে না’।
২০১৪ সাল থেকে উত্থান PK-র
প্রশান্ত কিশোর নির্বাচনী কৌশলবিদ হিসাবে ২০১৪ সাল থেকে আলোচনায় রয়েছেন। বিহারে নীতীশ কুমারের সাথে কাজ করার সময় পিকে ব্র্যান্ড সকলের নজর কাজে। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে পিকে ভারতীয় জনতা পার্টির জন্য নির্বাচনের কৌশল তৈরি করেছিল। যদিও পরে বিজেপির সাথে তাঁর দূরত্ব বাড়তে থাকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরে প্রশান্ত কিশোরকে ভোট কৌশলী হিসাবে নিয়ে আসে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ কড়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । ইতিমধ্যে, তৃণমূলের অনেক নেতা পিকে কার্যক্রমে ক্ষুব্ধ হয়ে দল ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও, পিকে-র দাবি ছিল, বিজেপির আসন সংখ্যা এবার তিন অঙ্কে পৌঁছবে না।