যখন রক্ত জমাট বাঁধে, তরল থেকে জেলে পরিবর্তিত হতে শুরু করে, যা একটি জমাট আকার ধারণ করে। একে থ্রম্বোসিসও বলা হয়। আঘাত বা কাটার ক্ষেত্রে রক্ত জমাট বাঁধা প্রয়োজন কারণ এটি শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ রোধ করে। কিন্তু যখন এই জমাট বাঁধা শরীরের অভ্যন্তরে শিরায় ঘটতে শুরু করে, তখন তা বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। শিরায় রক্ত জমাট বাঁধা বিপজ্জনক। এ কারণে হার্ট অ্যাটাক বা ব্রেন স্ট্রোক হতে পারে।
রক্ত জমাট বাঁধার অনেক ধরনের আছে। রক্ত জমাট বাঁধা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পায়ের নীচের অংশে দেখা যায়। তবে বাহু, হার্ট, ফুসফুস, মস্তিষ্ক, পেট এবং শরীরের অন্যান্য অংশেও হতে পারে। এছাড়া শিরা ও ধমনীতেও রক্ত জমাট বাঁধতে পারে।
সেরিব্রাল ভেনাস সাইনাস থ্রম্বোসিস (CVST/ Cerebral Venous Sinus Thrombosis) হল এক ধরনের রক্তের জমাট বাঁধা। মস্তিষ্কের সেরিব্রাল ভেনাস সাইনাস অংশে এই ধরনের রক্ত জমাট বাঁধে। এর মধ্যে রয়েছে মাথাব্যথা, দুর্বল দৃষ্টি এবং স্ট্রোক ইত্যাদি উপসর্গ। মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, যার কারণে ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
শিরা ও ধমনী দিয়ে শরীরে রক্ত সঞ্চালিত হয়। ধমনীতে যে রক্ত জমাট বাঁধে তাকে ধমনীতে জমাট বাঁধা বলে। ধমনী জমাটে ব্যাথা এবং পক্ষাঘাত হতে পারে। এ কারণে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকও হতে পারে। শিরায় রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়াকে শিরায় জমাট বাঁধা বলে। এই ধরনের জমাট বাঁধা ধীরে ধীরে বাড়ে যা মারাত্মকও হতে পারে।
মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধাকে স্ট্রোকও বলা হয়। মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে হঠাৎ ও প্রচণ্ড মাথাব্যথা, পক্ষাঘাতসহ আরও অনেক উপসর্গ দেখা দিতে পারে। মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, যার কারণে ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
বিভিন্ন রক্ত জমাট বেঁধে বিভিন্ন উপসর্গ থাকে। এটা নির্ভর করে রক্ত কোথায় জমাট বেঁধেছে এবং এর আকার কেমন। শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে। উপসর্গের মধ্যে থরথর করে কাঁপা বা খিঁচুনি, ব্যথা, ফুলে যাওয়া, হাত-পা লাল হয়ে যাওয়া, হঠাৎ করে শ্বাসকষ্ট, প্রচণ্ড বুকে ব্যথা এবং কাশি থেকে রক্ত পড়ার মতো সমস্যা হতে পারে পারে।