Dharmatala Name Significance: শহর কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলা। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কয়েক লক্ষাধিক মানুষের ভিড়ের ঢল নেমে আসে এখানে। হুগলি নদীর পার্শ্ববর্তী স্থান হওয়ায়, ব্যস্ততা এখানে সর্বক্ষণের। ধর্মতলার প্রতিটি দিক জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে দর্শনীয় স্থান। মহানগরীর ধর্মতলা স্ট্রিট আজকের যুগে এত ব্যস্ত হয়ে উঠেছে এমন নয়। সেই ব্রিটিশ কাল থেকে এই এলাকা জুড়ে তৈরি হয়েছে বাণিজ্য, স্থাপত্য, ঐতিহ্য। ধর্মতলার একটি সাহেবি নামও আছে, এসপ্ল্যানেড।
ধর্মতলার নামকরণ কীকরে হল তা নিয়ে একটি বিস্তর ইতিহাস আছে। সেই ইতিহাস নিয়ে আছে দ্বিমতও। নাম শুনে আঁচ করাই যায়, ধর্মের চর্চার কারণেই হয়তো জায়গাটির নাম হয়ে উঠেছে ধর্মতলা।
কীভাবে ধর্মতলার নামকরণ?
এখন ধর্মতলায় যে টিপু সুলতান মসজিদ আছে, তার পাশেই কুক কোম্পানির ঘোড়ার একটি আস্তাবল ছিল এখানে। সেই আস্তাবলের পাশেই ছিল একটি মসজিদ। সেই মসজিদ অবশ্য এখন আর নেই। তার পাশেই ১৮৪২ সালে টিপু সুলতানের বংশধর প্রিন্স গোলাম মহম্মদ একটি মসজিদ তৈরি করেন, যা বর্তমানে টিপু সুলতান মসজিদ নামে পরিচিত।
দ্বিতীয় আরও একটি মত আছে ডাঃ হর্ণেলের। তাঁর মতে, তৎকালীন জানবাজারে বৌদ্ধধর্মালম্বীদের বাস ছিল এখানে। তারা বিভিন্ন অনুষ্ঠান, উৎসব করতেন। আর সেখান থেকেই নাম হয় ধর্মতলার।
আবার এও কথিত আছে, এখানে ধর্মঠাকুরের মন্দির থেকেই নামকরণ হয়েছে ধর্মতলার। এই ধর্মঠাকুরের মন্দিরকে কেন্দ্র করে নানান রকম উৎসব হতো। ধর্মঠাকুর বাউরি, ডোম এই জাতির দেবতা। সেই ধর্মঠাকুরের মন্দির নাকি আজও বর্তমান।
বর্তমানে ধর্মতলা স্ট্রিটের নাম লেনিন সরণি
এখানে হগ মার্কেটের আগে ছিল মেম্বা পীরের বাজার। পরে হগ সাহেবের বাজার প্রতিষ্ঠার পর পুরনো বাজারের প্রতিপত্তি কমে যেতে থাকে।
বর্তমানে ধর্মতলা স্ট্রিটের নাম লেনিন সরণি। এই লেনিন সরণির অলি গলি জুড়ে রয়েছে নানারকম ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস। সে সময়ে ছিল না আধুনিকতার ছোঁয়া। আজ এই লেনিন সরণি জুড়ে গজিয়ে উঠেছে ঘিঞ্জি দোকানপাট, নিউ মার্কেট। ধর্মতলার কাছেই শহীদ মিনার, ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ, ইডেন গার্ডেন্স। ধর্মতলাস্থিত মেট্রোপলিটন বিল্ডিং, ট্রাম ডিপো...কী নেই! কয়েক লক্ষ মানুষের রোজনামচা জীবন কাটছে এই ধর্মতলাকে কেন্দ্র করে।