নারী বাহিনীই ভবিষ্যতের ভরসা! দল সাজানোতে প্রমাণ রাখছেন মমতা

একুশের ভোটে ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’ স্লোগান তুলে বাজিমাত করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের স্লোগানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গত বিধানসভা ভোটে বেশি সংখ্যক মহিলা প্রার্থী দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনিতেই ঘাসফুল শিবিরের তরফে দাবি করা হয়, ভারতের কোনও দলেই তৃণমূলের মতো মহিলা প্রতিনিধি নেই। এবার দলের সাংগঠনিক ক্ষেত্রেও মেয়েদের ওপরেই ভরসা রাখতে চাইছেন তৃণমূলনেত্রী। তৃণমূলের বিগত কয়েকটি সিদ্ধান্ত দেখে অন্তত এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

Advertisement
নারী বাহিনীই ভরসা! দলে প্রমাণ রাখছেন মমতাএবার দলের সাংগঠনিক ক্ষেত্রেও মেয়েদের ওপরেই ভরসা রাখতে চাইছেন তৃণমূলনেত্রী
হাইলাইটস
  • একুশের ভোটে ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’ স্লোগান তুলে বাজিমাত করেছে তৃণমূল কংগ্রেস
  • এবার দলের সাংগঠনিক ক্ষেত্রেও মেয়েদের ওপরেই ভরসা রাখতে চাইছেন তৃণমূলনেত্রী
  • তৃণমূলের বিগত কয়েকটি সিদ্ধান্ত দেখে অন্তত এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল

একুশের ভোটে ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’ স্লোগান তুলে বাজিমাত করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের স্লোগানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গত বিধানসভা ভোটে বেশি সংখ্যক মহিলা প্রার্থী দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনিতেই ঘাসফুল শিবিরের তরফে দাবি করা হয়, ভারতের কোনও দলেই তৃণমূলের মতো মহিলা প্রতিনিধি নেই। এবার দলের সাংগঠনিক ক্ষেত্রেও মেয়েদের ওপরেই ভরসা রাখতে চাইছেন তৃণমূলনেত্রী। তৃণমূলের বিগত কয়েকটি সিদ্ধান্ত দেখে অন্তত এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

 

আরও পড়ুন:  সামনেই পূর্ণিমা, ইলিশ এবার ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা দিতে পারে!

অভিষেকের আসনে সায়নী
গত ৫ জুন  তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করা হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ফলে  যুব তৃণমূলের সভাপতির পদ ছাড়তে হয় ডায়মন্ড হারবারের সাংসদকে। আর অভিষেকের জায়গায় যুবর দায়িত্বে আনা হয় অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকে।  ৬ মাসও হয়নি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন, তার মধ্যেই অভিষেকের জুতোয় পা গলালেন সায়নী। এটা তাৎপূর্যপূর্ণ বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।

 

 

তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তিকা
একুশের ভোটের আগে আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগ দেন টলিউডের আরেক অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচনে জিততে না পারলেও ভোট পরবর্তী সময়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছেন সায়ন্তিকা। দলের রাজ্য সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে তাঁকে।

 

 

তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতে শতাব্দী
চলতি বছরের জানুয়ারিতে তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয় বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়কে। তারপর থেকে দলের সাংগঠনিক কাজও সামলাচ্ছেন তিনি।

 

 

 

আরও পড়ুন: মমতা-অটল সম্পর্ক কেন মনে রাখার মতো?

সুস্মিতা দেবকে দলে নেওয়া তাৎপর্যপূর্ণ
সম্প্রতি কংগ্রেস ত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন অসমের প্রাক্তন সাংসদ সুস্মিতা দেব। ত্রিপুরার মত অসমেও সংগঠন মজবুত করার চেষ্টা চালাচ্ছে তৃণমূল। আর এই কাজে শিলচরের প্রাক্তন সাংসদের ওপরেই এবার ভরসা রাখতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  কংগ্রেসের সর্বভারতীয় মহিলা সংগঠনের শীর্ষে থেকে দায়িত্ব সামলানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে সুস্মিতার। তাছাড়া সন্তোষ মোহন দেবের কন্যা হিসেবেও দেশের রাজনীতিতে সুস্মিতার একটা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।তাই মহিলা মুখ হিসেবে অসমে সুস্মিতা দেবই হতে পারেন তৃণমূলের ট্রাম্প কার্ড।

Advertisement

 

 

জেলা সংগঠনে মহিলাদের গুরুত্ব
গত সোমবার তৃণমূলের তরপে সাংগঠনিক রদবদলের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে জেলা সংগঠনে মহিলাদের ব্যাপক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পাহাড় থেকে বনগাঁ পর্যন্ত হাফ ডজন জেলার সভাপতির পদে বসানো হয়েছে মহিলাদের। দার্জিলিং পার্বত্য শাখার জেলা সভাপতি হয়েছেন রাজ্যসভার সাংসদ শান্তা ছেত্রী। দার্জিলিং সমতলের জেলা সভাপতি করা হয়েছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের কন্যা পাপিয়া ঘোষকে। জলপাইগুড়ির জেলা সভাপতি হলেন মহুয়া গোপ। বহরমপুর- মুর্শিদাবাদের সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন শাওনি সিংহ রায়। রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতির পদে বসানো হয়েছে রত্না ঘোষ করকে। উত্তর ২৪ পরগনাকে ৪টি সাংগঠনিক জেলায় ভাঙা হয়েছে। তাতে দুটি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি হয়েছেন মহিলারা। বারাসতের দায়িত্ব পেয়েছেন আশানি মুখোপাধ্যায় এবং বনগাঁর আলোরানি সরকার। 

নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার সময় অন্যান্য দলের তুলনায় তৃণমূলের মহিলাদের সংখ্যা বরাবরই বেশি থাকে। ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে  ৩১ জন মহিলা প্রার্থী দিয়েছিলেন মমতা। ২০১৬ সালে রাজ্যের  ২৯৪ টি আসনে তৃণমূলের মহিলা প্রার্থী ছিলেন ৪৫ জন। আর গত ভোটে ২৯১ টি আসনে ৫০ জন মহিলাকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। গত লোকসভা ভোটে তৃণমূলের মোট প্রার্থী তালিকার ৪১ শতাংশ ছিল মহিলা প্রার্থী। এটা মানতেই হবে রাজনৈতিক দলগুলিতে মহিলাদের প্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে তৃণমূল অন্যান্যদের থেকে অনেক এগিয়ে। মহিলাদের জন্য জাতীয় ও রাজ্য আইনসভায় ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণের কথা বলা হলেও এখনও তা বাস্তবায়িত করা যায়নি। অনেকেই বলেন, আইন নয় বরং মানসিকতার কারণেই তা সম্ভব হয়নি। সেই দিক থেকে অনেকটা এগিয়ে তৃণমূলনেত্রী। দোলা সেন, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, শশী পাঁজা, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মহিলা ব্রিগেড বরাবরই শক্তিশালী। এবার জেলার সাংগঠনিক স্তরেও সেই প্রমিলা বাহিনীর ওপরই যেন ভরসা রাখতে চাইলেন দলনেত্রী।


 

POST A COMMENT
Advertisement