প্রতীক্ষার অবসান। লোকসভায় পাশ হল ন্যাশনাল স্পোর্টস বিল ও ন্যাশনাল অ্যান্টি ডোপিং (সংশোধিত) বিল ২০২৫। ভারতীয় ক্রীড়াক্ষেত্রে বড়সড় বদল আনতে এই বিল পাশ করানো হয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। ন্যাশনাল স্পোর্টস বিলের আওতায় চলে এসেছে ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থাও BCCIও। ক্রীড়ামন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য সোমবার দুটি বিলই পেশ করেন।
ন্যাশনাল স্পোর্টস বিলের প্রধান লক্ষ্য হল দেশের ক্রীড়া ব্যবস্থার উপর নিয়ন্ত্রণ। এবার ন্যাশনাল স্পোর্টস বোর্ড তৈরি হবে। যার কাজ হবে BCCI-সহ সব ক্রীড়া ফেডারেশনের উপর নজর রাখা।
২০২৮ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসে আয়োজিত অলিম্পিকের অংশ হতে চলেছে ক্রিকেট। ফলে বিসিসিআইকে জাতীয় ক্রীড়া সংস্থা হিসেবে নিজেদের নাম রেডিস্ট্রেশন করাতে হবে। এই বিলের আওতায় ন্যাশনাল স্পোর্টস ট্রাইবুনালও গঠিত হবে। যাদের অধিকার থাকবে সিভিল কোর্টের মতোই স্বাধীন। এই ট্রাইবুনালের লক্ষ্য হবে নির্বাচন সম্পর্কে বিরোধের মিমাংসা করা। সেই ট্রাইবুনালের কোনও নির্দেশ কেউ মানতে না চাইলে তিনি কেবল মাত্র সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার অধিকার পাবেন। অন্য কোথাও নয়।
স্বপদে বহাল থাকবেন রজার বিনি
এই বিলের ফলে অনেকটাই স্বস্তিতে BCCI। কারণ, এই ন্যশনাল স্পোর্টস বিলে প্রশাসকদের বয়সসীমা শিথিল করা হয়েছে। নয়া নিয়ম অনুসারে, ৭০ থেকে ৭৫ বছর বয়সী ব্যক্তিরা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। এর অর্থ হল বর্তমান বিসিসিআই সভাপতি রজার বিনি ভবিষ্যতেও তাঁর পদে বহাল থাকতে পারবেন। এই বছরের ১৯ জুলাই রজার বিনি ৭০ বছর পূর্ণ করেন।
ন্যাশনাল স্পোর্টস বিলের প্রাথমিক খসড়ায় BCCI-কে তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় আনার বিধান ছিল। কিন্তু BCCI কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিলের উপর নির্ভরশীল নয়। সেজন্য সেই ধারাটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে অন্য সমস্ত নিয়ম আর পাঁচটা সংস্থার মতো BCCI-র উপরও প্রযোজ্য হবে।
অ্যান্টি-ডোপিং বিলের বিধানগুলি কী কী?
অন্যদিকে, ওয়াডা বা ওয়ার্ল্ড অ্যান্টি-ডোপিং এজেন্সির আপত্তি দূর করার জন্য জাতীয় অ্যান্টি-ডোপিং সংশোধনী বিলটি সংশোধিত আকারে লোকসভায় পেশ করা হয়। ২০২২ সালে জাতীয় ডোপিং-বিরোধী বিল পাশ হয়েছিল, কিন্তু WADA-এর আপত্তির কারণে তখন তা বাস্তবায়িত করা যায়নি। এর অধীনে একটি জাতীয় ডোপিং-বিরোধী বোর্ড গঠন করায় WADA খুশি ছিল না। বোর্ডের একজন চেয়ারপার্সেন এবং দুইজন সদস্য থাকবেন, যাঁরা কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হবেন। এই বোর্ডের NADA-কে পর্যবেক্ষণ এবং নির্দেশনা দেওয়ার অধিকার থাকবে। WADA এই বিধানটিকে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে সরকারি হস্তক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করেছে। সংশোধিত বিলে এই বোর্ডকে বহাল রাখা হয়েছে, তবে এখন NADA-কে পর্যবেক্ষণ বা পরামর্শ দেওয়ার অধিকার থাকবে না। সংশোধিত বিলে স্পষ্ট করা হয়েছে যে NADA-র সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করার অধিকার থাকবে।