পটকা মাছ খেয়ে কিছুদিন আগে বাংলাদেশে একই পরিবারের একাধিক মৃত্যু হয়েছে। কীভাবে খেতে হয় না জেনে খেলে মৃত্যু অবিধারিত।
এ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় সচেতনতা তৈরি করা হচ্ছে। তবু অসচেতন হচ্ছে মানুষ। তারা ভুল পদ্ধতিতে পটকা মাছ খেয়েই মারা যাচ্ছে।
পটকা মাছ জাপানে অত্যন্ত জনপ্রিয়। সেদেশে দামি, সুস্বাদু ও অভিজাত শ্রেণির মাছ হিসাবে এর আলাদা কদর রয়েছে। পটকা মাছ তাদের ঐতিহ্যের অংশ।
চিনারা যেমন ড্রাগনকে সৌভাগ্যের প্রতীক বলে মনে করে, জাপানিে তেমনই বহু জাগায় পটকা মাছকে কাজের উদ্যম সৃষ্টির প্রতীক হিসেবে মনে করা হয়।
জাপানিরা বিস্তর গবেষণা চালিয়ে পটকা মাছ কখন, কীভাবে খাওয়া উচিত তা জানতে পেরে গিয়েছে। তাই সবচেয়ে বেশি খাওয়া হলেও তাদের দেশে পটকা মাছ খেয়ে কদাচিৎ কেউ মরে।
পটকা মাছের নানাবিধ খাবারের মেনু তৈরির জন্য তাদের দেশে আলাদা কুকিং কোর্স রয়েছে। লাইসেন্সধারী ওই সমস্ত সেফ-রাই পটকা মাছ তৈরির অনুমতি পায়।
ভারত-বাংলাদেশে সাধারণত ২ ধরণের পটকা মাছ পাওয়া যায়। মিঠাজলের পটকা ও নোনাজলের পটকা। মিষ্টি জলের পটকা আকারে সামুদ্রিক পটকার চেয়ে আকারে অনেক ছোট। ভারতে এই মাছ কিন্তু বিশেষ কেউ খায় না। তারা জানে এ মাছে বিষ। তবে বাংলাদেশে এ মাছ ধরাও হয়, বিক্রিও হয়, খাওয়াও হয়। কিন্তু কীভাবে খেলে প্রাণ যাবে না, তা প্রায় কেউ জানেই না।
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রজননের সময় পটকা মাছের চামড়া ও গোনাডে মারাত্মক বিষ থাকে। পটকা মাছের বিষ, প্রজাতি, স্থান ও ঋতুভেদে আলাদা হতে পারে। অর্থাৎ, বাংলাদেশে পটকা মাছের যে প্রজাতিটি মারাত্মক বিষাক্ত, জাপানে সেটা ততটা বিষাক্ত নাও হতে পারে ।
আবার, বৈশাখ মাসে যে পটকা মাছটি বিষাক্ত, কার্তিক মাসে তাতে ততটা বিষ নাও থাকতে পারে। তাই সময় ও ঋতু কখনও পটকা খাবেন না না জানলে মৃত্যু হতে পারে।
উপরন্তু, পটকার মধ্যে কোনটি বিষাক্ত এবং কোনটি বিষাক্ত নয় এবং কোনটি কোন সময়ে বিষাক্ত এ ধরণের যথেষ্ঠ তথ্য আমাদের জানা নেই। স্থানভেদে বিষাক্ততার তারতম্য কতটুকু তাও আমরা জানি না। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে পটকা মাছ খাওয়া থেকে আমাদের বিরত থাকাই উত্তম।
পটকা মাছের বিষ সায়নাইড(Cyanide) এর চেয়েও অধিকতর বিষাক্ত। গবেষণায় দেখা গেছে, কোনও কোনও সামুদ্রিক পটকা প্রতি গ্রামে ৪ হাজার এমইউ(MU) পর্যন্ত বিষ (TTX) বহন করে। অর্থাৎ একজন সুস্থ-সবল ব্যক্তি এরূপ বিষাক্ত পটকার ৩ গ্রাম খেলেই বিষক্রিয়া হয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে মারা যাবে।