প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে নিমপাতার গুণের কথা স্পষ্টভাবে বলা আছে। সকালে খালি পেটে নিমপাতা চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস বহুদিন ধরেই পরিচিত। যদিও এর তেতো স্বাদ অনেকেরই অপছন্দ, তবু নিয়ম করে খেলে শরীরকে বহু সমস্যা থেকে রক্ষা করা যায়।
নিমপাতার মধ্যে থাকে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ভাইরাল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল গুণ। প্রতিদিন খালি পেটে এই পাতা চিবোলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ে। বিশেষ করে ঋতু পরিবর্তনের সময় সর্দি-কাশি বা ভাইরাল সংক্রমণ থেকে বাঁচার ক্ষেত্রে এটি কার্যকর।
নিমপাতা শরীর থেকে টক্সিন বার করে দেয়। এর ফলে ব্রণ, চুলকানি বা অ্যালার্জির সমস্যা কমে যায়। ত্বক হয়ে ওঠে পরিষ্কার ও উজ্জ্বল। অনেকেই মুখে ব্রণ কমাতে নিমপাতা বেটে ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করেন।
প্রাকৃতিক ডিটক্সিফায়ার হিসেবে কাজ করে নিমপাতা। প্রতিদিন খেলে রক্ত পরিশোধন হয়। ফলে শরীরে ক্ষতিকর পদার্থ জমে না এবং ত্বকে সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কাও কমে।
গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, নিমপাতা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস আক্রান্তদের ক্ষেত্রে এটি বিশেষভাবে কার্যকর। তবে কারও যদি ডায়াবেটিস থাকে, চিকিৎসকের অনুমতি নিয়ে তবেই এই পাতা খাওয়া উচিত।
নিমপাতার তেতো স্বাদ হজমে সাহায্য করে। পাকস্থলীতে পাচন রস তৈরি হয় বেশি, যার ফলে গ্যাস-অম্বলের সমস্যা কমে যায়।
নিমপাতার ব্যাকটেরিয়ানাশক গুণ দাঁত ও মাড়ির জন্য ভালো। মুখের দুর্গন্ধ কমে এবং মাড়ি হয় মজবুত। তাই অনেক টুথপেস্টেই নিম ব্যবহার করা হয়।
সকালে উঠে খালি পেটে ৪-৫টি পরিষ্কার নিমপাতা ভালো করে ধুয়ে নিন। তারপর এগুলো ভালোভাবে চিবিয়ে খেতে হবে। কেউ কেউ এগুলো বেটে জল মিশিয়ে খান। প্রথমে তেতো লাগলেও নিয়মিত খেলে অভ্যেস হয়ে যায়।
যাঁরা গর্ভবতী বা যাঁদের শরীরে নিমপাতায় অ্যালার্জির প্রবণতা আছে, তাঁদের চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে তবেই এই অভ্যাস শুরু করা উচিত।
প্রতিদিন সকালে নিমপাতা খাওয়ার অভ্যাস শরীরকে সুস্থ রাখে, রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। একে বলা যেতে পারে প্রকৃতির দেওয়া এক দুর্দান্ত উপহার। এখনই এই অভ্যাস শুরু করুন।