Heart Attack Prevention Tips: বর্তমানে ব্যস্ত জীবনযাত্রা এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে যেসব রোগ বা স্বাস্থ্য সমস্যার প্রকোপ দ্রুত বাড়ছে তার মধ্যে একটি হল হার্ট অ্যাটাক। আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল হার্ট। এর যথাযথ যত্নের প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: রাজ্যে অ্যাডিনো ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে জারি অ্যাডভাইজারি
হৃদরোগকে সাধারণত বার্ধক্যজনিত সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করা হলেও গত কয়েক বছরে তরুণরাও ক্রমশই এই মারাত্মক রোগের শিকার হচ্ছেন। অভিনেতা সিদ্ধার্থ শুক্লা, কন্নড় চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা পুনীথ রাজকুমার, গায়ক কেকেও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন অকালেই।
আরও পড়ুন: ডায়াবেটিস-ব্লাড প্রেসার সহ ৭৪টি ওষুধের দর কেন্দ্রের, রইল তালিকা
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, হৃদপিণ্ডে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে হার্ট অ্যাটাক হয়। এই ধরনের বাধা সাধারণত হৃদযন্ত্রে চর্বি, কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য পদার্থের জমা হওয়ার কারণে ঘটে। আমরা জেনে-বুঝে বা অজান্তে প্রতিদিন এমন কিছু কাজ করে থাকি, যে কারণে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ বিষয়ে আমাদের সকলেরই সতর্ক থাকা প্রয়োজন। আমাদের অভ্যাসের উন্নতির মাধ্যমে আমরা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকগুণ কমাতে পারি। চলুন এ বিষয়ে সবিস্তারে জেনে নেওয়া যাক...
আরও পড়ুন: মাঝ বয়সে বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি, ৪ খাবার নিয়মিত খেলে নিশ্চিন্ত
ওজন নিয়ন্ত্রণ না করা: এই ব্যস্ত জীবনযাত্রায়, বেশিরভাগ মানুষই স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা একে হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম ঝুঁকির কারণ হিসেবে বিবেচনা করেন। Myohealth বলে যে স্থূলতা উচ্চ রক্তের কোলেস্টেরল, উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইড, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়, যা সবই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। এই কারণেই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে সময় মতো ওজন কমিয়ে ফেলুন।
আরও পড়ুন: রসুন হার্ট ভাল রাখে, কিন্তু কিছু মানুষের হার্ট অ্যাটাকও করতে পারে, জরুরি তথ্য
ধূমপান ত্যাগ এবং উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ: অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা ধূমপান করেন এবং বেশি স্ট্রেস নেন তাদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেশি থাকে। প্রকৃতপক্ষে, ধূমপানের ফলে সময়ের সাথে সাথে ধমনীতে প্লাক বা বাধা তৈরি হয়। ধমনী সংকুচিত হয় এবং হৃৎপিণ্ডে রক্তের প্রবাহ কমে যায়। এই কারণে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। একইভাবে, বেশি স্ট্রেস নেওয়ার ফলেও রক্তচাপের সমস্যা বাড়ে, যা হৃদরোগের প্রধান কারণ হিসাবে দেখা হয়। এ কারণেই মানসিক চাপ না নেওয়া এবং ধূমপান থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা: স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপনি যদি আরামদায়ক জীবন পছন্দ করেন, তাহলে এই অভ্যাস হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে কোনও সন্দেহ নেই যে শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা হৃদরোগের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। কারণ শরীর যখন নিষ্ক্রিয় থাকে, তখন ধমনীতে চর্বিযুক্ত পদার্থ জমা হতে থাকে। আপনার হৃৎপিণ্ডে রক্ত বহনকারী ধমনী যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা আটকে যায়, তাহলে তা হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। এই কারণেই সকল মানুষকে প্রতিদিন ব্যায়াম করার পরামর্শ দেওয়া হয়। যোগব্যায়াম ও নিয়মিত শরীরচর্চা করলে হার্ট অ্যাটাক ও হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো যায়।
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ: বুকে ব্যাথা, হঠাৎ ঘাম হওয়া, শ্বাসকষ্টের অনুভূতি, বমি হওয়া, বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা, হঠাৎ ক্লান্তি বোধ করা, বুকের মাঝখানে তীব্র ব্যথা অনুভব করা, বুকে ভারী বোধ করা, কাঁধ-ঘাড়-বাহু এবং চোয়াল থেকে হৃদপিন্ডে ব্যথা অনুভব করা ইত্যাদি হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে। এই সব সমস্যা একটানা অনেক্ষণ হয় না, মাত্র মিনিট খানেকের জন্যই অনুভূত হয়। কিন্তু তখনই সতর্ক হতে হবে এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই নিবন্ধে দেওয়া তথ্য শুধুমাত্র সাধারণ জ্ঞান আর ধারণার জন্য। যে কোনও প্রতিকার বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। শরীরে যদি আগে থেকেই কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে বা যদি কোনও অসুস্থতার কারণে নিয়মিত কোনও ওষুধ খেতে হয়, তাহলে কখন কী খাবেন আর কী খাবেন না, তা জানার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।