
Sikkim Tourism Lachung Lachen: পুজোর আগেই আচমকা সিকিমে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটে। যার ফলে সিকিমে বিশেষ করে উত্তর সিকিমের বিস্তীর্ণ অঞ্চল একেবারে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। মৃত্যু হয় প্রচুর মানুষের। রাজ্যের অন্য অংশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। যার প্রভাব পড়ে লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গের অনেক জায়গায়। অবশেষে দেড় মাস পর বেইলি ব্রিজ তৈরি কর ফের উত্তর সিকিম জুড়ে যায় দিন ১৫ আগে।
গত ৪ অক্টোবর তিস্তার হড়পা বানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তর সিকিম। পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, সব মিলিয়ে ১৪টির বেশি ছোট বড় সেতু জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। প্রায় দেড় মাসের মাথায় চুংথাং দিয়ে উত্তর সিকিমের সঙ্গে বাকি রাজ্য বেলি সেতু দিয়ে জুড়তে চলেছে। মাসখানেকের রাতদিন চেষ্টার পরে সেনাবাহিনী ও ‘বর্ডার রোড অর্গানাইজ়েশন’ তৈরি করেছে বেইলি সেতুটি। সেতুটি খুলে গেলেও পর্যটকদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। পুরো পরিস্থিতি ও নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখে দেওয়ার কথা থাকলেও কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যায় তা খোলা যায়নি। তবে চলতি সপ্তাহে রাস্তা খুললেও, পর্যটকদের ছাড়পত্র মিলবে আরও ক’দিন পরেই। বেইলি সেতুটি চুংথাং ও পেগং-কে জুড়েছে। সেতুটি বৃহস্পতিবার উদ্বোধন করে খুলে দেওয়া হয়েছে।
চলুন বরফে ঢাকা লাচুং
ডিসেম্বর দোরগোড়ায়। ভ্রমণের জন্য এটাই আদর্শ সময়। বিশেষত, আপনি যদি বরফ, তুষারপাত দেখতে চান, এই মাসেই যেতে পারেন কোনও পাহাড়ি পর্যটন কেন্দ্রে। বাড়ির কাছাকাছিও রয়েছে সেই সুযোগ। সিকিমের লাচুং গেলেই মিলবে তুষারপাত ও বরফ। ১ ডিসেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য খুলছে লাচুং। বেইলি ব্রিজ তৈরি করে লাচেনের সঙ্গে মঙ্গনের যোগাযোগ তৈরি হয়েছে। ব্যস, এখন লাচুং যাওয়ার আর নেই মানা। কিন্তু দু’দিনের বেশি রাত্রিবাসের অনুমতি মিলবে না।
কোথায় কোথায় ঘুরবেন?
এবার ১ ডিসেম্বর থেকে লাচুংয়েও যেতে পারবেন পর্যটকেরা। লাচুং ঘুরতে গেলেও লাচেন ও গুরুডোংমার আপাতত বন্ধই থাকছে। লাচুং-ইয়ুমথাং-লাচেন-গুরুদংমার—উত্তর সিকিমের এই ট্রিপটা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। কিন্তু লাচেন ও গুরুদংমার বেড়াতে যাওয়ার জন্য এখনও সুরক্ষিত নয়। যদিও বরফ ও তুষারপাতের মজা আপনি লাচুংয়েও পাবেন। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এই পাহাড়ি গ্রাম ঢাকা থাকে সাদা বরফের চাদরে। লাচুং-ইয়ুমথাং-লাচেন-গুরুদংমার—উত্তর সিকিমের এই ট্রিপটা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। কিন্তু লাচেন ও গুরুদংমার বেড়াতে যাওয়ার জন্য এখনও সুরক্ষিত নয়। যদিও বরফ ও তুষারপাতের মজা আপনি লাচুংয়েও পাবেন। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এই পাহাড়ি গ্রাম ঢাকা থাকে বরফে।
সাধারণত গ্যাংটক থেকে মঙ্গন, সিংঘিক, চুংথাং হয়ে পৌঁছাতে হয় লাচুংয়ে। এবারে লাচুং যেতে হবে সাঙ্গালান-টং-চুংথাংয়ের পথ দিয়ে। লাচুং নদীর পাশে অবস্থিত পাহাড়ি গ্রাম। এখন দু’দিনের বেশি রাত্রিবাসের অনুমতি মিলছে না। তাই দু’দিনের মধ্যে ঘুরে নিতে পারেন লাচুং মনাস্ট্রি। ১৮০৬ সালে লাচুং নদীর তীরে বৌদ্ধ ধর্মের নাইংমাপা এই মনাস্ট্রি প্রতিষ্ঠা করেন। পাশাপাশি যেতে পারেন সিঙ্ঘিক, মাউন্ট কাতাও, ভীম নালা জলপ্রপাত, জিরো পয়েন্ট, সিংবা রডোডেনড্রন অভয়ারণ্য, মঙ্গন ইত্যাদি জায়গা।
লাচুংয়ে যেতে আর বাধা নেই
গ্যাংটক থেকে মঙ্গন হয়ে টুং যেতে হত। সেখান থেকে চুংথাং ঢুকতে হয়। টুং থেকেই উত্তর সিকিমের পারমিট দেওয়া হয়। এই রাস্তাটি আপাতত বন্ধ হয়ে রয়েছে। বদলে গ্যাংটক থেকে মঙ্গন হয়ে সংকলন অবধি রাস্তা প্রথমে খোলা হয়। মঙ্গন এবং সংকলনের মাঝেও সেতু তৈরি হয়েছে। এই রাস্তা দিয়ে জঙ্গু যেতে হয়। এ বার সংকলন থেকে পেগং হয়ে চুংথাং পৌঁছনো যাবে। সেখান থেকে দু’দিকের আলাদা রাস্তায় লাচুং ও লাচেন জুড়বে। লাচুংয়ে যেতে হবে সাঙ্কালান-টুং-চুংথাং রুট ধরেই। অন্য কোনও রুট দিয়ে যাতায়াত করা যাবে না। পর্যটকদের এই ব্যাপারে গাইড করার জন্য পর্যটন ব্যবসায়ীদের নির্দেশ দিয়েছে মঙ্গন জেলা প্রশাসন।
সিকিম রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বড়দিনের ছুটির আগে লাচেনও পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। চুংথাং থেকে লাচেনে যাওয়ার বেইলি ব্রিজ তৈরি হলেও যাতায়াতের রাস্তার হাল এখনও পরীক্ষা করে দেখা হয়নি। সেই কারণে এখনই অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। তবে বড়দিনের ছুটির আগেই অনুমতি দেওয়ার চেষ্টা চলছে। প্রশাসনের এই উদ্যোগে খুশি পর্যটন ব্যবসায়ীরাও।