World Urdu Day: জানেন কি শর্ত, সাবধানের মতো বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত অনেক শব্দই আসলে বিদেশি ভাষা থেকে আমদানি করা হয়েছে? এই প্রথম বাক্যর শেষের ‘আমদানি’ শব্দটিও খাঁটি বিদেশি! এই শব্দগুলির ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায় উর্দু ভাষায়। বাংলার মতোই মিষ্টি এবং সমৃদ্ধ একটি ভাষা এই উর্দু। বাংলা ভাষার মতোই উর্দু ভাষাও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিবর্তিত হয়েছে। বর্তমানে পাকিস্তানে উর্দুর চল সবচেয়ে বেশি হলেও এই ভাষার জন্ম কিন্তু এই ভারতেই। অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন যে, উর্দুকে ধর্মীয় রং দেওয়ার চক্রান্ত করে ব্রিটিশরা দেশভাগের সময়। পরে উর্দু পাকিস্তানের জাতীয় ভাষা হয়ে ওঠে। আজ বিশ্ব উর্দু দিবস (World Urdu Da)। চলুন এই উপলক্ষে জেনে নেওয়া যাক এই ভাষার সম্পর্কে দু’-চার কথা...
উর্দু ভাষার জন্ম কবে?
উর্দু কাউন্সিলের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ভাষার উৎপত্তি দ্বাদশ শতাব্দীতে। উত্তর-পশ্চিমের আঞ্চলিক উত্থান-পতনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য এই ভাষার উদ্ভব হয়। এই ভাষার প্রথম জনপ্রিয় কবি ছিলেন পারস্যের কবি আমির খুসরো। তিনি কথন, ধাঁধা এবং বাণী আবৃত্তি করতেন।
মধ্যযুগীয় যুগে উর্দু ভাষা অনেক নামে পরিচিত ছিল। যেমন, হিন্দবী, জবান-ই-হিন্দ, রেখতা, গুজারি, ডেক্কানি এবং জবান-ই-দিল্লি। ইতিহাসবিদরা এমন অনেক প্রমাণ পেয়েছেন যা নিশ্চিত করে যে, একাদশ শতাব্দীতে এই ভাষার নাম ছিল হিন্দুস্তানি যা পরবর্তীতে উর্দু নামে পরিচিত হয়।
উর্দু শব্দটি কোথা থেকে এসেছে?
উর্দু কাউন্সিলের মতে, উর্দু একটি তুর্কি শব্দ। এই শব্দের অর্থ হল সেনানিবাস বা রাজকীয় ছাউনি। অনেক বিশিষ্ট উর্দু লেখক ১৯ শতকের শুরু পর্যন্ত এই ভাষাকে হিন্দভি বলে অবিহিত করেছেন।
উর্দু সাহিত্য
অনেক ইতিহসবিদ ও উর্দু কাউন্সিলের মতে, পঞ্চদশ এবং ষোড়শ শতকে দিল্লি থেকে অনেক দূরে দাক্ষিণাত্যে উর্দু সাহিত্যের উদ্ভব হয়েছিল। এর আগে মুঘল শাসকদের আমলে উত্তর ভারতে ফারসি ভাষার আধিপত্য ছিল। কিন্তু দক্ষিণ ভারতের গোলকুন্ডা (বর্তমান হায়দ্রাবাদ) ও বিজাপুরে উর্দু ভাষার ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। এখানে সুফি ও লোক-কবিরা এই ভাষার পরিধি বিস্তৃত করেছিলেন। এই কারণেই একটা সময় এই ভাষার নামকরণ করা হয় ডেক্কানি। কবিতা দিয়ে উর্দু ভাষার যে যাত্রা শুরু হয়েছিল ধীরে ধীরে গদ্য সাহিত্যেও তার প্রয়োগ শুরু হয়। এ ক্ষেত্রে গালিব, ফিরাক, গোরখপুরীর মতো অনেক বিশিষ্ট্য কবির অবদান অনস্বীকার্য।