রসগোল্লা খান না এমন বাঙালি নেই। ডায়াবেটিস হলে আলাদা কথা। কিন্তু তাহলেও বাড়িতে লুকিয়ে চুরিয়ে এক আধটা রসগোল্লা হাপিস করে দেওয়া চলেই। রসগোল্লাপ্রেমী বাঙালির নস্টালজিয়া ও রসগোল্লা প্রেমের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ১৪ নভেম্বর রসগোল্লা দিবস।
রসগোল্লা সাদা রঙের এক প্রকার ছানার মিষ্টি। এটি চিনি বা গুড় দিয়ে তৈরি হয়। সবার কাছেই রসগোল্লা একটি জনপ্রিয় মিষ্টি। ছানা (তার মধ্যে অনেক সময় সুজির পুর দেওয়া হয়) পাকিয়ে গরম রসে ডুবিয়ে এটি প্রস্তুত করা হয়।
রসগোল্লা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও ওডিশার বিরোধ দীর্ঘদিনের। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রসগোল্লার জিআই ট্যাগ লাভ করে। ফলে রসগোল্লার উৎপত্তি যে বাংলায় তা প্রতিষ্ঠা পায়।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মকর্তারা বলছেন যে তারা শুধু 'ভৌগোলিক সূচক' বা 'ভৌগোলিক ইঙ্গিত' (জিআই) ট্যাগের জন্য অনুরোধ করেছিলেন, যা স্থানীয় রসগোল্লা 'বাংলার রসগোল্লা' নামে খ্যাত হয়। তাঁদের দাবি এ রসগোল্লা একেবারেই ভিন্ন। ওডিশার সঙ্গে তাঁদের কোনও বিরোধ নেই।
ভারতেই এই বাংলায় বা পশ্চিমবঙ্গে প্রথম রসগোল্লা প্রস্তুত করা হয়েছিল বলে জানা যায়। এর চেয়ে অন্য় কোনও তত্ত্ব অগ্রাধিকার পায়নি। এ রাজ্যের ফুলিয়া জেলার হারাধন ময়রা আদি রসগোল্লার সৃষ্টিকর্তা।
তবে অন্য মতে রসগোল্লার আদি উৎপত্তিস্থল বর্তমান বাংলাদেশের বরিশাল অঞ্চলে। বিশেষ করে, পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় পর্তুগীজদের সময় সেখানকার ময়রাগণ ছানা, চিনি, দুধ ও সুজি দিয়ে গোলাকার একধরনের মিষ্টান্ন তৈরি করেন যা ক্ষীরমোহন বা রসগোল্লা নামে পরিচিত।
তবে রসগোল্লার আদি জন্ম নিয়ে বাংলা আর ওডিশার মধ্যে একটি মামলা চলছে যায় নিষ্পত্তি এখনও হয়নি। তবে রসগোল্লার জিআই ট্যাগ পশ্চিমবঙ্গ লাভ করেছে ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে। সেই উপলক্ষেই ১৪ নভেম্বর এ রাজ্যে রসগোল্লা দিবস পালন করা হয়।
আজ, প্লাস্টিকের ক্যানে ভরা রসগোলা ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ জুড়ে পাওয়া যায়, পাশাপাশি উপমহাদেশের বাইরে দক্ষিণ এশিয়ার মুদি দোকানেও পাওয়া যায়। নেপালের রাজবাড়ি নামে রাসবুলি নামে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে রসগোল্লা।