চিন বানিয়ে ফেলেছে নকল সূর্য। এটা নিশ্চয়ই আপনি আগে থেকেই জানেন। লাগাতার নিজের তাপমাত্রা বাড়িয়ে চলেছে সূর্য। এটা বানানোর উদ্দেশ্য ছিল তাপ এবং শক্তির প্রয়োজনীয়তা মেটানো। একে এনার্জি হিসেবে ব্যবহার করতে পারা। সম্প্রতি এই নকল সূর্য আসল সূর্যের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি তাপমাত্রা জোগাড় করে নিয়েছে। এটা ১৭ মিনিট পর্যন্ত বেশি তাপমাত্রা দিয়েছে। যেটা এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সময় উত্তাপ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।
এই নকল সূর্যের নাম (ইস্ট) এক্সপেরিমেন্টাল অ্যাডভান্সড সুপেরকন্ডাক্টিং টোকাম্যাক। চিনের নিউজ এজেন্সি সিংহ আওয়ার খবর অনুযায়ী এটাতে সম্প্রতি 1056 সেকেন্ড পর্যন্ত সাত কোটি ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা বানানো হয়েছিল। যা সূর্যের তাপমাত্রার চেয়ে ৫ গুণ বেশি। যদি এটি বেশি সময় পর্যন্ত এভাবেই তাপমাত্রা বানাতে পারে তাহলে এটা থেকে তৈরি হওয়া বিদ্যুৎ থেকে দেশে আলো জ্বালানো সম্ভব হবে।
এর আগে ২০২১-এ এই নকল সূর্য ১০১ সেকেন্ড পর্যন্ত ১২ কোটি ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা তৈরি করতে পেরেছিল। কিন্তু এই সময় খুব কম ছিল। সূর্যের কেন্দ্রে যে তাপমাত্রা থাকে, সেটি প্রায় দেড় কোটি ডিগ্রী সেলসিয়াস হয়। কিন্তু চিনের নকল সূর্য, আসল সূর্যের তাপমাত্রাকে পিছনে ফেলে দিয়েছিল। এখন তাঁর শক্তি এপ্লাই করতে কাজ চালানো হচ্ছে।
চাইনিজ অ্যাক্যাডেমি অফ সাইন্সেস এর ইনস্টিটিউট অফ প্লাসমা ফিজিক্সের শোধকর্তা এবং এই প্রয়োগের নেতৃত্বদানকারী বিজ্ঞানী জ্ঞাং জিয়ানজু জানিয়েছেন, যে সম্প্রতি হওয়া পরীক্ষার বৈজ্ঞানিক ডাটা তিনি দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা এটিকে লম্বা সময় পর্যন্ত চালিয়ে তার শক্তি তৈরি করতে পারি। বৈজ্ঞানিক নিউক্লিয়ার ফিউশন থেকে বের করে তা কাজে লাগানোর চেষ্টা বহুবছর ধরে চলছে।
হাইড্রোজেনের অ্যাটমিক কনা ইউজ করে অত্যধিক চাপ এবং তাপমাত্রায় হিলিয়াম বানানোর জন্য প্রক্রিয়াই এই নকল সূর্যতে যাচ্ছে। এই প্রক্রিয়াতে আমাদের সূর্যতেও থাকে। এখান থেকে বের হওয়া শক্তি গরম এবং আলো প্রদান করে। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমরা লম্বা সময় পর্যন্ত উর্যা হাসিল করতে পারি। তাও আবার বিনা গ্রীন হাউজ গ্যাস নির্গমন করে এটা করা সম্ভব।
এক্সপেরিমেন্টাল অ্যাডভান্সড সুপেরকন্ডাক্টিং তকমা সুপারহিট প্লাজমার কাজ করে চলেছে হঠাৎ পদার্থের চারটি রূপে থেকে একটা রূপ কে পজিটিভ আয়ন এবং অত্যধিক অর্ধেকে উর্যাতে ভরা স্বতন্ত্র ইলেকট্রনের ডোনাট আকারে রিয়াক্টর চেম্বার এ পাঠিয়ে দিতে গতিতে ঘোরানো হচ্ছে। যা থেকে অদ্ভুত স্তরের চুম্বকীয় শক্তি তৈরি হচ্ছে এটা একটি কঠিন প্রক্রিয়া।
সোভিয়েত বৈজ্ঞানিক নৈটন ইয়াবলিংসিকো বহু আগে ১০৫৮ সালে প্রাথমিক সূর্য বানানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কোনভাবে সেই সময়ে পর থেকে বহু বছর পর্যন্ত তাকে শক্তির জোগানে প্রয়োগ করতে সাহস পাননি। গতবার যখন চিনি এই পরীক্ষা করেছিল, তখন এটৈ সৈন্জেন বিজ্ঞান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌতিক বিভাগ এর নির্দেশক এর অনুসারে পরবর্তী লক্ষ রিঅ্যাক্টরের জন্য এক সপ্তাহ লাগাতার স্থির তাপমাত্রায় চলতে দিতে হবে। কিন্তু এটা এবার হয়নি।
চিনের পূর্ব আনহুই প্রান্ত থেকে এই রিঅ্যাক্টরের অত্যধিক গরম এবং শক্তির কারণে কৃত্রিম সূর্য বলা হচ্ছে। এটাকে গত বছরের শেষে তৈরি করা হয়েছিল। চিনা বিজ্ঞানীরা ২০০৬ সালে পরমাণু সংলয়ন রিঅ্যাক্টরের ছোট সংস্করণটি বিকশিত করে কাজ শুরু করেছে।
ফ্রান্সে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পরমাণু সংলায়ন অনুসন্ধান প্রযোজনা চলছে যাতে ২০২৫ এ পুরো হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। সেখানে দক্ষিণ কোরিয়া নিজেদের কৃত্রিম সূর্য কোরিয়া সুপার কন্ডাক্টিং অ্যাডভান্সড রিসার্চ' ও চালিয়ে যাচ্ছে।