পুজোর মধ্যে জমিয়ে খাওয়া দাওয়া হবে সকলেরই। অনেক সময়েই হয়তো স্বাস্থ্য সচেতনতার কথা খেয়াল থাকবে না। কিন্তু যদি ডায়াবেটিস থাকে তবে কিছু কিছু বিষয় মেনে চলতেই হবে রোগীদের। চিকিৎসকের কোন কোন পরামর্শ মানলে ৩ মাসে সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকবে?
বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে রক্তে শর্করা পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া অর্থাৎ সুগার বেড়ে যাওয়ার সমস্যা ঘরে ঘরে। তবে যদি ব্লাড সুগারকে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন তবে এর সামগ্রিক ভাল প্রভাব পড়ে শরীরে।
হার্ট অ্যাটাক, কিডনি ফেলিওর, চোখ এবং পায়ের নানা সমস্যা সহ একাধিক রোগের নেপথ্যে থাকে এই ডায়াবেটিস। ফলে শরীর সুস্থ রাখতে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি।
ডা: সুধাংশু রায় নিজের সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্লা সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখার একাধিক উপায় বাতলেছেন। যে নিয়মগুলি নিত্যদিনের জীবনে মেনে চলা এমন কোনও কঠিন কাজ নয়।
ডা: সুধাংশু রায় এ-ও জানিয়েছেন, ডায়াবেটিস দীর্ঘ সময় পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে লগাতার ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত তাঁর দেওয়া টোটকা মেনে চলতে হবে। তবেই নিজের শরীরে তফাৎ বুঝতে পারা যাবে।
ডা: সুধাংশু রায়ের প্রথম পরামর্শ, চিনি এবং কার্বহাইড্রেট থেকে দূরে থাকতে হবে। পাউরুটি এবং ভাত কম খাওয়াই শ্রেয়। একটি রিপোর্ট অনুসারে, লো কার্ব ডায়েট করলে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে। ওজন কম হয় এবং ইনসুলিনের প্রয়োজনও কমে আসে।
বিশিষ্ট এই চিকিৎসক আরও জানিয়েছেন, প্রতিদিন দারচিনি খাওয়া উপকারী। সকালের চায়ের সঙ্গে আধ চামচ দারচিনি মিশিয়ে খেতে পারেন ডায়েবেটিস রোগীরা। ফল মিলবে হাতেনাতে। দীর্ঘদিন পর্যন্ত ব্লাড সুগার লেভেল স্বাভাবিক থাকবে।
ব্লড সুগারকে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে কী করতে হবে, সে পরামর্শও দিয়েছেন ডা: সুধাংশু রায়। খাবার আগে ফাইবারে ভরপুর স্যালাড খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন এই ডাক্তার। তারপর লো কার্ব খাবার খেতে বলছেন তিনি।
একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ভাতের আগে স্যালাড খেলে ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকে। ডা: সুধাংশু রায়ও সে কারণেই খাবারের আগে স্যালাড খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডাক্তারের বক্তব্য, খাবার খাওয়ার পর ২০ মিনিট পর্যন্ত হাঁটা আবশ্যক। যা শরীরের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী। এতে খাবারের পর ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকে, আচমকা বেড়ে যায় না।
২০২২ সালের একটি গবেষণা রিপোর্ট বলচে, খাবার খাওয়ার পর ৩০ মিনিট দ্রুতগতিতে হাঁটলে সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকে একজন প্রাপ্তবয়স্কর।
ডা: সুধাংশু রায় সপ্তাহে ৩ দিন করোলার রস খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। ২০১৭ সালের একটি গবেষণা রিপোর্ট অনুযায়ী, করোলার রস টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ব্লাড সুগার দ্রুত কমাতে অত্যন্ত উপকারী। এর গুণ শরীরে মাত্র ৯০ মিনিটের মধ্যে প্রভাব ফেলতে শুরু করে।
এছাড়াও একবারে বেশি খাবার খেয়ে নেওয়ার বদলে বারবার করে অল্প অল্প খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। চিনির বদলে স্টিভিয়া কিংবা মঙ্ক ফ্টুট খাওয়ার পরামর্শ। মানসিক ক্লান্তি দূর করতে হেলদি লাইফস্টাইল মেনে চলা অত্যন্ত আবশ্যক বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা।