গ্রীষ্মকাল মানেই রসালো আমের মরসুম। আম খেতে ভালোবাসেন না, এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া ভার। তবে একটা বিষয় অনেকেই জানেন না। ভাত খাওয়ার আগে আম খাবেন, না পরে? অনেকেই এই নিয়ে দ্বিধায় থাকেন। কেউ বলেন খালি পেটে আম খাওয়া উচিত নয়, আবার কেউ বলেন খালি পেটে খেলেই আসল পুষ্টিটা পাবেন। আসুন দেখে নিই পুষ্টিবিদরা কী বলছেন।
পুষ্টিবিদদের মতে, খালি পেটে কিংবা খাবারের ঠিক আগে আম খাওয়ার একটা সুবিধা রয়েছে। আমে থাকা প্রাকৃতিক চিনি ও ফাইবার শরীরে দ্রুত শক্তি দেয়। তাই দুপুরে ভাত খাওয়ার আগে যদি এক-দু’ফালি পাকা আম খাওয়া যায়, তাহলে হজমশক্তি বাড়ে। এতে ভরপেট খাওয়ার প্রবণতা কমে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করতে পারে।
তবে যদি কেউ ডায়াবেটিসে ভুগে থাকেন, তবে খালি পেটে আম না খাওয়াই ভালো। কারণ এতে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে।
অনেকেই মনে করেন, খাওয়ার পরে আম খেলে হজমে সমস্যা হয়। তবে এই ধারণা পুরোপুরি ঠিক নয়। পাকা আমে থাকা ফাইবার হজমে সহায়তা করে। বিশেষ করে, যাঁরা খাওয়ার পরে কিছুটা মিষ্টি না খেলে তৃপ্তি পান না, তাঁদের জন্য আম একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে। তবে বেশি পরিমাণে আম খেলে গ্যাস, অম্বল বা হজমের গোলমাল দেখা দিতে পারে।
তাই খাওয়ার পরে এক বা দুই ফালি আম খেলেও সমস্যা নেই, তবে অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়।
পুষ্টিবিদদের মতে, আম খাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় দুপুরবেলা। খালি পেটে নয়, হালকা খাবারের পর বা দুপুরের খাওয়ার কিছু সময় আগে আম খাওয়া যেতে পারে। এতে শরীর ভালোভাবে প্রাকৃতিক চিনিকে গ্রহণ করে এবং ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকিও কমে।
রাতের দিকে আম খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে বলা হয়, কারণ রাতে শর্করার মাত্রা বাড়লে তা সহজে পচন হতে পারে না, যা ওজন ও হজমে প্রভাব ফেলতে পারে।
যদি ডায়াবেটিস না থাকে এবং হজমশক্তি ভালো হয়, তাহলে খাওয়ার আগে আম খাওয়া উপকারী।
খাওয়ার পরে কম পরিমাণে আম খেলেও কোনও সমস্যা হয় না, বরং এটি মিষ্টির চেয়ে স্বাস্থ্যকর বিকল্প।
অতিরিক্ত না খেয়ে পরিমিত আম খেলেই উপকার পাবেন সবচেয়ে বেশি।
এই গ্রীষ্মে আম খান, তবে বুঝে ও বেছে। স্বাস্থ্য থাকুক ঠিক, আর আমের মজা চলুক মন ভরিয়ে!