UK-US নয়, শ্যাম্পু আবিষ্কার হয়েছে ভারতেই! জানতেন?

বর্তমান সময়ে প্রায় প্রটিতি বাড়িতেই শ্যাম্পুর ব্যবহার দেখা যায়। অনেকেই ভাবেন শ্যাম্পু হয়ত বিদেশে থেকে ভারতে আমদানি হয়েছে। তবে যাঁরা এমনটা ভাবেন তাঁরা এটা জেনে অবাক হবেন যে, শ্যাম্পুর প্রথম প্রচলন ভারতেই হয়েছিল। ভারতে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষ প্রথম শ্যাম্পুর ব্যবহার শুরু করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক শ্যাম্পুর আদি কথা। 
 

ঐতিহাসিক তথ্য অনুযায়ী ঔপ্যনিবেশিক আমলে শ্যাম্পু শব্দটি ইংরেজি ভাষায় অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৬২ সালে প্রথম এই শব্দটির ব্যবহার হয়। এটি সংস্কৃত শব্দ চপতি থেকে নেওয়া হয়, যার অর্থ মসৃণ বা শান্ত করা। হিন্দিতে এটিকে চ্যাম্পো বলা হত। প

মনে করা হয় যে, ভারতীয় উপমহাদেশে বিভিন্ন ধরনের ভেষজ এবং তাদের নির্যাস প্রাচীনকাল থেকেই শ্যাম্পু হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। প্রথমে Sapindus ও আমলকির সঙ্গে বিভিন্ন জরিবুটি মিলিয়ে একটি নির্যাস তৈরি করা হত। তারপর তাই দিয়েই প্রস্তুত করা হত শ্যাম্পু। 

Sapindus খানিকটা সাবানের মতো। এটি ভারতে গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের একটি গাছ। প্রাচীন ভারতীয় গ্রন্থে একে কুসুনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এর ফলে স্যাপোনিন রয়েছে যা একটি প্রাকৃতিক সারফ্যাক্ট্যান্ট। এর নির্যাসকে ভারতীয় গ্রন্থে ফেনাকা নামে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি চুলকে নরম, চকচকে ও মসৃণ করে। 
 

চুল পরিস্কার রাখতে একসময় শিকাকাই, হিবিস্কাস ফুল, রিঠা এবং অরাপ্পু ব্যবহৃত হত। শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠানা গুরু নানকও ষোড়শ শতাব্দীতে সাবানের উল্লেখ করেছিলেন। 
 

ভারতে ঔপ্যনিবেশিক ব্যবসায়ীরা তাঁদের স্নানের সময় প্রতিদিন চুল পরিস্কার ও দেহ ম্যাসাজ শুরু করেন। এরপর তাঁরা যখন ইউরোপে ফেরেন তখন সেখানেও এই অভ্যাস বজায় রাখেন। তখনই তাঁরা একে শ্যাম্পু নামে উল্লেখ করেন। পরবর্তীকালে বিদেশী সংস্থাগুলিই শ্যাম্পুকে সারা বিশ্বে জনপ্রিয় করার কাজ করেন।  
 

মহম্মদ নামে এক জনকে ব্রিটেনে শ্যাম্পু করার প্রথা চালুর কৃতিত্ব দেওয়া হয়। ১৮১৪ সালে নিজের স্ত্রীকে নিয়ে ইংল্যান্ডে বাণিজ্যিকভাবে প্রথম শ্যাম্পু ম্যাসাজের ব্যবস্থা করেন তিনি। 

ইউরোপে শ্যাম্পুর প্রাথমিক পর্যায়ে, ইংরেজ হেয়ারস্টাইলিস্টরা জলে সাবান ফুটিয়ে তাতে চুলের উজ্জ্বলতা ও সুগন্ধ আনার জন্য ভেষজ যোগ করতেন। তারপর ২০ শতকের শেষ থেকে বাণিজ্যিকভাবে নির্মিত শ্যাম্পু আসে।