Rabindranath Tagore And Visva Bharati: বাংলাজুড়ে এশিয়ার প্রথম নোবেলজয়ী কবি, ঔপন্যাসিক, সাহিত্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২তম জন্মবার্ষিকী সাড়ম্বরে পালিত হচ্ছে। ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ (ইংরেজির ৭ মে, ১৮৬১ সাল) কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
বাঙালি জাতীর খুঁটিনাটি অনুভূতি, আকাঙ্ক্ষা, আবেগ-অভিব্যক্তির নিখুঁত প্রকাশ ঘটেছে তাঁর রচনায়। তিনি একাধারে ছিলেন কবি, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, চিত্রশিল্পী, নাট্যকার, অভিনেতা, সংগীত রচয়িতা-সুরকার ও দার্শনিক। বাঙালি মাত্রেই রবীন্দ্রনাথের বিষয়ে এই সমস্ত কথাই জানেন। কারণ, তিনি এই জাতীর আত্মা-সম।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তি
তিনি গীতাঞ্জলির ইংরেজি অনুবাদের জন্য পুরস্কারটি পান। গীতাঞ্জলির ইংরেজি ও সুইডিস অনুবাদ পাঠ করে রবীন্দ্রনাথের লেখনির প্রতি ভীষণ মুগ্ধ হন সুইডেনের সমকালীন খ্যাতিমান কবি কার্ল গুস্তাফ ভন হেইডেনস্টাম এবং রবীন্দ্রনাথ ও গীতাঞ্জলি বিষয়ে তিনি বিস্তর লেখালেখির মাধ্যমে কমিটির বাকি সদস্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। ১৯১৩ সালের ১৩ নভেম্বর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম ঘোষিত হয়।
আরও পড়ুন: রবীন্দ্রনাথের বংশের পদবী ঠাকুর ছিল না, কী ছিল?
শান্তিনিকেতনের জন্ম
১৮৬৩ সালের কথা। বীরভূম জেলায় বোলপুরের অদূরে শান্তিনিকেতন শহরটা গড়ে তুলেছিলেন রবীন্দ্রনাথের বাবা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি রায়পুরের জমিদার ভুবনমোহন সিংহের কাছ থেকে সে সময় ২০ বিঘা জমি নিয়ে শান্তিনিকেতন গড়ে তুলেছিলেন। শিশু বয়স থেকেই বাবার সঙ্গে এখানে মাঝেমধ্যেই আসতেন রবীন্দ্রনাথ। পরে ২২ ডিসেম্বর (৭ পৌষ), ১৯০১-এ শান্তিনিকেতনে একটি বিদ্যালয় চালু করেন রবীন্দ্রনাথ, নাম দেন ব্রহ্মচর্যাশ্রম।
ব্রিটিশরা ভারতে যে শিক্ষা-ব্যবস্থা চালু করেছিল, তাতে বরাবরই আপত্তি ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। প্রচলিত শিক্ষাপদ্ধতির বিরুদ্ধে গিয়ে তিনি প্রকৃতির সঙ্গে পড়ুয়াদের সংযোগ তৈরি করে শিক্ষাব্যবস্থা আসলে কেমনটা হওয়া উচিৎ তা দেখিয়ে দিয়েছিলেন। ওই যুগে পরিবেশ-প্রকৃতির সঙ্গে শিক্ষার সংযোগ নিয়ে এমন চিন্তাধারা ছিল বিরল।
রবীন্দ্রনাথের স্বপ্নের বিশ্বভারতী
শান্তিনিকেতনের পরিধি ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে। আশেপাশের জমিদারদের থেকে জায়গা কিনে আরও বড় পরিসরে কিছু করার পরিকল্পনা করেন রবীন্দ্রনাথ। নোবেল পুরষ্কার থেকে পাওয়া অর্থ এই কাজে লাগিয়ে দেন তিনি। নোবেলের পুরস্কার মূল্য বাবদ তিনি ৮,০০০ পাউন্ড পেয়েছিলেন। সে সময় ভারতীয় মূল্যে যা ছিল ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার সমান। ওই টাকা রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে তাঁর স্বপ্নের আশ্রম গড়ার কাজে ব্যয় করেন। রবীন্দ্রনাথ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দেন বিশ্বভারতী।
তথ্য সূত্র: সুব্রত কুমার দাসের লেখা 'রবীন্দ্রনাথ: কম-জানা, অজানা' গ্রন্থ।