ডায়াবেটিস বর্তমান সময়ের দ্রুত বর্ধনশীল রোগগুলির মধ্যে একটি। ভারতে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে, বিশেষ করে গত দশকে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বয়স বৃদ্ধি এবং পারিবারিক ইতিহাসের কারণে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কিন্তু ভুল খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাপনের অভ্যাসও এই রোগ বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। আপনি কী খাচ্ছেন এবং কোন ধরনের জীবনযাপন করছেন, তা আপনার স্বাস্থ্যের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। অবাক করা বিষয় হল, প্রতিদিনের ছোট অভ্যাসও রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়াতে পারে।
ভারতে ডায়াবেটিস এবং প্রি-ডায়াবেটিসের সমস্যা দ্রুত বাড়ছে। এর প্রধান কারণ খারাপ জীবনধারা। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করার জন্য, চিকিৎসকরা সঠিক খাদ্য বজায় রাখার পরামর্শ দেন। একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে, আমন্ড গ্লুকোজ বিপাককে উন্নত করে। ফলে প্রি-ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে।
এই গবেষণাটি ১৬ থেকে ২৫ বছর বয়সী মুম্বইয়ের কিছু যুবকদের উপর পরিচালিত হয়েছিল, যাদের প্রি-ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা ছিল। পরীক্ষায়, বাদাম কীভাবে রক্তের গ্লুকোজ, লিপিড, ইনসুলিন এবং প্রদাহ বাড়ায় এমন যৌগগুলিকে প্রভাবিত করে তা জানার চেষ্টা করা হয়েছিল। ২৭৫ জনের উপর একটি পৃথক ট্রায়াল পরিচালিত হয়েছিল, যাদের গ্লুকোজের মাত্রা দুর্বল ছিল অর্থাৎ এই লোকেরাও প্রি-ডায়াবেটিক ছিল।
গবেষণার শুরুতে এই স্বেচ্ছাসেবকদের উচ্চতা, ওজন, কোমর এবং নিতম্বের মাপ নেওয়া হয়েছিল। এছাড়া তাদের রক্তের নমুনাও নেওয়া হয়েছিল। তাদের গ্লুকোজ সহনশীলতা পরীক্ষাও করা হয় এবং লিপিড প্রোফাইল মূল্যায়ন করা হয়েছিল। এক দলকে তাদের ডায়েটের সঙ্গে কিছু দিনের জন্য বেশি পরিমাণে আমন্ড দেওয়া হয়েছিল, অন্য দলকে তাদের খাবারের সঙ্গে অল্প পরিমাণে আমন্ড দেওয়া হয়েছিল।
সমীক্ষা অনুসারে, যে সমস্ত স্বেচ্ছাসেবক ভাল পরিমাণে আমন্ড খেয়েছিলেন তাদের মোট এবং খারাপ কোলেস্টেরল হ্রাস পেয়েছে যখন ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা অর্থাৎ এইচডিএল ভাল পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমন্ড লিপোপ্রোটিন বা খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং ভাল কোলেস্টেরল বাড়ায়। এতে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
যারা বেশি পরিমাণে আমন্ড খেয়েছেন, তাদের ফাস্টিংয়ের গ্লুকোজ কমে গেছে, তবে অন্য গ্রুপের এটি বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রি-ডায়াবেটিস পর্যায়েই ব্লাড সুগারের উন্নতি ঘটিয়ে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা যায়। আমন্ড ডায়াবেটিসের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমন্ডে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে যা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। ডায়াবেটিস রোগীদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি থাকে এবং আমন্ড এই ঝুঁকি কমায়।
কখন খেলে সবচেয়ে উপকার?
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে আমন্ড খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। বেশি পুষ্টি পেতে হলে সারা রাত জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেতে হবে। আমন্ড স্ন্যাকস হিসেবেও খাওয়া যেতে পারে।