সিডনির হারবার ব্রিজ দেখার ইচ্ছে রয়েছে, সামর্থ নেই। দরকার নেই। শিলিগুড়ি চলে আসুন। শিলিগুড়ি লাগোয়া গজলডোবায় অবিকল সেই সেতু দেখতে পাবেন।
হারবার ব্রিজের আদলে গজলডোবায় তৈরি হচ্ছে ঝুলন্ত ওই সেতু। ‘ভোরের আলো’ প্রকল্প ক্যানেলের অপর পারে। এখন একটি মাত্র সেতু দুয়ে সেখানে যাওয়া যায়। এটি তৈরি হলে দুভাগ দুদিক থেকে এসে জুড়বে। কাজ অর্ধেক হয়েছে। তাতেই হামলে পড়ছেন পর্যটকরা।
প্রতিদিনই ভিড় করছেন ভ্রমণপিপাসুরা। ছুটির দিনগুলোতে ভিড় বাড়ছে। সেতুর আশেপাশে কিংবা সেই নির্মীয়মান সেতুকে পিছনে রেখে তুলছেন ছবি। সেলফি নিচ্ছে প্রায় সেখানে যাওয়া প্রত্যেকেই। সেতুটি এখন যেন ‘সেলফি জোন’ হয়ে উঠেছে।
অসমাপ্ত সেতুর ছবিই এখন ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। সামনে থেকে যতটা সুন্দর, ছবিতে আরও সুন্দর দেখাচ্ছ। গজলডোবায় ঘুরতে গিয়ে সেতুকে ঘিরে ছবি নিয়ে ফিরছেন। স্বাভাবিকভাবেই এই সেতু ঘিরে পর্যটনে বাড়তি মাত্রা যুক্ত হবে বলে মনে করছে সব মহলই।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত ‘ভোরের আলো’ প্রকল্পটি তিস্তার চরে ২০৮ একর জমির উপরে তৈরি হয়েছে। সাধারণ জলাভূমি ছথেকে পরিণত হয়েছে মেগা পর্যটন কেন্দ্রে। তার প্রথম ধাপের উদ্বোধন ইতিমধ্যে হয়ে গিয়েছে। এখন বাকি কাজ চলছে। এই প্রকল্পে জুড়তে প্রাক্তন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের আমলে সুদৃশ্য এই সেতু তৈরি শুরু হয়।
প্রকল্পের একপাশে ক্যানেল গিয়ে মিসেছে অন্যপাশে পাশ দিয়ে বয়ে চলা তিস্তা ক্যানালের একপাড় থেকে অন্য পাড়কে জুড়তে এই সেতু। ঝুলন্ত অবস্থায় জুড়ে যাবে সেতুটি। ভোরের আলোকে বিশ্বে পরিচিতি দিতে দর্শনীয় করতে অস্ট্রেলিয়ার সিডনির হারবার ব্রিজের আদলে করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এই সেতুটি পর্যটন দফতরের প্রস্তাবে তৈরি করছে পূর্ত দপ্তর। ১০০ কোটি টাকার কাছাকাছি খরচ হবে বলে সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে।
মাঝে করোনার জন্য বন্ধ ছিল। এখন শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে। তবু পর্যটকদের উৎসাহে খামতি নেই। বহু বড় শহরে নদীর বুকে সেতু একটা স্থাপত্যের পরিচায়ক। আমাদের হাওড়া ব্রিজই তার প্রমাণ। ঘরের কাছের সেবকের করোনেশন সেতুও একটা বিস্ময়। তা দেখতেও পর্যটকরা ছুটে আসেন। গজলডোবাতেও একইভাবে একদিকে এই ব্রিজটি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হতে চলেছে।
ব্রিজের নাম কি রাখা হবে তা সরকারিভাবে ঠিক হয়নি, ব্রিজ তৈরি শেষ হলে সম্ভবত মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই সেতুটির নামকরণ ও উদ্বোধন করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে নাম যাই হোক, স্থানীয়দের কাছে বা পর্যটকদের কাছে এটা মুখে মুখে গজলডোবার হারবার ব্রিজ নামে পরিচিত হয়ে পড়েছে।