scorecardresearch
 

Exclusive: নন্দীগ্রামে কোন সমীকরণে ISF-এর বদলে মীনাক্ষীতে ভরসা রাখল বামেরা?

রাজনৈতিক দল যখন ধর্মীয় মেরুকরণ করে ভোট বাক্স সযত্নে লালন করতে চাইছে তখন আব্বাস সিদ্দিকীর বদলে কেন মীনাক্ষীর কথা ভাবা হল সংযুক্ত মোর্চার তরফে? তবে কি এই ভাবাবেগ নিয়ে স্ট্র্যাটেজি সাজাচ্ছে না সংযুক্ত মোর্চা? আজতক বাংলার সঙ্গে ফোনালাপে কী বললেন মীনাক্ষী?

Advertisement
নন্দীগ্রামে প্রচারে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। নন্দীগ্রামে প্রচারে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়।
হাইলাইটস
  • আব্বাস সিদ্দিকীর বদলে কেন মীনাক্ষীর কথা ভাবা হল সংযুক্ত মোর্চার তরফে?
  • তবে কি এই ভাবাবেগ নিয়ে স্ট্র্যাটেজি সাজাচ্ছে না সংযুক্ত মোর্চা?
  • এদিকে স্বাভাবিকভাবেই বাম নেত্রীর কথায় শাসক-বিরোধী দলের বিরুদ্ধে সুর স্পষ্ট

বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে একাধিক ইস্যু যেমন রয়েছে তেমন এবার ভোটের অন্যতম নিশানা হয়ে দাঁড়িয়েছে ধর্মীয় মেরুকরণ। 'মমতা মুসলিম তোষণ-তুষ্টিকরণ' করছেন এই অভিযোগ তুলেছেন মোদী-শাহ-নাড্ডা, এমনকী শুভেন্দু অধিকারীও। অন্যদিকে বিজেপিও এক শ্রেণির ভোটারদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে এমন পাল্টা অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। এরই মাঝে বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গঠন করেছে আব্বাস সিদ্দিকীর দল ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট। এখানেও বিতর্ক উঠেছে একটি ক্ষেত্রেই। তা হল নন্দীগ্রামে ডিওয়াইএফআই নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের প্রার্থীপদ নিয়ে। 

নন্দীগ্রাম পূর্ব এবং পশ্চিমে মুসলিম আধিপত্য কিছুটা রয়েছে। নন্দীগ্রামে বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় ৩৩ শতাংশ মুসলিম ভোটার। এরমধ্যে নন্দীগ্রাম ১-এ ৩৫ শতাংশ, নন্দীগ্রাম ২-এ ১২-১৪ শতাংশ মুসলিম। রাজনৈতিক দল যখন ধর্মীয় মেরুকরণ করে ভোট বাক্স সযত্নে লালন করতে চাইছে তখন আব্বাস সিদ্দিকীর বদলে কেন মীনাক্ষীর কথা ভাবা হল সংযুক্ত মোর্চার তরফে? তবে কি এই ভাবাবেগ নিয়ে স্ট্র্যাটেজি সাজাচ্ছে না সংযুক্ত মোর্চা? আজতক বাংলার সঙ্গে ফোনালাপে মীনাক্ষী বলেন, "রাজনীতিতে কখন ধর্মকে পাশের চেয়ারে বসাতে হয় জানেন? যখন রাজনীতিতে যে নীতি, যে প্রতিশ্রুতি রাখার কথা ছিল, তা যখন কেউ রাখতে পারে না তখন ধর্ম নিয়ে আসা হয়।" 

আরও পড়ুন,  'ভোট ময়দানে প্রথম'! মমতা-শুভেন্দুর বিরুদ্ধে 'নির্ভীক' মীনাক্ষী বললেন, 'মঞ্চ বদলেছে কেবল' 

বাম নেত্রীর কথায় শাসক-বিরোধী দলের বিরুদ্ধে সুর ছিল স্পষ্ট। তিনি বলেন, "চাকরি দিয়ে সে কথা রাখা হয়নি, জমির অধিকার, মা-বোনেদের সম্মান রাখা কোনটাই পারেনি। অতএব এবার দেশের এবং পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সেন্টিমেন্ট, ধর্মীয় ভাবাবেগকে রাজনীতিতে নিয়ে আসা হল। এটা বলে কিন্তু কেউ ক্ষমতায় আসেনি।"  

কিন্তু একুশের এই লড়াই আগামী দিনের বাংলার রাজনীতিতে টিকে থাকার লড়াই একথা মানছেন রাজনীতিকরাও। ব্রিগেডে নরেন্দ্র মোদীর ভাষণে যেমন ছিল মমতা শিবিরের প্রতি তোপ তেমনই ছিল বাম-কংগ্রেস জোটকে কটাক্ষ। ওয়াকিবহাল মহলের মত বাকি দুই দলের মত বাম-কংগ্রেসও চেয়েছে সংখ্যালঘু ভোট টানতে। আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে হাত মেলানোয় সে তথ্যে সিলমোহর পড়েছে। তাহলে নন্দীগ্রামে মুসলিম ভোট সংখ্যা বেশি জেনেও আইএসএফ প্রার্থী না দিয়ে মীনাক্ষীকেই কেন? 

Advertisement

এ প্রশ্নের উত্তর অবশ্য ডিওয়াইএফআই নেত্রী নিজেই জানালেন। মীনাক্ষী বলেন, "আমরা হিন্দু, মুসলিম, ঈদ, মহরম, দুর্গাপুজো কোনও কিছুর বিরোধী নই। আমরা চাকরির পক্ষে। মুসলিম বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন, পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে যারা ভিন রাজ্যে রয়েছে তাঁরা বাংলায় চাকরি করতে চাইছে। হিন্দু বাড়ির ছেলেও চাইছে চাকরি করতে। ঘুষ দিতে পারেনি বলে চাকরি হয়নি। তাই ধর্মীয় মেরুকরণে ভোট হবে না। ভোট হবে নন্দীগ্রামে ১০ বছরের কাজের ভিত্তিতে। হিন্দু-মুসলিম কারওকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। একসময় মুসলিমদের সঙ্গে নিয়েছিলেন। এখন দল পাল্টে বলছে আমরা হিন্দুদের সঙ্গে রয়েছি, হিন্দুদের রক্ষা করব। নন্দীগ্রাম এখনও আতঙ্কে রয়েছে। তাই শুধুমাত্র সমীকরণে নির্বাচন হবে না। আইএসএফ চাকরি, পিছিয়ে পড়া মানুষের চাকরির দাবিতে লড়াই করছে, সংযুক্ত মোর্চাও তাই। মেহনতি মানুষের জন্য যারা লড়াই করছে নন্দীগ্রামে জয় তাঁদেরই হবে।"

Advertisement