আগে একটা বয়সের পর শুরু হত কোলেস্টেরলের সমস্যা। তবে এখন কমবয়সেও মাথা চাড়া দিচ্ছে কোলেস্টেরল। এর জন্য দায়ী জীবনযাপনের বদল। ব্যস্ততার কারণে মানুষের খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন হয়েছে। বেড়েছে বাইরে খাওয়ার প্রবণতা। শরীরচর্চার সময় নেই। বাড়ছে খারাপ কোলেস্টেরল। এতে স্ট্রোক ও হৃদ্রোগের সম্ভাবনা বাড়ে। রক্ত পরীক্ষা না করে বাইরে থেকেও বোঝা যায়, রক্তে বাড়ছে কোলেস্টেরল।
ধমনীর মাধ্যমে শরীরে বিভিন্ন অংশে সঞ্চালিত হয় রক্ত। কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে গেলে ধমনীগুলির ভিতর তৈরি হয় ফ্যাটের আস্তরণ। যা বাধা দেহ রক্ত চলাচলে। এ কারণে হাই ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিস ছাড়াও হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ভাজা-মশালাদার খাবার খেলে বাড়ে কোলেস্টেরল। এই ধরনের খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাট খুব বেশি থাকে। সেটাই রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল তৈরি করে। কোলেস্টেরল আগাম জানিয়ে দেয় হাত। হাতে কয়েকটি উপসর্গ দেখেই বুঝতে পারবেন কোলেস্টেরল বাড়ছে।
১। হাতে ব্যথা- হাই কোলেস্টেরলের কারণে হৃৎপিণ্ড রক্ত সঞ্চালনে বেগ পায়। এ কারণে হাতে কম রক্ত সরবরাহ হয়। শুরু হয় হাত ব্যথা। হাতে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করলে উপেক্ষা করবেন না। এই সমস্যাকে বলে পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ।
২। হাত ঝিনঝিন- রক্তনালীতে রক্তের সরবরাহ কমে যাওয়ায় হাতে ব্যথার পাশাপাশি ঝিনঝিন করতে থাকে। হাত ঝিনঝিন করলে অবিলম্বে সতর্ক হোন। অবিলম্বে কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা করান।
৩। নখের রং- হাতে রক্ত সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হলে নখের রং হালকা লাল বা গোলাপি হয়। কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে নখের পাশাপাশি ত্বকের রংও বদলাতে শুরু করে। নখের রং বদলে গেলে অবহেলা করবেন না।
অন্যান্য লক্ষণ
১। পায়ে রক্ত চলাচল কমে যাওয়া ব্যথা, পায়ের পাতা অবশ হয়ে যাওয়া।
২। পায়ের ত্বকের রং বদলে যায়।
৩। পায়ের পাতা বা গোড়ালিতে সমস্যা।
৪। পায়ের নখের বৃদ্ধি কমা।
৫। চুল পড়ে যাওয়া।
৬। শীঘ্রপতন।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে যে খাবার খেতে পারেন-
টমেটোর রস- টমেটো রস অত্যন্ত উপকারী। কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে রোজের পাতে রাখুন। টমেটোর লাইকোপেন উপাদান লিপিডের মাত্রা বাড়াতে সক্ষম। কমিয়ে দেয় খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএলের পরিমাণও। এছাড়া টমোটোয় আছে ফাইবার এবং নিয়াসিন। যা বশে রাখে কোলেস্টেরলকে। রোজ এক গ্লাস করে টমেটোর রস খেলে থাকবে নিয়ন্ত্রণে কোলেস্টেরল।
গ্রিন টি- ওজন কমাতে মহাষৌধি গ্রিন টি। গ্রিন টি কোলেস্টেরল সমস্যারও প্রতিকার করতে সক্ষম। এতে থাকা ক্যাটাচিন এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট উপাদান নিয়ন্ত্রণে রাখে কোলেস্টেরলের মাত্রা। একটি গবেষণা বলছে,রোজ গ্রিন টি খেলে ১৪ শতাংশ কমে যায় খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএলের মাত্রা।
ওটসের শরবত- ওজন কমাতে অনেকে ওট্স খান। ওজন নিয়ন্ত্রণে তো থাকেই কোলেস্টেরলও কমায়। এতে রয়েছে বিটাগ্লুক্যানস। এই উপাদান কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে।
আরও পড়ুন- ৮ নভেম্বর রাজ্যের কোন শহরে কটায় দেখতে পারবেন চন্দ্রগ্রহণ?