রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে শরীরে অনেক সমস্যা তৈরি হয়। ইউরিক অ্যাসিডের বৃদ্ধিতে গাউট রোগ (এক ধরণের আর্থ্রাইটিস) হতে চায়। কিডনিতে স্টোন কিংবা কখনও কখনও কিডনির ক্ষমতাও একেবারে কমিয়ে দেয় ইউরিক অ্যাসিড। রক্তে উচ্চ মাত্রার ইউরিক অ্যাসিড আছে কি না তা সাধারণত রক্ত পরীক্ষা করে সনাক্ত করা হয়।
একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত হলে একজন ব্যক্তির বেঁচে থাকার সম্ভাবনাকে তা ধীরে ধীরে কমিয়ে দিতে থাকে। ইউরোপীয় জার্নাল অফ ইন্টারনাল মেডিসিনে এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। লিমেরিক স্কুল অফ মেডিসিনের গবেষকরা এই গবেষণায় দাবি করেছেন যে রক্তে উচ্চ মাত্রার ইউরিক অ্যাসিড একজন ব্যক্তির আয়ু ১১ বছর পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে।
এই প্রতিবেদন অনুসারে, রক্তে বেশি মাত্রায় ইউরিক অ্যাসিড হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস-সহ অনেক গুরুতর রোগের কারণ হতে পারে। প্রাউ ২৬ হাজার ৫২৫ জন উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড সম্পন্ন ব্যক্তিদের উপর এই সমীক্ষা করা হয়েছে।
ইউএল স্কুল অফ মেডিসিন বায়োস্ট্যাটাস্টিকের সিনিয়র গবেষক ড: লিওনার্ড ব্রাউন এর মতে, ইউরিক অ্যাসিডের কারণে পুরুষ ও মহিলাদের মৃত্যুর হার একে অপরের থেকে আলাদা। প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে রক্তে 238µmol / লিটারের নীচে সেরাম ইউরিক অ্যাসিডের (এসইউএ) মাত্রা থাকলে পুরুষের আয়ু সাড়ে নয় বছর পর্যন্ত কমে যায়। SUA এর মাত্রা 535µmol / লিটারের বেশি হলে পুরুষের জীবনকাল সাড়ে ১১ বছর পর্যন্ত কমে যেতে পারে।
মহিলাদের ক্ষেত্রেও একই রকম কিছু রিপোর্ট দেখা গিয়েছে। শরীরে সেরাম ইউরিক অ্যাসিডের উচ্চ মাত্রা (416olmol / L এর বেশি) হলে আয়ুষ্কাল ৬ বছর কমিয়ে আনে। এখনও এই বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করছেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষকরা বলেছেন যে চিকিৎসকদের পরামর্শের মাধ্যমে আমরা ওষুধের মাধ্যমে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা স্বাভাবিক করতে পারি। তবে স্বাস্থ্যকর খাবার, সামগ্রিক ফিটনেস যদি ঠিক থাকে তাহলে ওষুধ ছাড়াও এই রোগকে বশে রাখা যায়।
রক্তে উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড থাকলে বিপদ এড়াতে বিশেষজ্ঞরা ডায়েট থেকে পিউরিন সমৃদ্ধ খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আসলে, পিউরিন একটি রাসায়নিক যৌগ যা হজম প্রক্রিয়া চলাকালীন ইউরিক অ্যাসিডকে রক্তে নিক্ষেপ করে। এটি বিভিন্ন ধরণের উদ্ভিদ এবং মাংসতেও পাওয়া যায়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের মতে ইউরিক অ্যাসিডের বিপদ এড়াতে ৯ ধরণের খাবার না খাওয়াই ভাল। পালং শাক, মাশরুম, পাঠার মাংস, চিংড়ি, টমেটো, মুগ ডাল, মসুর ডাল, সয়াবিন এবং কফি না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।