শরীরে আয়রনের অভাবে রক্তশূন্যতার ঝুঁকি বেড়ে যায়। বহু মানুষ রক্তশূন্যতার সমস্যাকে সাধারণ সমস্যা মনে করে উপেক্ষা করে। কিন্তু সময় মতো চিকিৎসা না করালে তা মারাত্মক সমস্যায় পরিণত হতে পারে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, যখন রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম হয়ে যায়, তখন রক্তস্বল্পতার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এটি মূলত রক্তশূন্যতার কারণ। এছাড়া মহিলাদের ঋতুস্রাব ও গর্ভাবস্থার কারণে রক্তশূন্যতার সমস্যাও বেশি দেখা যায়।
আয়রনের ঘাটতির কারণে শরীরে নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। বিষণ্ণতা, মাথা ঘোরা, দুর্বলতা বোধ, শ্বাস নিতে অসুবিধা, ত্বক হলুদ হওয়াও এর লক্ষণ। এছাড়া রক্তশূন্যতার কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হতে শুরু করে, যার কারণে শরীরে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
হিমোগ্লোবিনে আয়রনের পরিমাণ ঠিক রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে পুরো শরীর পুষ্টি পায়। আয়রনের ঘাটতি মেটাতে খাবারে কিছু পরিবর্তন আনা যেতে পারে। জানুন কিছু সুপারফুডের কথা, যা ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করলে আপনি অনেকাংশে অ্যানিমিয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
১৫০ গ্রাম ব্রকলিতে এক মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। এছাড়াও এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়, যা আয়রনকে আরও ভাল ভাবে শোষণ করতে সাহায্য করে।
পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। প্রায় ১০০ গ্রাম পালং শাকে ২.৭ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। শরীরে আয়রনের ঘাটতি সহজেই মেটানো যায় এটি খেলে। এছাড়াও অন্যান্য শাকেও প্রচুর আয়রন থাকে।
রেড মিটে আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকে। ১০০ গ্রাম গরুর মাংসে ২.৭ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। রেড মিট পরিমিতভাবে খাওয়া উচিত। অত্যধিক লাল মাংস খেলে অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে।
আয়রনের পাশাপাশি কিনোয়াতে উচ্চ পরিমাণে প্রোটিনও পাওয়া যায়। এটি গ্লুটেন মুক্ত। ১৮৫ গ্রাম কিনোয়ায় ২.৮ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে।
ডাল, শিম সহ নানা সবজিতে প্রচুর আয়রন রয়েছে। একে 'সুপার ফুড কী' বলা হয়। ১৯৮ গ্রাম রান্না করা মসুর ডালে ৬.৬ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। মটরশুঁটিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় এগুলি শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে এবং ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
হ্যাডক, ম্যাকেরেল এবং সার্ডিন সহ টুনা মাছেও প্রচুর আয়রন রয়েছে। একটি ৮৫ গ্রাম টিনের টুনাতে ১.৪ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে।
চা, কফি, দুধ এবং দুগ্ধজাত দ্রব্য শরীরে আয়রন শোষণে বাধা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে আয়রনের ঘাটতি দূর করতে এগুলি খুব অল্প পরিমাণে খাওয়া উচিত।