ঘটা করে যাত্রা শুরু করেছে হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। শুক্রবার আনুষ্ঠানিক সূচনার পর রবিবার, নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে এই ট্রেন যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরু করেছে। প্রথম দিনেই বেশ ভিড় হয়েছে ট্রেনে। অনেকেই আসলে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে চেয়েছিলেন। তবে সেই অভিজ্ঞতা সুখের হল না। উঠল পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন। খাবারের মান থেকে শৌচালয়- একের পর এক অভিযোগ যাত্রীদের। এমনকি বিনা টিকিটে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে যাত্রী উঠে পড়েছেন বলেও অভিযোগ।
রবিবার ভোরে হাওড়া থেকে যাত্রা শুরু করে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। বেলা ১টা ২৫ মিনিটে নিউ জলপাইগুড়িতে পৌঁছনোর কথা থাকলেও তিন মিনিট দেরিতে পৌঁছয়। স্টেশনে নেমেই যাত্রীরা খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ব্রেকফাস্টে লুচি-আলুরদম, দুপুরের ভাত, ডাল এত ঠান্ডা দেওয়া হয়েছিল যে খাওয়া যাচ্ছিল না। রাতে ট্রেন হাওড়া পৌঁছনোর পরও একই অভিযোগ ওঠে। দেশের প্রিমিয়াম ট্রেন অথচ এই পরিষেবা!
এনজেপি পৌঁছে পূর্ব মেদিনীপুরের রুমা দাস বলেন,'খাবারের মান ভাল ছিল না। দুপুরে ভাত, ডাল, চিকেন কষা নিয়েছিলাম। ভাত-ডাল পুরো ঠান্ডা। এই শীতে খাবার মুখে তোলা যাচ্ছিল না।'আর এক যাত্রীর অভিযোগ,'খাবারে নন-ভেজ মেনুতে ফিশ ফিঙ্গার থাকলেও মেলেনি। বিকেলের স্ন্যাক্সে রসগোল্লা, সন্দেশ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শুধু একটা করে মিষ্টি দিয়েছে।' হাওড়া স্টেশনে এক যাত্রী বলেন, 'খাবারের মান জঘন্য। অনেকে নিজের হাতে করে ট্রে-তে খাবার আনতে হয়েছে।।' এক যাত্রীর ক্ষোভ,'ডাবের জল দিয়ে স্বাগত জানানোর কথা থাকলেও দেওয়া হয়নি।'
শুধু খাবার নয় শৌচালয় নিয়েও ভুরি ভুরি অভিযোগ যাত্রীদের। হাওড়া স্টেশনে নেমে এক যাত্রী বলেন,'মালদায় উঠেছিলাম। দেখি নোংরা উপচে পড়ছে ইন্ডিয়ান টয়লেটে। রেলের কর্মীদের ডাকি। ঠিক হয়। তার পর যে-ই কে সেই। কাজ করেনি দরজার সেন্সরও। যাত্রীদেরর দাবি,'দরজার সেন্সর কাজ করছিল না। হাত দিয়ে ঠেলে দরজা লাগাতে হয়েছে।' আর এক যাত্রীর বক্তব্য, 'এটা কি পশ্চিমবঙ্গের জন্য ট্রেন চালু করা হয়েছে? ট্রেনের কর্মীরা বাংলা ভাষাই বুঝতে পারছেন না।'আর এক যাত্রীর অভিযোগ, বিনা ট্রেনে অনেকে ট্রেনে উঠেছিলেন। আরপিএফ-কে জানিয়েও লাভ হয়নি।
রেল কী জানিয়েছে? আইআরসিটিসি-র কর্তা জাফর আজম জানান,সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে যথাবিহিত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বলেন, 'আমাদের কাছে লিখিতভাবে কোনও অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইআরসিটিসি’র কাছে জানতে চাইব। এই ধরনের ট্রেনে পরিষেবা নিয়ে কোনও অভিযোগ থাকুক, তা আমরা চাই না।'
বলে রাখি,আপ-ডাউনে দুই শ্রেণি মিলিয়ে ১১২৮টি করে আসনের একটিও ফাঁকা ছিল না। তবে প্রথম দিনের মতো ক্রেজ নেই বাকি দিনগুলিতে। সোম থেকে শুক্রবার পর্যন্ত বুকিং তুলনায় কম। অনেক আসনই ফাঁকা।
আরও পড়ুন- যাত্রা শুরু বন্দে ভারতের, প্রথম দিনেই সুপারহিট সেমি হাইস্পিড ট্রেন