বহু মানুষই কফি দিয়েই তাদের দিন শুরু করেন। কারণ এক কাপ কফি পান করলে শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি আসে এবং সক্রিয় বোধ করতে শুরু করেন। এমন অনেকেই আছেন যারা সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরও ক্লান্ত ও অলস বোধ করেন। এরপর ঘুম কাটাতে কফি খান। এক চুমুক কফিতে ঘুম কেটে যায়। আবার অনেকেই আছেন যাদের কফি ছাড়া দিন সম্পূর্ণ হয় না। মাথা ব্যথার সময়ও কফির আশ্রয় নেয় বহু ব্যক্তি। কিন্তু যদি সেই কফি আসল না হয়?
সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, বাজারে ভেজাল বা নকল কফি বিক্রি হচ্ছে। এই কফি দেখতে কফির মতো এবং গন্ধযুক্ত হতে পারে তবে এতে সস্তা এবং ক্ষতিকারক উপাদান যোগ করা হয় যা, আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। জানুন কীভাবে নকল কফি শনাক্ত করবেন এবং কীভাবে আপনি এটি এড়াতে পারবেন।
ভেজাল কফি
ভেজাল কফি বলতে এমন কফি বোঝায় যা পরিমাণ বাড়ানোর জন্য সস্তা বা ক্ষতিকারক পদার্থের সাথে মিশ্রিত করা হয়েছে। এই সংযোজনগুলি আসল কফি নয়, তবে এগুলি দেখতে এবং গন্ধে খুব মিল, যা পার্থক্য করা কঠিন করে তোলে। তেঁতুলের বীজের গুঁড়ো, খেজুরের বীজের গুঁড়ো, ব্যবহৃত কফির গুঁড়ো, কর্নস্টার্চ, এমনকী পোড়া চিনির গুঁড়ো মিশিয়ে এই কফি পাউডার তৈরি করা হয়। ভেজাল হওয়া সত্ত্বেও, কফির স্বাদ পরিবর্তন হয় না। তবে এগুলি প্রাকৃতিক নয় এবং নিয়মিত খেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
ভেজাল কফি পান করলে কী ক্ষতি হয়?
খাদ্য ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ভেজাল কফি আসল কফির মতো পুষ্টি সরবরাহ করে না। এতে যোগ করা নকল জিনিস অনেক স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। নিয়মিত ভেজাল কফি পান করলে পেটের সমস্যা হতে পারে, আপনার লিভার বা কিডনির ক্ষতি হতে পারে। সেই সঙ্গে আপনার হজমশক্তিও নষ্ট হতে পারে। নিয়মিত এই ধরনের কফি পান করলে, শরীরে গুরুতর রোগ হতে পারে।
কীভাবে পরীক্ষা করবেন কফি আসল না নকল?
এখন প্রশ্ন উঠছে যে আপনার কফিতে ভেজাল আছে কিনা, তা কীভাবে পরীক্ষা করবেন? জেনে অবাক হবেন যে, আপনি বাড়িতে একটি সাধারণ পরীক্ষা করে কফি আসল না নকল তা জানতে পারবেন। এক গ্লাসে জল নিন এবং তাতে এক চামচ কফি পাউডার যোগ করুন। একেবারেই নাড়াচাড়া করবেন না। যদি কফি পাউডার উপরে ভেসে ওঠে তবে তা আসল। যদি পাউডারটি দ্রুত স্থির হয়ে যায় বা রং ছেড়ে দেয় তবে এটি ভেজাল হতে পারে।
ভেজাল কফি কীভাবে এড়ানো যায়?
নকল কফি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে, সর্বদা একটি বিশ্বস্ত ব্র্যান্ড বা বিশ্বস্ত দোকান থেকে আপনার কফি পাউডার কিনুন। কেনার আগে প্যাকেজিং এবং মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ পরীক্ষা করুন। সম্ভব হলে কফি পান করার আগে জল পরীক্ষা করে নিন। এর পাশাপাশি, খুব সস্তা কফি বা খোলা বা ব্র্যান্ডবিহীন প্যাকেটে বিক্রি হওয়া কফি কেনা এড়িয়ে চলুন, কারণ এতে ভেজালের সম্ভাবনা বেশি।