
লিওনেল মেসির ভারত সফরে ঘটনার ঘনঘটা। কলকাতার বিশৃঙ্খলা থেকে মুম্বইয়ে সচিন সাক্ষাত্, হায়দরাবাদে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে আড্ডা। কিন্তু এই সব কিছুকে যেন ছাপিয়ে গেল অনন্ত আম্বানির প্রাইভেট চিড়িয়াখানা বনতারায় কাটানো একদিন। লিওনেল মেসি, লুই সুয়ারেজ ও রডরিগো ডি পলকে জামনগরে দেখা গেল একেবারে ভারতীয় সংস্কৃতির মেজাজে।

জামনগরে অনন্ত আম্বানির চিড়িয়াখানা বনতারায় রাত কাটালেন মেসি। আম্বানিদের আতিথেয়তায় মুগ্ধ বিশ্বফুটবলের আইকন। মেসিকেও দেখা গেল বেশি গদগদ। হিন্দু সনাতন ধর্ম রীতি মেনেই মেসি, সুয়ারেজদের বনতারায় স্বাগত জানালেন আম্বানি পরিবার।

গণেশ থেকে শুরু করে শিব, মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করলেন মেসি। কপালে তিলক, গায়ে শাল ও গলায় রুদ্রাক্ষের মালায় দেখা গেল মেসিকে। বনতারায় খুব কাছ থেকে হাতি, সিংহ, জিরাফ নানা জন্তু-জানোয়ার ও প্রকৃতির কোলে আপ্লুত দেখা গেল মেসিকে।

বনতারায় মেসি, সুয়ারেজদের ফুল, মালা ও তিলকে স্বাগত জানানো হয়। একেবারে ভারতীয় হিন্দু সংস্কৃতিতে। আরতি করা হল। গণেশ পুজো, হনুমান পুজো, শিবের রুদ্রাভিষেকে মহাআরতিতে অংশ নিলেন মেসিরা।

বনতারার বিপুল কনজার্ভেশন ইকোসিস্টেম দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছেন আর্জেন্তিনার তারকা। কখনও তাঁকে দেখা গেল, সিংহের সঙ্গে মজা করছেন, কখনও হাতির শুঁড়ে হাত বোলাচ্ছেন, রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার দেখছেন। পরিবেশ রক্ষায় অনন্ত আম্বানির নানা উদ্যোগ মন দিয়ে শুনলেন।

বাঘ, সিংহের ডেরায় যেমন মেসিকে দেখা গেল, সিংহ, চিতাবাঘ ও রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের সঙ্গে কথা বলছেন। আবার গণ্ডার, জিরাফ, হাতি দেখে মজা করছেন। কীভাবে সব বন্য জন্তুদের বনতারায় দেখভাল করা হয়, তা দেখে রীতিমতো আপ্লুত তিনি।

ভারতের বন্যপ্রাণ রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নানা উদ্যোগের প্রশংসাও শোনা গেল মেসির মুখে। কীভাবে হারিয়ে যাওয়া বন্য জন্তুদের উদ্ধার করে বনতারায় দেখভাল করা হয়, পুরো বিষয়টি শুনলেন তিনি।

অনন্ত আম্বানি ও তাঁর স্ত্রী রাধিকা আম্বানি তো লায়ন ক্লাব বা যেখানে সিংহদের বসবাস, তার নাম রাখলেন, 'লিওনেল'। মেসির সম্মানে এই নাম রাখলেন তাঁরা।

হাতির ডেরায় মেসির সঙ্গে অনন্ত আম্বানি দেখা করালেন মানিকলালের। মানিকলাল হল এক হাতি, যে হাতির পাল থেকে আলাদা হয়ে হারিয়ে গিয়েছিল। তাকে উদ্ধার করে আনা হয়েছে বনতারায়।

মেসির কথায়, 'বনতারা যা করেছে, তা সত্যিই অসাধারণ। যেভাবে এখানে বন্য জন্তুদের দেখাভাল করা হয়, উদ্ধার করা হয়, তা আক্ষরিক অর্থেই মন ভাল করা। আমরা একটা দুর্দান্ত সময় কাটালাম, খুব হালকা লাগছে, মনটাও ভাল লাগছে। আমরা আবার আসব।' 'নারকেল উত্সর্গ', 'মটকা ফোড়'-এর মতো সাংস্কৃতিক রীতিতেও অংশ নিলেন মেসি। বিশ্বশান্তির কামনা করলেন। বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণ শুনলেন।