ভবানীপুরের উপ-নির্বাচন তাঁর জন্য যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা খিদিরপুরে জনসভা থেকে বুঝিয়ে দিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা ওই কেন্দ্রের TMC প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'ভবানীপুরের ভোট গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই ভোট আমাকে মুখ্যমন্ত্রী করবে। বৃষ্টি হলেও বাড়িতে বসে থাকবেন না। আপনাদের ভোট আমার কাছে মুল্যবান। আমাকে জেতাতে আপনাদের ভোট দিতেই হবে। আর আমি মুখ্যমন্ত্রী না হলে বিজেপির বিরুদ্ধে কে আন্দোলন করবে? কে এনআরসি, সিএএ নিয়ে লড়বে? তাই আমাকে ভোট দিন। ফের মুখ্যমন্ত্রী করুন। আপনাদের একটা ভোটও আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বৃষ্টি পড়লে ভাববেন না যে, আমি জিতে গেছি বলে ভোট দিতে যাওয়ার দরকার নেই। তাহলে কিন্তু ভুল হবে। আমি হেরে গেলে আমাকে আর পাবেন না।'
এই উপ-নির্বাচন জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রেও যে তৃণমূলের জন্য কতটা তাৎপর্যপূর্ণ তা নিজের কথায় পরিষ্কার করে দেন তৃণমূল নেত্রী। খিদিরপুরের জনসভা থেকে বলেন, 'এই ভবানীপুরের নির্বাচন আমাদের পথ দেখাবে। এখানে জিতে আমরা প্রার্থী দেব ত্রিপুরা-সহ বিভিন্ন জায়গায়। ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায় লড়ব। BJP-কে দেশছাড়া করব।'
আরও পড়ুন : টিকা নিলেও ভারতীয়দের কোয়ারেন্টাইন মাস্ট এই দেশে
মিছিল করতে পারছি না
বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালকে যেভাবে প্রচারে দেখা যাচ্ছে সেইভাবে আসরে দেখা যাচ্ছে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তার কারণ হিসেবে খিদিরপুরের সভা থেকে তৃণমূল নেত্রী বলেন, 'নির্বাচন কমিশন আমাদের অনুমতি দেয়নি।কোভিডের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়নি। সেজন্য আমি গাড়ি নিয়ে এলাকায় ঘুরছি। আর এত বৃষ্টি হচ্ছে। গত ৩০ বছরে রাজ্যে এত বৃষ্টি হয়নি।'
নন্দীগ্রামে চক্রান্ত করে হারানো হয়েছে
একুশের ভোটে নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে পরাজিত হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথন থেকেই তিনি ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব সামনে এনেছেন। এদিনের সভা খেকেও তিনি বলেন, 'নন্দীগ্রামে আমাকে চক্রান্ত করে হারানো হয়েছে। সেই সব তথ্য সামনে এলে আপনারা ভয় পেয়ে যাবেন। তারপর আমি ভাবলাম নিয়তি বলে একটা জিনিস আছে। সবার ইচ্ছে, আমি ভবানীপুর থেকে জিতেই মুখ্যমন্ত্রী হই। তাই এখানে আমি দাঁড়িয়েছি।'
উত্তরপ্রদেশ ও ত্রিপুরা সরকারের সমালোচনা
উত্তরপ্রদেশ ও ত্রিপুরা সরকারের সমালোচনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, করোনায় মৃতদের দেহ গঙ্গার জলে ভাসিয়ে দেয় সেই রাজ্যের সরকার। ত্রিপুরায় যাতে তৃণমূল সভা করতে না পারে সেই জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। নভেম্বর মাস পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। তারপরই মমতার সংযোজন, 'তাহলে কি অক্টোবরে সেই রাজ্যে দুর্গাপুজো হবে না? ওরা আমাদের বলে এই রাজ্যে নাকি আমরা পুজো করতে দিই না। কিন্তু, ত্রিপুরায় BJP কী করছে? ওরা আসলে মিথ্যেবাদী। বাংলায় ১৪৪ ধারা জারি হয়নি। কিন্তু, BJP শাসিত রাজ্যে ১৪৪ ধারা করা হয়েছে। ওরা আসলে ভোট করতেই চাই না। এইটাও BJP-র চালাকি।'
আরও পড়ুন : টানা বৃষ্টির পূর্বাভাসে সতর্ক নবান্ন, জারি একগুচ্ছ নির্দেশ
উপ-নির্বাচন ভারতবর্ষের ভবিষ্যৎ ঠিক করবে
এদিনের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'এই নির্বাচন দেশের ভবিষ্যৎ ঠিক করবে। আমরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় লড়াই করব। প্রয়োজনে ত্রিপুয়ার, অসমে, গোয়া ও উত্তরপ্রদেশে খেলা হবে। আমরা BJP-কে দেশ থেকে তাড়াব। এই কথা আমি আপনাদের দিলাম।