scorecardresearch
 

TMC Congress: হাইকম্যান্ডই চাননি মমতার বিরুদ্ধে প্রার্থী, ২৪'এ কি তাহলে জোট হচ্ছেই?

কংগ্রেস হাইকম্যান্ড এখন বামেদের সঙ্গে জোটকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন না বলেই খবর। কেননা বাম-কংগ্রেস জোটের সেভাবে কোনও ভবিষ্যৎ দেখছেন না সনিয়া-রাহুলরা। একুশের নির্বাচনে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড বুঝতে পেড়েছেন বামেদের সঙ্গে জোট করে কোনও ফায়দা হয়নি। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী না দিয়ে সনিয়া গান্ধী যেন একপ্রকার স্থির করে দিলেন কংগ্রেসের ভবিষ্যতের চলার পথ।

Advertisement
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তৃণমূলকে আসলে বার্তা দিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তৃণমূলকে আসলে বার্তা দিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী
হাইলাইটস
  • মমতার বিরুদ্ধে প্রার্থী দেবে না কংগ্রেস
  • যদিও দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই নাকি ভবানীপুরে উপনির্বাচনে লড়ার পক্ষে ছিলেন
  • বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তৃণমূলকে আসলে বার্তা দিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী


ভবানীপুর উপনির্বাচনে লড়ছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনীতির ময়দানে তীব্র মমতা বিরোধী হিসাবে পরিচিত অধীর চৌধুরী। সেই অধীরবাবুই গত জুনমাসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে উপনির্বাচনে প্রার্থী না দেওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন। প্রদেশ সভাপতির যুক্তি ছিল, মুখ্যমন্ত্রীর পদটিকে সম্মান প্রদর্শন করতে চাইছেন তিনি। তবে সেটা ছিল প্রদেশ সভাপতির একান্ত ব্যক্তিগত মত। তবে প্রদেশ কংগ্রেসের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতাই চেয়েছিলেন ভবানীপুর উপনির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিতে। কিন্তু কংগ্রেস হাইকমান্ড স্বয়ং নাকি রাজি ছিলেন না তৃণমূলনেত্রীর বিরুদ্ধে প্রার্থী দিতে। আর তার ফল স্বরূপ ভবানীপুর বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রার্থী  দেবে না কংগ্রেস, সাংবাদিক সম্মেলন করে সেকথা ঘোষণা করে দিয়েছেন প্রদেশ সভাপতি। 

দ্বিধাবিভক্ত প্রদেশ নেতৃত্ব
ভবানীপুরে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে প্রথম থেকেই দ্বিধাবিভক্ত ছিল রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্ব। দলের একাংশ প্রার্থী দেওয়ার পক্ষেই ছিলেন। অন্য অংশ তা চাইছিলেন না। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই নাকি ভবানীপুরে উপনির্বাচনে লড়ার পক্ষে ছিলেন। তারা চাইছিলেন বামেদের সঙ্গে জোট করেই ভোট হোক। সেই প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছিল কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের কাছে। এনিয়ে অধীর চৌধুরী বলেন, "এরকম পরিস্থিতিতে প্রদেশ সভাপতি হিসেবে আমার মনে হয়েছিল কংগ্রেস নেতাদের ওইসব মত দিল্লিতে পাঠানো। আমার উদ্দেশ্য ছিল শীর্ষ নেতৃত্বই এনিয়ে সিদ্ধান্ত নিক। অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উপনির্বাচনে ভবানীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেবে না কংগ্রেস।"

 

 

অধীরবাবু ভোট ভাগ না হওয়ার যুক্তি দিচ্ছেন
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়ে বিজেপিকে সুবিধে করে দিতে রাজি নয় কংগ্রেস। তাই ভবানীপুর উপনির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়া হচ্ছে না। সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই দাবি করছেন প্রদেশ সভাপতি। দিল্লির নির্দেশেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন তিনি। অধীর বলছেন,  'হাইকম্যান্ডের তরফে জানানো হয়েছে ভবানীপুরে লড়বে না কংগ্রেস।’ প্রদেশ সভাপতির ব্যাখ্যা, ‘ভবানীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিলে বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগ হবে। যা কখনোই চায় না কংগ্রেস।’ 

Advertisement

 

 

আরও কাছাকাছি কংগ্রেস-তৃণমূল
অধীরবাবুর এই যুক্তিতে প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যে আগামী নির্বাচনগুলিতেও কি একই যুক্তিতে প্রার্থী দেওয়া নেওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কংগ্রেস? প্রসঙ্গত রাজ্যে ২০২১-এর  বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর বিজেপি বিরোধী জোট গড়তে দিল্লিতে তৎপরতা শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। গত জুলাই মাসে দিল্লি সফরে গিয়ে কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীর বাসভবনেও যান মমতা। সেখানে তাঁকে স্বাগত  জানাতে হাজির ছিলেন রাহুল গান্ধীও। ২০২৪-এ লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখেই সনিয়া গান্ধী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিলেন না বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এটা যেন তৃণমূলের প্রতি কংগ্রেসের  জোটের উদ্যোগকে এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা।

 

আরও পড়ুন: হুঙ্কার দিচ্ছেন অভিষেক-মুকুলরা, ঘর বাঁচাবেন কী করে দিলীপ-শুভেন্দুরা?

তাহলে কী হবে বাম-কংগ্রেস জোটের?
২০১১ সালে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করেই বিধানসভা নির্বাচনে লড়েছিল কংগ্রেস। ২০১৪ সালের লোকসভাতেও সেই জোট চিত্র বজায় ছিল। তবে ২০১৬ সালের বিধনাসভায় কংগ্রেসের জোটসঙ্গী হয় বামেরা। ২০২১ বিধানসভাতেও সেই ধারা বজায় ছিল। বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর আসনটি সংযুক্ত মোর্চার তরফে কংগ্রেসকেই ছাড়া হয়েছিল৷ তাই উপনির্বাচনেও প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে কংগ্রেসকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল। বামেরা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিল, কংগ্রেস প্রার্থী না দিলে তারাই লড়বে ভবানীপুরে।  ফলে ভবানীপুরের উপনির্বাচনে বাম থাকলেও বাম-কংগ্রেস জোট থাকছে না। এর ফলে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি এখানেই বাংলায় বাম-কংগ্রেস জোটে দাড়ি পড়ল? সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী অবশ্য বলছেন, শুধু-একটি বিষয় নিয়ে জোট ভেঙে যায় না। কংগ্রেস আগেই প্রার্থী না দেয়ার কথা বলেছিল। এখন ওরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে বামেরা প্রার্থী দেবে। এদিকে মুর্শিদাবাদের দুটি কেন্দ্রের উপনির্বাচনেই বামেরা প্রার্থী দেবে। অধীর চৌধুরী  জানিয়েছেন, সেখানে কংগ্রেস তাদের সমর্থন করছে। ফলে মুর্শিদাবাদে বাম-কংগ্রেস জোট থাকছে। 

আরও পড়ুন: পুষ্টিগুণে ভরা ইলিশ, কিন্তু গর্ভবতীদের জন্য কতটা নিরাপদ?

কংগ্রেস যে বার্তা দিচ্ছে
কংগ্রেস হাইকম্যান্ড এখন বামেদের সঙ্গে জোটকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন না বলেই খবর। কেননা বাম-কংগ্রেস জোটের সেভাবে কোনও ভবিষ্যৎ দেখছেন না সনিয়া-রাহুলরা। একুশের নির্বাচনে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড বুঝতে পেড়েছেন বামেদের সঙ্গে জোট করে কোনও ফায়দা হয়নি। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী না দিয়ে সনিয়া গান্ধী যেন একপ্রকার স্থির করে দিলেন কংগ্রেসের ভবিষ্যতের  চলার পথ। দিল্লির কুর্সিতে থেকে বিজেপিকে হঠাতে জোট বেধে ময়দানে নামতে হবে, তা স্পষ্ট ছিলই। সংশয় ছিল বাংলায় কী সমীকরণ হবে তা নিয়ে? কংগ্রেস ভবানীপুরে প্রার্থী না দিয়ে যেন বুঝিয়ে দিয়েছে, বাংলার এই উপনির্বাচনের থেকেও ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন তাদের কাছে অনেক বেশি গুরুত্বের।

 

Advertisement