'পুরভোটে লোক-অর্থ নেই ভারতীয় সার্কাস পার্টির,' জাগো বাংলায় প্রবীর

তৃণমূল ও বামেদের ঘোষণার পর পুরভোটে  প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে বিজেপি। জল্পনা শুরু হয়েছিল, ভোটের জন্য় প্রস্তুত ছিল না গেরুয়া শিবির।

Advertisement
'পুরভোটে লোক-অর্থ নেই ভারতীয় সার্কাস পার্টির,' জাগো বাংলায় প্রবীর  শুভেন্দু অধিকারী ও দিলীপ ঘোষ। - ফাইল ছবি।
হাইলাইটস
  • তৃণমূল ও বামেদের ঘোষণার পর পুরভোটে  প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে বিজেপি।
  • বিজেপিকে সার্কাস পার্টি বলে কটাক্ষ প্রবীরের।
  • প্রার্থীর নাম ঘোষণা তো হল কিন্তু প্রচারের নামার পর বিজেপির কঙ্কালসার চেহারা একেবারে বে-আব্রু হয়ে পড়ল, দাবি প্রবীরের।

কলকাতা পুরভোটে বিজেপির প্রচার থেকে প্রস্তুতিকে শীতের সার্কাসের সঙ্গে তুলনা করলেন প্রবীর ঘোষাল। যিনি বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে চার্টার্ড উড়ানে দিল্লি গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। সেই উত্তরপাড়ার গেরুয়া প্রার্থী তৃণমূলের দৈনিক মুখপত্র 'জাগো বাংলা'র সম্পাদকীয়তে লিখেছেন,''দলের নেতারাই সখেদে বলছেন, তাঁদের দল সার্কাস পার্টিতে পরিণত হয়েছে। কলকাতা পুরভোটের মরশুমে ছন্নছাড়া গেরুয়া পার্টি।'' 

শুরুতেই '২৭ বছর ধরে বিজেপি ও সঙ্ঘ করা' নেতাকে উদ্ধৃত করেছেন প্রবীর। নাম না নিয়ে লিখেছেন,''ওই নেতার আক্ষেপ, কোথায় পৌঁছেছি আমরা? লজ্জা হচ্ছে প্রাণের দলটার দুরবস্থা দেখে। বিজেপির কাণ্ডকারখানায় তো এখন সার্কাসের মজা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে।''    

তৃণমূল ও বামেদের পর পুরভোটে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে বিজেপি। জল্পনা শুরু হয়েছিল, ভোটের জন্য় প্রস্তুত ছিল না গেরুয়া শিবির। সম্পাদকীয়তে সে কথাই লিখেছেন প্রবীর। তাঁর বক্তব্য,''তৃণমূল, বামফ্রন্ট, এমনকি কংগ্রেসও দু-তিন মাস আগে থেকে পুরভোটের প্রস্তুতি নিয়েছিল। বিজেপি গা ঝাড়া দিল নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে। কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডে প্রার্থী খুঁজতে বিজেপি নেতানেত্রীদের জিভ বেরিয়ে যায়। ধরেবেঁধে রাজি করিয়ে কোনও মতে একটা প্রার্থী তালিকা তৈরি হয়।'' 

প্রার্থী তালিকা নিয়েও বিতর্কে জড়িয়েছে বিজেপি। দলের বৈঠকে সরাসরি ক্ষোভ উগরে দেন রাজ্যসভার সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্য়ায়। সেই প্রসঙ্গ তুলে প্রবীর লিখেছেন,''একটি ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থী বিরুদ্ধে বিরোধিতা করেন রূপা। শুধু তাই নয় প্রকাশ্যে তিনি জানিয়ে দেন, ওই ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থীর পক্ষে প্রচার করবেন। সার্কাসের এই খেলায় আরও চমক মজুত ছিল। রূপার সমর্থনে সরব হন রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি রাজকমল পাঠক। ৮৬ নম্বর ওয়ার্ডেরই বাসিন্দা তিনি। তাঁর অভিযোগ, প্রার্থী নিয়ে কোনও মতামত নেওয়া হয়নি। রূপা বা রাজকমলের বিরুদ্ধে বিজেপি নেতৃত্ব কোনও ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে জানা যায়নি।''   

আরও পড়ুন- বাংলা-বাঙালির দুর্গাপুজো UNESCO-র হেরিটেজ তালিকায়


পুরভোটের কমিটি গড়তে গিয়েও বিজেপি ল্য়াজেগোবরে হয়েছে বলে দাবি প্রবীরের। তিনি লিখেছেন,''কলকাতা ও হাওড়ার ভোট পরিচালনার জন্য় দুটি কমিটি করা হল। হাওড়ার কমিটি নিয়ে যা ঘটল তাকে সার্কাসের কোনও শোয়ের চিত্তাকর্ষক ইভেন্ট বললে বোধ হয় অত্যুক্তি হবে না। পরের দিন বিদ্রোহ করলেন বিজেপির হাওড়া জেলা সভাপতি সুরজিৎ সাহা। শুভেন্দু অধিকারীর সততা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। সুরজিৎকে বহিষ্কার করতে বাধ্য হল বিজেপি। কলকাতা পুরভোট পরিচালনার কমিটি নিয়েও যে নাটক হল তাতেও মজার খোরাক কম ছিল না। নিয়োগের চিঠি পেলেন না কমিটির সদস্যরা। দিন ১৫ পর আসল কমিটি ঘোষণা হল। ভোট পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব যাঁদের দেওয়া হল তাঁরা একত্রে কোনও বৈঠক করতে পেরেছেন কিনা বিজেপি কর্মকর্তা জানেন না। পাঁচজনের এই কমিটির দু'জন জানিয়ে দিয়েছেন, পারিবারিক বিয়ের অনুষ্ঠান থাকায় ব্যস্ত। সময় দিতে পারবেন না। প্রতাপ বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ইনচার্জ হওয়ার পর দলেরই একাংশ তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার ভুয়ো খবর প্রচার করে।'' 

Advertisement

আরও পড়ুন- বড়দিন-নিউ ইয়ারে ছাড় COVID বিধিতে, বার খোলা বাড়তি সময়েও

পুরভোটের প্রচারে দলের তরফে সাহায্য় মিলছে না বলেও অনুযোগ করেছেন বিজেপি প্রার্থীরা। প্রবীর লিখেছেন,''প্রার্থীর নাম ঘোষণা তো হল কিন্তু প্রচারের নামার পর বিজেপির কঙ্কালসার চেহারা একেবারে বে-আব্রু হয়ে পড়ল। প্রার্থীরা প্রচারে কোনও লোকলস্কর পাচ্ছেন না। কর্মী নেই, লোক নেই, প্রচার হবে কী করে! কোনও প্রার্থীর প্রচারে স্বামীর সঙ্গী কেবল নিজের স্ত্রী অথবা উল্টোটা। নয়তো পরিবারের দু-একজন সদস্য। অর্থাৎ দলীয় কর্মীদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সার্কাসের এই পর্বেও অপেক্ষা করছিল ক্লাইম্যাক্স। ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থীর অবস্থা আরও করুণ। তাঁর স্ত্রী ললিতা সরকার জোড়া ফুলের পতাকা হাতে প্রচারে নেমে পড়েছেন। এসব ঘটনার উল্লেখ করে দীর্ঘদিনের পোড়াখাওয়া বরিষ্ঠ আলোচ্য বিজেপি নেতা মন্তব্য করলেন, একে সার্কাস পার্টি ছাড়া আর কী বলবেন!'' 

আরও পড়ুন- 'বাংলায় দুর্গাপুজোর জন্য কোর্টে যেতে হয়,' খোঁচা দিলীপের

 

POST A COMMENT
Advertisement