চেন্নাইন এফসির কাছে ঘরের মাঠে ৩ গোলে হার। ইস্টবেঙ্গলের সুপার সিক্সের স্বপ্ন কার্যত শেষ। তবে কেন হল এই রকম? গোটা বিষয়টায় অভিযোগের তির উঠছে বিদেশিদের দিকে। পরিসংখ্যান বলছে, যে ক'টা ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল ভাল পারফরমেন্স করেছে, তা ভারতীয় ফুটবলারদের জন্যই। কিন্তু বিদেশিরা আইএসএলে পার্থক্য তৈরি করেন। শুধু ভারতীয় ফুটবলারদের ভরসায় এক-আধটা ম্যাচ উতরে যাওয়া গেলেও, ধারাবাহিকভাবে জেতা সম্ভব না।
ইস্টবেঙ্গলের সমস্যা সেখানেই। আর এই পরিস্থিতিতেই দাবি উঠছে, দলের বিদেশি বদলের। হেক্টর ইয়ুস্তে, ক্লেইটন সিলভাদের সঙ্গে এই মরসুমের পরই ইস্টবেঙ্গলের চুক্তি শেষ। সেই চুক্তি বাড়ার সম্ভাবনা নেই। সমস্যা অন্য দু'জনকে নিয়ে। সল ক্রেসপো এবং দিমিত্রিয়স ডিয়ামানতাকোস। সল পরপর দু'বছর চোটের জন্য দীর্ঘ সময় বাইরে থাকলেন। চোট কাটিয়ে ফেরার পর আর পারফর্ম করতে পারছেন না। কিন্তু ২০২৬ অবধি তাঁর সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের চুক্তি। শনিবার ভিআইপি গ্যালারি থেকে 'সল গো ব্যাক' স্লোগান উঠে গেছে। চুক্তিভঙ্গের দাবি তীব্র। চুক্তিভঙ্গের দাবি উঠেছে দিমিত্রিয়স ডিয়ামানটাকোসকে নিয়েও। তাঁর সঙ্গেও ২০২৬ পর্যন্ত চুক্তি।
গত বছরের সর্বোচ্চ গোলদাতা এবার একেবারেই নিষ্প্রভ। বেশিরভাগ সময় তাঁকে দেখে মনে হয়েছে, চোট লুকিয়ে খেলছেন। পরিসংখ্যানের কথা বললে তিনি লজ্জায় মুখ লুকোবেন। ১৫ ম্যাচে ১১৫৯ মিনিট মাঠে থেকে ইস্টবেঙ্গলের মূল স্ট্রাইকারের গোল তিনটি, অ্যাসিস্ট একটি। এই ১৫টা ম্যাচ মিলিয়ে এই 'দামি' স্ট্রাইকার শট মেরেছেন মাত্র ১৬টি। অর্থাৎ ম্যাচ পিছু মাত্র ১টি করে। তারমধ্যে তিন কাঠিতে শট মাত্র ৯টি। তাঁকে তাড়ানোর দাবি উঠবে এ আর আশ্চর্যের কি।
শনিবার খেলা দেখতে দেখতেই মনে হচ্ছিল, সল ক্রেসপোকে আনফিট অবস্থায় প্রথম একাদশে রাখা অস্কার ব্রুজোর বড় ভুল। ম্যাচের পর তিনি তা স্বীকার করে নিয়েছেন। 'যাঁরা চোট কাটিয়ে ফিরেছেন, তাঁদের একটু বেশি আগে মাঠে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। সল, রাকিপদের দেখে মনে হয়েছে খেলার গতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না। বিশেষত চেন্নাইনের মতো দলের সঙ্গে। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আমরা তুলনামূলক ভাল ফুটবল খেলেছি।' সাংবাদিক সম্মেলনে মুখে না স্বীকার করে অস্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন সুপার সিক্সের আশা শেষ। তাই তাঁর মুখে আপাতত শুধুই এএফসি আর সুপার কাপ। তবে এই বিদেশিদের নিয়ে সেখানেও কতটা কী করা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই।