কথায় বলে কারও পৌষ মাস কারও সর্বনাশ। আর সেই পৌষ মাস কিন্তু পড়ে গিয়েছে। পৌষ মাস মানেই বাঙালির কাছে যদি হয় পিঠে-পুলি পায়েস, তাহলে পৌষ মানে অবশ্যই নানাবিধ উৎসব পার্বণ মেলা। মূলত সংক্রান্তিকে কেন্দ্র করে এই সমস্ত কিছুর আয়োজন করা হলেও, সারা মাস ধরেই মোটামুটি তার রেশ থাকে।
পিঠে - বাংলা ও বাঙালির ঘরে ঘরে পৌষ মাসের সবচেয়ে বড় আকর্ষণই হল পিঠে (Pitha)। পৌষ সংক্রান্তির দিন প্রায় প্রতিটি ঘরেই তৈরি হল নানাবিধ পিঠে ও পায়েস। থাকে ভাজা পিঠে, সেদ্ধ পিঠে, ছাঁচ পিঠে, পুলি পিঠে, পাটিসাপটা সহ আরও কত কী। নলেন গুড় সহযোগে সেই পিঠে পৌষ সংক্রান্তিকে একেবারে মিষ্টিমধুর করে তোলে।
টুসু উৎসব - পৌষ মানেই উৎসব মেলা পার্বণ। আর তার অন্যতম টুসু উৎসব (Tusu Festival)। পশ্চিমবঙ্গের মূলত বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরে টুসুদেবীর আরাধনা করা হয়। অগ্রহায়ণ মাসের শেষ দিনে শুরু হয় এই উৎসব, চলে পৌষ সংক্রান্তি পর্যন্ত। বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার কোথাও কোথাও আবার টুসুর মূর্তিরও প্রচলন আছে। এই উৎসবের প্রধান আকর্ষণ হল টুসু গান।
পৌষ মেলা - এই মাসে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে প্রচুর মেলার আয়োজন করা হয়, যার অন্যতম প্রধান বোলপুরের পৌষ মেলা (Poush Mela)। এই মেলাকে কেন্দ্র করে যেমন একদিকে পসরা সাজিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা, তেমনই জমে ওঠে বাউল-ফকিরদের আখড়া। এই বছর বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ এবং বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে ডাক বাংলো মাঠে ২৩ থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেলা বসতে চলেছে বলে জানা যাচ্ছে।
জয়দেব মেলা - পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে বীরভূমের আরও এক বিখ্যাত মেলা জয়দেব-কেন্দুলি (Joydev Kenduli) মেলা। অজয় নদের তীরে এই মেলায় ভিড় জমান হাজার হাজার বাউল ফকির। রাতভর চলে গানবাজনা। করোনা পরিস্থিতিতে গতবছর এই মেলা কার্যত বসেইনি। তবে সূত্রের খবর এই বছর ফের বসতে পারে মেলা।
গঙ্গাসাগর মেলা - পৌষ সংক্রান্তির পুণ্যলগ্নে গঙ্গাসাগরে (Gangasagar Mela 2022) ভিড় জমান লাখো লাখো পুণ্যার্থী। শুধু এরাজ্যই নয়, ভিনরাজ্যে থেকেও আসেন মানুষ। থাকেন সাধু-সন্ত নাগা সন্যাসীরাও। স্নান সেরে কপিলমুনির আশ্রমে পুজো হয় পুণ্যলাভ।