আপনি কি নিয়মিত ঘুমের মধ্যে খারাপ স্বপ্ন দেখেন? যদি উত্তর হ্যাঁ হয়, তাহলে কিন্তু যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ হতে পারে। গবেষকরা জানিয়েছেন যে মধ্যবয়সী লোকেদের নিয়মিত খারাপ স্বপ্ন দেখা, বুদ্ধি ও স্মৃতি হ্রাসের কারণ হতে পারে। বয়স যত বাড়তে থাকে, তাদের ডিমেনশিয়া হওয়ার ঝুঁকি বেশি হতে পারে। গবেষণায় ঘন ঘন দেখা স্বপ্নের ফ্রিকোয়েন্সি এবং বোধবুদ্ধি লোপ পাওয়ার ঝুঁকির মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।
E-Clinical Medicine জার্নালে প্রকাশিত, গবেষণায় দেখা গেছে যে, দুঃস্বপ্নের হাই ফ্রিকোয়েন্সি উল্লেখযোগ্যভাবে মাঝবয়সি বা প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বুদ্ধিহ্রাসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
আরও পড়ুনঃ জয়রাইডের সংখ্যা আরও বাড়ছে টয়ট্রেনে, ২৬ থেকে চলতে পারে পূর্ণাঙ্গ রুটেও
স্টাডি রিপোর্টটি মানসিক অবস্থা বিচার, বিশ্লেষণ এবং যাচাই করার এবং ডিমেনশিয়ার বিভিন্ন নতুন লক্ষণ ও তার সমাধানের উপায় সামনে আনতে পারে।
ডিমেনশিয়া নিজে শুধু একটি রোগ নয়। পরিবর্তে, এটি রোগের একটি গোষ্ঠী, যা আলঝাইমার রোগ সহ বিভিন্ন নির্দিষ্ট রোগের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অ্যালঝাইমার অ্যাসোসিয়েশনের মতে, সাধারণ "ডিমেনশিয়া" এবং তার অধীনে থাকা রোগগুলি মস্তিষ্কের অস্বাভাবিক পরিবর্তনের কারণে হয়। যাতে চিন্তার ক্ষমতা হ্রাস পায়। যা দৈনন্দিন জীবন এবং স্বাধীন কাজকর্মের ক্ষমতাকে নষ্ট করে দেয়।
সাধারণ মানুষের মধ্যে দুঃস্বপ্ন দেখা সাধারণ ঘটনা। প্রায় ৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ সাপ্তাহিক দুঃস্বপ্নের সম্মুখীন হন, যেখানে ১২৪০ শতাংশ মানুষের ক্ষেত্রে এটি প্রতি মাসে একবার ঘটে। তবে গবেষকদের ধারণা যে দুঃস্বপ্ন দেখার এই সংখ্যাটা অনেক বেশি। কারণ অনেকে সকালে উঠে সেটা প্রকাশ করেন না। আবার অনেকে স্বপ্ন যে দেখেছন সেটা ভুলে যান। গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে যে পার্কিনসন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কষ্টকর স্বপ্ন এবং ক্লিনিকাল ফলাফলের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে।
বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা তিনটি গবেষণা বিশ্লেষণ করেছেন, যা ৬০০ জন মধ্যবয়সী প্রাপ্তবয়স্কদের যাঁদের বয়স ৩৫ থেকে ৬৪ বছরের মধ্যে এবং ২৬০০ জন ৭৯ বছর বা তার বেশি বয়সী লোকদের ট্র্যাক করেছে এবং তাঁদের ঘুমের গুণমান এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য বিশ্লেষণ করেছে।
আরও পড়ুনঃ কলকাতা-উত্তরবঙ্গ আরও ১৫টি বাস মহালয়া থেকে, কীভাবে টিকিট পাবেন?
তাঁরা দেখেছেন যে, মধ্যবয়সী ব্যক্তিরা যাঁরা সপ্তাহে অন্তত একবার খারাপ স্বপ্ন দেখেন, তাঁদের পরবর্তী দশ বছরে বুদ্ধিহ্রাসের সম্ভাবনা প্রায় চার গুণ বেশি তাঁদের চেয়ে, যাঁরা খুব কমই দুঃস্বপ্ন দেখেন। খারাপ স্বপ্ন ঘুমের খারাপ মানের ফলাফল হতে পারে, যা ডিমেনশিয়ার দিকে মস্তিষ্ককে নিয়ে যেতে পারে।
কীভাবে আটকাবেন ডিমেনশিয়া?
গবেষণার লেখক আবিদেমি, দ্য গার্ডিয়ানকে বলেছেন যে, মস্তিষ্কের ডিমেনশিয়া মোকাবিলা করার সর্বোত্তম উপায় হল এটিকে প্রতিরোধ করা। আর প্রতিরোধের সবচেয়ে ভাল উপায় খাদ্যাভ্যাস ঠিক করা, নিয়মিত শরীরচর্চা করা, ধূমপান বন্ধ করা এবং মদ্যপান কমিয়ে দেওয়া বা বন্ধ করা।